কবিতা

ঈশানকোণ একটি বাংলা সাহিত্যের ওয়েবব্জিন জুলাই-আগস্ট সেপ্টেম্বর ২০১৮ সংখ্যা

উদয় শংকর দুর্জয়ের কবিতা

আগুন ভর্তি জাহাজ


এক অষ্টাদশী সমুদ্রদুহিতা;

পিঙ্ক-স্ট্রব্রেরি জমা করে দীর্ঘ করেছ স্তন-সমুদয়।

দুর্নিবার স্রোতের বিপরীতে তুমি নিভিয়ে রেখেছ

আকাঙ্ক্ষার জলাঞ্জলি, উন্মাদ সূর্যের কাছে স্টারডাস্ট (কল্পনানুভূতি) ধার করে

বৃন্তের বেহালায় সাজিয়েছ 'সিরিয়াস'(উজ্জ্বলতম তারা)। - বাঁক থেকে

নেমে যাওয়া রেডিয়াম প্লানেটস, এক সজ্জা-ছায়ার পাদদেশে

অবসর বিলাস লিখিয়েছে ব্যাসার্ধের পরিচয়।

বহ্নিভরা কামনার 'আইল অফ হোয়াইট' ছেড়ে গ্যাছে

সাত-সাতটি আগুন ভরা জাহাজ। সেই কোন সময়!



পরাবাস্তব জোনাকদল


দহন নিভিয়ে সূর্য-পরাগ।

এ বর্ষা পেরুলেই হিমকাঠ বোঝাই হাওয়ারথ দাঁড়িয়ে থাকবে ত্রিনেত্রে; এক চোখে স্নাত রয়েল-ডক, অন্যাকাশে ধূপজ্বলা শিউলির আধো-গোলাপি ঠোঁট। বিধুর অয়ন ছেড়ে লবঙ্গ বোঝাই জাহাজ এসে ঘ্রাণ কুড়িয়ে নিতেই, বিহ্বলে লেখা একশ'টা অষ্টোক সুর ভেঙে যখন উড়ে যাবে রহস্যময়ী খমক, তখন তপ্ত পারদে ঢালা প্রপঞ্চের রঙ, মিশে যাবে দগ্ধ অভ্রের গলিত ঘ্রাণে। এরপর স্বর্ণকুচি মাখা শরত যেন, পরাবাস্তব মায়ার টানে স্টারলিঙের ডানায় লুকিয়ে পাড়ি দেবে ভৈরবের কোলাহলে।


সপ্তসুর-দগ্ধ-স্নাত-স্বাতি।

সন্ধ্যাকুমারীসেতার হেঁটে এলে জলের পাহাড়, এক অবিরাম ঠুংরি নেমে পড়ে রাত্রি বক্ষে। কতবার খুলে পড়েছে সে উদ্যানের গোপন বাক্সে জমা মাস্তুলের ঘুড়ি! তবু উড্ডয়নের প্যারাসুট সংগীত, অচেনা ভেবে পাড়ি দ্যায় আরেকটি মহাকাল।


অকারণ কোলাহল বোহেমিয়ান।

পাথরের উপর পাথর ব'সে, জমাট বরফ খুলে রাখে কপাট; অযুত লহরি ভেঙে, অতিথি হয়ে ওঠে রাক্ষসীর সবুজ চোখ; কর্নিয়ার ফাঁকে পাঁচতারা বিকেল তাড়িয়ে আনে জুনিপার গ্রাম। শরত তখন হরিদ্রাভ আগুন মেখে সবে ভোরের বাদ্য শুনিয়েছে বাকলের কর্ণকূহরে। হিম-রিম-হিম যেন পিয়ানোর রিড থেকে তুলে নিয়েছে আগমনী ট্রাম, হুইসেলের লোকালয়ে বনোহরিনী, পাতার অরণ্যঝোপ থেকে জোনাকদল আলো কুড়িয়ে এনে, কালভ্রমণে প্রহর রেখেছে বাজি।



আলপিনে জড়ানো জ্যোৎস্না


জ্যোৎস্নার আলপিন বিঁধে আছে অযুত কাল ধরে, রেটিনার চারপাশে;

একফোঁটা কান্নার হ্রদে, ভেসে আছে নিস্তব্ধ পাঁচতলা জাহাজ।

দুপুরের রঙ ছুটে আসে বিভ্রান্তি ফেলে, একপাল নীল ঘোড়া হয়ে;

প্রত্যাহ আকাশ ভাঙে কলতান রুখে, নিশ্চুপ ক্লান্তির ফিনিক্স বেহাগ।


পাল্টাতে এসে মৃদু কলরোল, থেমে গ্যাছে উল্লাসের দল;

ভাব্বার বিষাদ লিখে, ফিরে গ্যাছে সোনালি আলবাট্রাস।

কখন যেন স্টারলিং সুর চুরি করে গায়, স্বর্ণচাপার গান,

এক অষ্টাদশী রোজ তাড়িয়ে বেড়ায় নিরুদ্দেশী পেগাসাস।


ত্রিকোণি রোদ্দুরে ভেজাতে আসা অঞ্জলির গৃহদ্বার,

বিবর্ণ বেহালায় পড়ে থাকে বিভ্রমের কলতান।

আর চাইলেও নিকষ ফেরি, উড়ে আসবে না, ছেড়ে পাটাতন।

এক অন্যযানে, সমুদ্র থেকে তুলে নেবো, ধুলো সমেত রুপোলি মণিহার।


                       HOME

এই লেখাটা শেয়ার করুন