কবিতা

ঈশানকোণ একটি সাহিত্যের ওয়েবজিন বইমেলা সংখ্যা ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ইং 

[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]

নকুল রায়ের দু'টি কবিতা  

আলোর অসামান্যতার নিচে শায়িত লক্ষকীট


আমাদের মাসপয়লার বেতনসূর্য, তুমি দুর্দান্ত কোটি কোটি ভাগে বিভক্ত কেরানি-

কৃষ্ণের টারবাইন, ঘুরে যাও চক্রবৎ, নক্ষত্রের সগোত্রহীন আজ তুমি সহজ মানুষের

হাতের কাছে – দিগন্তের বৃহদায়তন সূর্যের শাসনযন্ত্রটি ভিখিরির হৃৎপিণ্ডেরও 

সমতুল্য নয়, তুমি মিথ্যা তোমার পাত্রমিত্র নক্ষত্রশাসিত দিকমণ্ডল তোমাকে

আজ নিরুপায় স্তাবকবন্দনা করে, ঘাসের অগ্রভাগেই জেগে থাকে চটির আঘাত,

মৃত্যুর সুসংবাদ অনুবাদ ক’রে শোনায় জীবনের কু-চক্রী শিক্ষায়তন,


আমাদের সারল্যের চাবিগোছা তুলে নিয়ে গেছে অকালপক্ক জিরাফ, পশুরও

লোভ খাদ্য ও সঙ্গমের কাছাকাছি আত্মীয়সভা খুলে বসেছে, সিন্দুকের

টাকা লম্পটের ছদ্মবেশে ঘোরে-ফেরে – সুষমাযুক্তা এক রমণী তৈলাক্ত মাথায়

স্যূচ ঘ’ষে সেলাই করে যাচ্ছেন তাঁর বিদায়ী-পুত্রের স্বাগতম শয্যা, মানুষের

রক্তের ধারাপ্রবাহ থেকে দূরে বেশি কি কিছু আভিজাত্যের প্রদীপ জ্বালাতে

পারে ? সর্ষ কি নিজে থেকেই ভূত-খেদানোর অবয়ব ? মানুষের অজ্ঞতা ও

জনব্যবসার মাঝামাঝি ভূতেদের অবাধ সাম্রাজ্য – বুদ্ধির প্রখর তাপদাহে

জ্বলে মুর্খের আপাদমস্তক আশা, অত্যাশ্চর্য হতাশার আগুন এতো কোমল

এতো কুসুমলজ্জা – শ্রমের মানদণ্ডে শুধু হৃদয় নিস্তেজ হয়ে পড়ে 

টাকার খোঁচায় বেড়ে উঠছে গর্ভবতী ব্যাঙ্ক, কর্পোরেশনের জলদণ্ড বেয়ে অবিরাম

পড়ছে তরলকথাকান্নাকাটি – প্রমিলালাইনে এইমাত্র প্রথম শাড়িপরা কিশোরী

ভাঙলো মধ্যবিত্ত কলসীখানি, গোমড়ামুখো চপলার চেয়েও নিষ্ঠুর চলতি মাসের

বেতনের ব্যথা, বাড়িভাঙা ও সুদের টাকা বিলিয়ে কয়েকজন 

কেরানি আজ ভারতবর্ষের গালভাঙা মানচিত্র শিল্পনগরীর বড়াই গিলে খাচ্ছে


আমাদের মাথার ব্রহ্মতালু ভেদ করে উঠে যাচ্ছে জ্ঞানপাপীদের কল্পতরু,

স্মরণ করি ভাগ্য তোমাকে ছবি ও দর্শনে বাস্তবের কাঁটাতার ঘেরা

সাহেবের সৌখিন কৃষিব্যবস্থা, স্মরণ করি ভাঁড়ারে ইঁদুর তোমার

ইচ্ছায় অনিচ্ছায় দাঁতক্ষুধা, আমাদের ফুটোচালার নিচে হাস্যকর

সুর্যের রশ্মি তোমাকে হাত জোড়, আমাদের ঋণ থেকে ঘুম তুলে নাও 



তৈলাক্ত খুঁটি বেয়ে ওঠানামা বানরের অঙ্ক


বুদ্ধি মিলিয়ে নয়, স্যূচ বিনিময়ে হৃদয়ের আক্যুপাংচার চাই,

চাই মানুষের চোখের ভেতরে স্রোত সুচারুচিকনচিকিৎসা, বানরের সম্বৃদ্ধি

আর সরল সুদকষা এ নিয়ে পাকস্থলী ভরে না এখন, প্রাগৈতিহাসিক

রক্তের বিনিময়ে চাই সর্বাধুনিক ব্লাডব্যাঙ্ক, কলমি শাকের চেয়েও

নম্রনেতানো কিশোর আজ পেয়েছে লৌহ পাথরের সংঘর্ষণ, প্রীতিযুদ্ধে

কেউ এখন সহমরণের ব্যথা অনুভব করে না, ভিখিরির সদিচ্ছাকেও

দিয়েছি অবশিষ্ট ব্যথা, সমুদ্রঢেউ প্রথমে হৃদয়-বিছিন্নতার পরই

দেখা দেয়, মানুষ শুধু অঙ্কের হিশেবে আজ লাইফ ইনস্যুরেন্স খোঁজে


কে তুমি প্রতাপ অনুতপ্ত যাবজ্জীবন খণ্ডযুদ্ধের খোলা তরবারি, কে

আছো দেদীপ্যমান সময় সোহাগধন্য বানপ্রস্থগামী বোধের লালসা,

কে সেই উৎকট দুর্গন্ধহীন মুক্তিযোদ্ধাসাঁড়াশিহস্তধৃত সুপুরুষ, তবে এসো

ময়দান ভু-দান যাবতীয় যজ্ঞধর শিল্প সংস্কৃতির উদগ্র কামনা

তুমি আমাকে পোড়াও, আমাদের ফাঁকামাথা দেয়ালে ঝুলিয়ে

বলো আমাদের ড্রামসভ্যতার সমস্ত পীচ সব গলে বেরিয়ে যাচ্ছে কেনো

সব ঠিক আছে সব ঠিক আছে শুধু ঠিক নেই আমাদের বিবেচনা,

অচেনা ইঁদুর কেটে যায় রীতার ড্রেসিং টেবিল, পরিশ্রমের আগেই

গণবিল দাখিল করার বাসনা, এসো না লক্ষ্মীটি তুমি কোথায়

হে বীরেন্দ্র সজীব খোলামেলা সর্বজনীন অসি ও কলম, অঙ্কের

হিশেব ছেড়ে এসে বসো না খুনটেবিলের বৈঠকে


HOME

SHARE THIS PAGE!