অশরীরী
তৃষ্ণা বসাক
বরাবর আমি একাই হাঁটি, শরীরকে সঙ্গে নিই না,
নিলেও, একটুকরো হাড় ছুঁড়ে দিই দূরে,
শরীর লাফিয়ে যায় সেটা ধরতে,
সেই ফাঁকে আমি আর একটু এগিয়ে যাই,
উঁচু বাড়ির ফাঁকে ফাঁকে দেখি তৃতীয়ার চাঁদ…
চাঁদের নিচ দিয়ে গলে শরীর
আমার পায়ে পায়ে দৌড়ে আসে,
আমি এবার একটা লাল বল ছুঁড়ে দিই,
একটা ফ্রিসবি
একটুকরো মাংস
শেষপর্যন্ত নিজেকেই!
তারপর হাঁচোড় পাঁচোড় করে
ওর আদর থেকে বেরিয়ে এসে
হেঁটে যাই একা।
রৌদ্র স্নান
তৃষ্ণা বসাক
অতিকায় জলপাইয়ের মতো তোমার পুরুষাঙ্গ
দেখলেই আমার রৌদ্রস্নান করতে ইচ্ছে করে,
হেমন্তের ভোরগুলো যতটা ছায়াছন্ন
দুপুর ঠিক ততটাই তীব্র ও মায়াবী,
এমন দুপুরে
আমি শুখনো পাতা মাড়িয়ে প্রায়ই সমুদ্রের ধারে চলে যাই –
রামধনু রঙের মাছ
আমার পায়ে সুড়সুড়ি দেয়,
হেমন্তের দুপুর আমার স্তনের ওপর ঝুঁকে আসে,
পর পর বালির পাহাড়, বালির প্রাসাদ, বালির ক্যাসিনো...
একটার আড়াল থেকে তুমি বেরিয়ে আসো হঠাৎ নির্বসন!
অতিকায় জলপাইয়ের মতো তোমার পুরুষাঙ্গ—
আমি তেলে টুপটুপে হয়ে রৌদ্রস্নান করি।
এমনি এমনি
তৃষ্ণা বসাক
অনেকদিন ছাদে শুয়ে বৃষ্টিতে ভিজিনি,
অনেকদিন দেখিনি মুঠো মুঠো তারা ছড়ানো আকাশ,
অনেকদিন বাবার হাত শক্ত করে ধরে কোথাও যাইনি,
অনেকদিন পাশ ফিরে শুয়েও
মার বুকের গন্ধটা খুঁজে পাইনি,
এরকম নয়, যে এগুলো করতে না পেরে
আমার গলা দিয়ে ভাত নামছে না,
আমার প্রাণটা ছটফট করছে,
আমি মরে যাচ্ছি –
মরে অবশ্য আমি যাচ্ছি
কিন্তু সেটা ওপরের একটা কারণের জন্যেও নয়,
আমি একটা
বৃষ্টিহীন,
আকাশহীন,
বাবাহীন,
মাহীন
শহরে ঘুরতে ঘুরতে
আমি এমনি, জাস্ট এমনি এমনি মরে যাচ্ছি!
এই লেখাটা শেয়ার করুন