আলুওয়ালাার লাভ লোকসান
এক
মনে আনন্দ খুব। চোখে উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। শরীর বেয়ে লকলক করে উঠছে লতাগুল্ম। ইন্দ্রিয় জুড়ে খেলা করছে ছত্রিশ ভাবনা। গুরুনাম জপ করে নিজের বিশ্বাসে খুঁজে পেতে চায় চিরসুখের গর্ভগৃহ। পরম মহাসুখের ইন্দ্রজালে সিদ্ধিদাতা বরাভয় মুদ্রা প্রদান করে একা দণ্ডায়মান। সব বিক্রিবাটা হয়ে গেলে তৃপ্তি ছুঁয়ে যায় আকাশ। আকাশকেও মনে হয় বড় কাছের। সুখ-দুঃখের দড়ি টানাটানির পর একা দাঁড়িয়ে মৃত্যু চেতনা। শূন্যতার দিকে তাকিয়ে থাকে সে। অসীমের মতো নীলে ছেয়ে থাকা গভীর শূন্যতা। লক্ষ্য রাখে একা। বিনায়ক সাথে থাকে। হাতেকলমে শিখিয়ে দেয় লাভ লোকসানের অংক।
দুই
চুবিয়ে সাঁতার কাটা গহন গভীরে তাই। জলসেচ দুনি ভরে বৃষ্টি নেই একফোঁটা। অপ্রতিভ বসে থাকা আর অচানক এসে যাওয়া। আকাঙ্ক্ষিত খরিদ্দার। তাকে সেধে আশার স্বাদ পেতে হবে না। নিয়তিকে ডাক ! বাহির আমায় ডাক দিয়েছে। নির্দেশ দিয়েছে তুলোধুনা করবার। গোপনে খেলা ভেঙে যায়। অকুণ্ঠ সময় গেঁড়ে বসে আলুওয়ালা আর ক্রেতার মাঝখানে। বিয়োগের মুহূর্তে নেমে আসে কামনার আবহ। ক্যানভাসে ফুটে ওঠে অনাকাঙ্ক্ষিত ছবি। সেই ছবির অর্থ বোঝবার সাধ্য থাকে না কারো ……।
জায়মান ভবিষ্যতের পাঁচালি
মিলে মিশে পাক হয়ে যাচ্ছে সব। তালগোল পাকানো
এক এক করে অনেক। এক থেকেই তো সহস্র।
তবু বলছ ভয় দেখানো? ক্ষয় মনের গভীরে বাসা করেছে
তৃষ্ণা অরোপিত বকচ্ছপ গুণগান … নির্বাচিত প্রতিনিধি
জায়মান দৃশ্যত মূক। কথা বলতেই জানে না। যদি বা বলে
মনে মনে ভাবে হারানো পৃথিবীতে আবার কি দেখা হবে ?
চণ্ডালের তাড়ি পান। অজস্র সূর্যের ছটায় বিলকুল ডুবে থাকা।
আর আমায় মারিস নে মা! প্রচ্ছন্ন সপে দেওয়া অনন্তের কাছে
কিছু থাকবে না। গাছে ফুল এবং মান-অপমান। তবু …
ভাসতে ভাসতে ঠিক একদিন চিতার কাঠ হতে চাওয়া কেন?
তন্তুতে তন্তুতে বুনন। কঠিন কাদম্বিনী ফুঁড়ে টানা বৃষ্টি
প্রতিচ্ছায়া ফিরিয়ে এসো আবার মার্জিত প্রচারে
জাদু
শিল্প যেমন জমজমাট তেমনই নাট্যশালা
বৈমাত্রেয় ভাই জারিত সংসার মুহ্যমান তাস
বুঝেছে সকাল সন্ধ্যা বাতাস ভাসছে গাছে।
এ সময় নির্বিকল্প। আসে ফাগুন মাঝে মাঝে।
তবুও নাচের জাদু পাথর মনের মধ্যে সুখ
এতো যে অসুখ তাও মোটামুটি ভাল আছি
দেখি না এভাবে কতদিন বাঁচি! ভীত নই
সাহসী প্রদীপে জ্বালি অন্ধকারে আলো দীপ্য
নিতল গভীর থেকে সিঁড়ি বেয়ে উঠে একদিন
তোমাদের অভিমান কেড়ে খাব রাক্ষসের মতো
নৈপুণ্য তোমার আছে, নিরাকার আমার দেবতা।
শিহরণ
আমি নিজেকে নিজের অজান্তে ক্ষতের মধ্যে প্রলেপ না দিয়ে
দিয়েছি বেদনা। লিখেছি তিন আঙুলে আমাকেই কঠিন করে,
বিক্ষিপ্ত আঁধারে শুনি অস্ত্রের আস্ফালন অপলক দেখি পরকলা!
নীরবে কারো স্পর্শে খুজে পাই ঠিকানাবিহীন এক স্বপ্নঘর কারুকাজ।
কে আমাকে নিয়ে যায় একাকী নির্জনতার গভীর শূন্যে দৃশ্যান্তরে?
