কবিতা

ঈশানকোণ একটি সাহিত্যের ওয়েবজিন এপ্রিল-মে-জুন ২০১৮ ইং

[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]

উমা মন্ডলের কবিতা

মাঘী প্রতিকৃতি


১.

মাঘের শেষ

কম্বলের রাত্রি নেমে আসে চাঁদের গা' বেয়ে,

চরাচর শীতঘুমে ঢেকে গেছে।

এখন রানার চিঠির বোঝা নিয়ে ছোটে না

ইমেল আইডি অথবা এস এম এসে

ফুটে ওঠে প্রতিকৃতি।

কিন্তু আঙুলে ভেসে ওঠা শব্দের আকৃতি

চামড়ার গন্ধ,

শিরায় লুকিয়ে থাকা অন্ধঘরের দরজা....

তার চাবিকাঠি এখনও আমার পার্সের

ভিতরের বন্ধনীতে লুকিয়ে আছে।


২.

কৈশোরের পট এখনও মেঘ থেকে

মাঝে মাঝে মুখ বার করে, বড়ো অভিমানী আত্মা তার

ছুঁতে গেলেই নদী হয়ে যায়

তারপর স্রোত, ডিঙি নৌকা.....

ওল্টানো পাতা আর ডিঙিয়ে যাওয়া অধ্যায়

বড়ো কঠিন দুটি পরিচ্ছেদ,

প্রতিকূলে বৈঠা টানা

রক্তাক্ত করে হৃৎপিন্ডের জানলাগুলিকে,

ঝড়ের দাপটে দাসত্ব আর মুক্তি.....

ছিঁড়ে যাওয়া কাচে অস্তিত্ব বেঁকে বেঁকে যায়

তারপর সর্পিল পা সহগোত্রীয় ভেবে সঙ্গ দেয়,

বড়ো বিষ জিভে

স্বাদ নিতে গিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে,

এই অতীত কুণ্ডে এখন কালীয় নাগের জলসা

কোথাও নুড়ি খুঁজে পাইনি,

শুনেছিলাম নারায়ণের বাস কালোপাথরে

আমি মাতৃজাতীয় ছোঁয়া বারণ

পুরোহিতের লাল চোখ দেখেছিলাম,

তবুও সলিলসমাধি পথে তৃণও ঈশ্বর হয়ে ওঠে।


৩.

মাঘী শুক্লাপঞ্চমীর গার্হস্থ্য আলপনায়

দেবী প্রতিবিম্ব রেখে যান,

চক্ষুদানে জ্বলে ওঠে জ্ঞানবৃক্ষের

শুকিয়ে যাওয়া পথ,

ঝরাপাতার স্তূপ উড়ে যায় হোমাগ্নির ডাক শুনে

তার বিসর্জনের বাজনা বেজে গেছে।

বালির ওপর বেল কাঠের খণ্ড খণ্ড শরীর

প্রণম্য অগ্নি আহুতি চা,

যজ্ঞডুমুরের জায়গায় কতগুলি কালরাত্রি

রেখে এসেছি, যদি মোক্ষপ্রাপ্তি ঘটে

পাণ্ডুলিপি তৈরি করবো।

হে সারস্বত তাপ দেহের উপর বয়ে যাও

একটি জলরেখা সৃষ্টি হোক

ডুবে যাক ক্ষয়িষ্ণু প্রতিলিপি গণ,

শুধু এই জীবন্ত পৃথিবীতে নিঃশ্বাস

নিক আগামীর সূর্য....


HOME

এই লেখাটা শেয়ার করুন