সই-কথা ১
হৃদয় কাঁদে,
বিষণ্ণ এ আকাশ।
কস্তুরীগন্ধ মাখা সে
ছবির মত গ্রামখানি।
কাজল গাঢ় আঁধার চোখে
কত প্রতীক্ষার সরিৎসংগমে –
নিবিড় ছায়া তোর,
নন্দিতবর্ণে অসহ্য তৃষ্ণার ঢেউগুলো.....
সাগরপ্লাবী প্রেমের তরঙ্গ দোলায় ক্রম-নিমজ্জমান....৷
কী করে ছেড়ে যাই নদী?
তোকে ছেড়ে?
তোর রক্তিম আঁচলে আমার কবিতা কাব্য সব বাঁধা।
বিক্ষিপ্ত কামনারা শুয়ে থাক তোর আস্তৃত কোলে।
বিষণ্ণতা ছোঁয়া ঝরাপাতার সে মর্মর।
যেন স্বপ্ন স্মৃতির চরাচরে খেই হারালো অনিঃশেষ।
র্নিজনে যন্ত্রণা ভাঙে নদী
তার অগুনতি ঢেউয়ে—
এ সব কবিতার হাটে নৈরাশ্যের দোলাচল,
আশা পীড়িত মৃত্তিকা-সংলগ্ন ইতিহাস ঘন সাময়িক সামাজিক
নির্জন অভিমুখ!
কন্ঠস্বর আকাশে মিলিয়ে!
সই-কথা ২
আকাঙ্ক্ষার যূপকাষ্ঠে নদীর সে ঘরকন্না, গেরস্থালি।
অদম্য আবেগে সে বলেছিল, পৃথিবীর অসীম সত্তার অভিমুখেই আমার এ যাত্রাপথ।
তৃষিত হৃদয়ে আকাঙ্ক্ষার অঙ্গার। তীক্ষ্ণ পরাজয়, প্রতীক্ষারত সে চঞ্চল সংশয় মাখা
হিংস্র শ্বাপদ কামনারা!
ব্যর্থতায় সে বিবাগী জীবন!
তাই তো এসেছি ফিরে নদী, তোর গিরিবর আঁচলে শ্যামলের কোলে।
পালাবদলের দেশে।
কাশফুলি মেঘেরা কেমন আকাশে ভাসে
মায়াবী বিকেল আসে মদির আবেশে —
রামধনু রঙ ছড়িয়ে
করুণ অভিলাষে!
কি যেন হারিয়েছি আজ?
উচ্ছল চাপল্য মুক্তি?
সে ফাগুনরাতে কুমারীত্ব অবসান নিঃশেষে
ক্রমশঃ ঝানুপাকা গিন্নির বেশে কোমর কষে
বলে সে —
"কেমন ভাল আছি আমি দেখো এসো।"
বিহ্বল সুখে দুরন্ত বলাকার সাথে মিতালি পাতায়
মুগ্ধ মেঘেরা, নদী গোপনে হৃদয় লুকায় বুঝি!
তোর হদয়ের জং-ধরা ঘরে
জীবনের বাঁকে-বাঁকে কত গান আবেগে—
কী যে খুঁজে চলেছিস তোর ছলাৎ ছলাৎ জলে?
আকাঙ্ক্ষারা মানেনা মানা, নদী—
তারা যে কেবলই সুখ চায়!
এই লেখাটা শেয়ার করুন