জ্বরবিভ্রম
১.
জন্মঅসুখ আবার ফিরে এলো শীতঘুম কাটিয়ে।
এবার প্রায় তিনমাস খোলসের ভিতর....
বিরহকালে জানালার ধারে বসে অনেক ফিস্ ফিস্ শব্দ খরচ হয়েছে
অবশেষে চাঁদ উঠলো গ্রহণের ব্যাধি কাটিয়ে, জ্যোৎস্নায় ঢেকে গ্যাছে পায়ের পাতা থেকে আসমুদ্র চরাচর।
আমি জীবনানন্দ তুলে নিলাম.....
এখন মুসলধারে বৃষ্টি নেমেছে
মাটি শান্ত।
আমার গলা খটখটে, জিভের লালাগ্রন্থিগুলো চিৎ হয়ে শুয়ে ডিপ্রেশানে আক্রান্ত।
ও চাঁদ, বড়ো সাধ জাগে
একবার মাইকেলের সাথে মুনওয়াকে পা মেলাতে,
তাপ বাড়ছে....
২.
এক ফোঁটা জল
কুইনাইন, কুইনাইন...
আমার বিছানায় কি ম্যালেরিয়া চেস খেলতে বসেছে !
এই বোড়ে দু-ঘর এগোলো, তারপর ঘোড়ার চাল
আতস কাঁচের বক্সটা টেবিলে রাখা আছে
দাও, দেখি...
বড়ো জোরে ধাক্কা মারছে পারদ থার্মোমিটারে,
মুখ থেকে উঠে আসছে অপাচ্য পাপ!
এখন চাদরে ছাপ ছাপ অতীত
যাকে হত্যা করতে পারেনি। হয়তো
কোন দুর্বল ঘন্টা বেজেছিল
আরো উঠে এসো বিগত শব্দ নাড়ি থেকে
আমাকে মুক্তি দাও.....
৩.
একটি স্লাইডের ওপর তুলে নেওয়া এক ফোঁটা রক্তে জীবনের কিছু যায় আসে না,
হিমোগ্লোবিন কেমন নড়ছে চড়ছে....
আর কতো শরীর থেকে শক্তির সমীকরণ তুলে নেবে
সন্ধানী ঈশ্বর!?
দিয়েছি তো জন্মের কতগুলি অধ্যায়....
এখন শুধু তারা চেয়ে চেয়ে দ্যাখে, আমি কর গুণি ডান-বাম
রাজনীতি বুঝি না, অসহ্য লাগে!
অনেকগুলি খাঁচায় বন্দী পাখি দেখেছি ওদের উঠানে
রাত্রে শুনেছি গুনগুন সুর তোলে, এসব দেখে আমার জ্বর আসে
কাঁপতে কাঁপতে দেখি সপ্তস্বর জলের মধ্যে ভেসে যাচ্ছে....
৪.
আজ অনেক শান্ত আকাশ
দেহের ভার কমে গ্যাছে, এতো হালকা আত্মা কোনদিন বহন করিনি....
একটা প্যারাসিটামলের বাহুবলে
বহুদিন পড়ে জংধরা কৌটটা মুখ তুলে তাকালো,
শ্যাওলা পরিষ্কার করো শুভ প্রতীক।
আমি এখন শুয়ে শুয়ে ডিলান শুনবো
বিরক্ত কোরো না জীবাণু,
পরে এসো....
এই লেখাটা শেয়ার করুন