কবিতা

ঈশানকোণ একটি বাংলা সাহিত্যের ওয়েবব্জিন জুলাই-আগস্ট সেপ্টেম্বর ২০১৮ সংখ্যা

দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের কবিতা

অন্ধকারের কবিতা


১.

কাল রাতে জোছনায় পুড়ে গেছে একলা বকুল

ঘাসের কান্নায় মিশে আছে সূর্যের শোক

বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীরা শাঁখ কুড়িয়ে নিয়ে চলে গেলে

নির্জনের সাথে পাড়া ভাব করে নেয়

অন্ধকার পাতায় শুধু ম্লান বাতাসিয়া অক্ষর

গন্ধের ভিতরে আদিম রাত্রি আসে

তার শরীরে কোনো সুললিত গান নেই

শুধু কিছু বিড়ালি চাল আর উৎকট উল্লাস নিয়ন আলোর

নিয়ে আছে সর্বাঙ্গ

কেঁপে ওঠে সাদা বনতল অন্ধ

বেদনায়

মৃত শিশ্নের কাছে রজনী নামাই

অবাক ফেটে ফেটে যায় রেখার

স্নায়ুদেশ



৩.

পূর্ণমিদম


খোলা আকাশের নীচে ভালো হচ্ছে অসুখের কাগজ বৃষ্টির জল পেয়ে ৷

ঔষধের নাম ধুয়ে গেলে এক্কা গাড়ি

ছুটে মাঠে দেখে কাঠবিড়ালির ডিগবাজি


বাজিগরের অদ্ভুত খেলায় সংলাপ বন্ধ ৷ ধরতে গেলেই পাল্টে যায় ৷

মেয়ে পুরুষ আর পুরুষ মেয়ে ৷ এবার বাঁশি অসি হয়ে মাভৈ


ভৈরবী রাতের এলোকেশী রূপ

শশ্মান জাগালে চাঁদ ফেরে না ৷

না-লোভ মহাসুখ ডাকে পঞ্চস্কন্ধ

জ্বালিয়ে আর পরমে নীরব উৎসব


শব হলে সব পাওয়া আর শান্তি

অশান্তি প্রলাপের শেষ



৪.

পথ চাওয়াতেই আনন্দ


ঘামের লবণ জলে স্নান করতে করতে পেরিয়ে এলাম চন্ডীতলা

আর বুড়ো বটতলা

মানুষেরা গল্প করছে আর সেই

আড্ডার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে

রাস্তায়

এখানে লুঙ্গি ধূতির বিতর্ক নেই

পুকুরের একধারে কাপড় তুলে

জল ত্যাগ করছে রমণী

আর কিছু দূরে একটি মেয়ে কুকুর

ঘিরে আরো কয়েকটা পুরুষ

পুরুষত্ব ফলাতে ব্যস্ত

ফলাহার শেষে পেপে পাতা চিবুচ্ছে শাখামৃগেরা

শরৎকাল এসে গেছে বলে তুমিও খানিক খড়গুঁজে দাঁড়িয়ে আটচালায়

চালাঘরের পাশে গোবরের স্তূপ

দেয়াল চিত্রে তরুণ এর কাঁধে

আদিম অস্ত্র

হরিণ নিশ্চিত বসে পদমূলে

কোথাও যেন কোনো হিংসা নেই

একটা দৃশ্য থেকে আরেকটা দৃশ্যতে সে তৈরি করে ফেলল একটা সেতু

আমাদের রোগা না হয়ে আর উপায় নেই



৫.

শিরোনামহীন


এই শূন্যমাঠ শোক আর গীতা নিয়ে

শিশির কুড়িয়ে কোথায় থমকে


হস্তাক্ষর খোঁজে ধূলোর শরীরে

সরে যায় মৃত পাখির থেকে হাত


পৌষের চাঁদমনা সন্ধ্যায় বৃষ্টি এলে

আত্মজীবনীতে অসমাপ্ত রেখা


কিছু শব্দ রেখে ট্রেন চলে গেলে

ঈশ্বর একা প্ল্যাটফর্মে....

               

               HOME

এই লেখাটা শেয়ার করুন