অভাবী আলোর আলপথে আটকে গেছি আমি পাঁজরে দুঃখের রঙ,
বুঝি কি সব শব্দের মানে ? শুভেচ্ছার ভাষা বৃষ্টির অপরূপ মায়াজাল ?
আবার কি ফিরে আসবে সম্পর্কের মেলবন্ধন ? ডানা ঝাপটানো শব্দে !
ভালবাসার শরীর ঘিরে বর্ষার অলীক উন্মাদনার মেহফিল উৎসব
জ্বলছে নিভছে প্রেম ছলনার আগুন বইছে স্রোতের বিপরীত দিকে ।
অচেনা আলো-অন্ধকারে প্রত্যন্ত নির্জন কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলা
তুমি যেন ভাল থেকো শিহরণ লিখি অতৃপ্ত কবিতা পানশালার - - -।
মৃত্যুর লেখচিত্র
বারোটা বেজে গেলেও কাল রাতে ঘুমায়নি মা
ভোর হয়ে গেলেও দুটো চোখের পাতা এক করেনি
সন্তানের মরণ চিন্তা মায়ের শ্রমকে বিশ্রাম নিতে দেয়নি
ছেলে ভবঘুরে ঘুরতে ঘুরতে একদিন এসেছিল এখানে।
এখানে দুর্গন্ধ আবর্জনা। এখানে মধুময় জ্যোতিঃপথ।
চটুল নির্যাতন। প্রজাত শিশিরে সমাধি। বক্ষ্যমান
বিক্রম এখানে সাপের মত নতমস্তকে পালায়
রক্ষিত সম্ভোগ শিথিল হয়ে যায় কারণ ছাড়াই
তাহলে এতো আমাদের কিসের বড়াই ? মৃত্যুর!
কাঠ জানে শহীদের রক্তের দাম। রদ্দি আবেগ
লেখচিত্রে ভাসমান আমড়াগাছি ভুলে পালাবো কেন ?
চুরি বা বাটপারি আমি কিছুই করি নি। তবু
ঝরঝরের উৎসব হলে শেষ শুরু হবে কাল নির্মাণ ।
নকল
বন্দরের কাজ শেষ হলে এসো বাগানের কদম তলায়
সমস্ত হিসাব মিলিয়ে যা যা ত্রুটি ঠিক করে নেব
বিকালগুলির হারানো মহিমা আবার ফিরে আসবে
তুমি হাসবে আগের মতই আর গ্রীষ্মের ঘাম
মুছে দেবে আমার মুখ থেকে তোমার শাড়ির আঁচলে
আসলে পা থেকে মাথা পর্যন্ত সবটাই আমাদের নকল
প্রতারণার ধকল যে সহ্য করতে পারে সেই মানুষ
যারা পারে না তারা সুইসাইড স্কোয়ার্ড
চাষি-জেলে-মুটে-মজুর অনর্গল বকতে পারা যুবক
সকলেই আছে এর ভিতর শুধু তুমি নেই
তুমি নেই বলে আমি বেঁচে আছি হয়তো
আমি প্রান্তসীমায় দাড়িয়ে আজো দেখতে পাই
কারা যেন বলতে বলতে যায়, এটা কবির বাড়ি
আমি তাড়াতাড়ি খুলে ফেলি তোমার প্রোফাইল ……
ভোজবাজি
এখানে শুধু আবির মাখা যায় না। তাছাড়া আপনি সমস্ত কিছু করতে পারেন। ছলচাতুরি করার জন্য বিশেষ ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা ? হ্যাঁ, সেটাও বোধহয় আছে। দাঁড়ান আমি একবার বিষয়টা কনফার্ম করে আসি। ন্যাড়া বেলতলায় যায় ক'বার ? শুধু যাচ্ছি আর আসছি। এভাবে কতবার যে আমাকে ভিতরে যেতে হল আর আসতে হল, তা বলে বোঝাতে পারবো না। চলে গেলে এমন সুযোগ আর তো পাব না! কেশটা এখন নড়বড়ে।
যে কোনও সময় ফিনিশ হয়ে যেতে পারে। সেজন্য ব্যাল্যান্সের খ্যালা। বোঝ ঠ্যালা! ঘাড়ধাক্কা দিয়ে আবার চিঠি-চাপাটি? আমি কি খোলামকুচি? বিবেক নামক মস্তানরাজ কায়েম করবার জন্যই আমি দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে এসেছি। মানুষ জাগ্রত হলেই আমার আত্মা শান্তি পাবে। খ্যালায় পারদর্শী ওরা দুজনেই ভোজবাজি বিশেষজ্ঞ । হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে চাষির প্রভূত ক্ষতি হয়ে গেছে। আসুন তাদের জন্য দু’দণ্ড শোক পালন করি! আর সেটিংটা হওয়ার কারণে বলি, 'হরি, হরি!'
এই লেখাটা শেয়ার করুন