ব্রহ্মপুত্রের বুকে
তখনও পূব আকাশে ভাঙেনি সূর্যের ঘুম
ব্রহ্মপুত্রের বুকে ভেসেছে নাও
শাকসব্জির পসরা
সাঁতরে ছোঁয় গুয়াহাটি বাজার।
ভোরের আধফোটা আলোয়
আগে পৌঁছানোর তীব্র প্রতিযোগিতা
সারাদিন বিকিকিনি
তারপর ফিরে আসা
গোধূলির নীড় খোঁজা বলাকার সাথে।
রহ্মপুত্রের বুকে ক্লান্ত সূর্যের তখন ঘুম ঘুম ভাব
আকাশের শেষ রক্তিম আভাটুকু মিশে যায় পাহাড়ের গায়
টলটলে নীল জলে খেলে যায় যেন
আবিরের হোলি
অন্ধকারের প্রথম রাতে
বাঁধা পড়ে নাও
আবার ভাসবে পরদিন
আধফোটা ভোরের আলোয়।
বুমেরাং
নিয়মের সূত্রে বাঁধা আপন খেয়াল
কোনো গিরি পর্বত হতে শুরু পথ
শেষ সাগরের বুকে।
স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায়
উঁচু বাঁধ রেল ব্রিজ
পড়ন্ত বেলায় স্পষ্ট জলছবি
বেশ খানিকটা চওড়া ধারার জল
গড়ায় ঝিরঝির করে।
দেখে মনে হয় নিদারুণ দরিদ্রতায় পিষ্ট এক কিশোরী
শুষ্ক শীর্ণ শরীরটা ঢেকেছে সিল্কের শাড়িতে
ক্লান্ত বালি পাথরের হাড় পাঁজর
খসখসে চামড়া, অপুষ্টির অভিশাপ
ফাটা ফাটা হাত পায়ের ওপর জড়ানো
চন্দন রঙের আবরণ।
ভারী বর্ষণে আচমকা পুষ্ট শরীর
অপুষ্টির ক্লান্ত শরীরে তখন চিতার ক্ষিপ্রতা
দু'কুল ছাপিয়ে হড়পা বান
যেন অপুষ্টির শরীরে আসে বমি।
খানিকটা থিতু হতেই নির্জন নদীখাতে তৈরি যেন বাস্তুভূমি
গুটি গুটি পায়ে দখল হয় নদীগর্ভ।
অনেক দূর তো হল দেখা
প্রকৃতির নিয়মের বিরোধিতা করে
আর কত দূর পণ রাখা যাবে এ খেলায়
নিজেদের ভবিষ্যৎ কিংবা আগামী প্রজন্মের কাছে?
হয়তো সবকিছু ধুয়েমুছে যাবে খড়কুটোর মতো
আবারও একদিন
রাতঘুমে হড়পা বান...।
এই লেখাটা শেয়ার করুন