তবু অভ্যেস
এখনও আকাশ ভেঙে পড়ে
আমাদের ভাঙা বাকি নেই
সামনে বহর দেখি শুধু
হাঁটু জল পথে দাঁড়ালেই...
আমরা খেয়াল রাখি জল
আমাদের কোনো ছাতা নেই
মাঝি নেই, ভাসি গলাতল
লক্ষ্মী থাকেন কিনারেই...
কিশোরী রাধার সাথে ঘর
মনে গোঁজা ভালোবাসাবাসি
রাত জেগে তারা গোনা সার
মোহরে কিনেছে মাসিপিসি...
পুতুল মানুষ বেচাকেনা
হাত তুলে মিছিলের শেষ
মুহূর্তে বেঁচে উঠে মরে
বৃষ্টিতে ভেজা অভ্যেস...
রানিবালা ইস্কুল
বাৎসল্যের সমারোহ লুকোচুরি খেলতে খেলতে
নতুন জামাপরা শিশু বিকেলের
যে হাওয়াটি মুদ্রাদোষে
কাঁধে ব্যাগ – হাতে ছাতা – লম্বা বিনুনি নতুন দিদিমণির
মাথায় আলগোছে বকুল ঝরিয়ে দিচ্ছিলো
সেই তো জঙ্গলের পথ পেরোতে পেরোতে
ছায়া উন্মোচনের ভিতর দিয়ে
একপাল দামাল মেঘের মিছিল নিয়ে এলো;
এবার যেদিকে দু’চোখ যায় চলে যাবে
ছড়িয়ে পড়বে ছমছম আকাশের নিচে
আনন্দের আনাচে-কানাচে; আর
মেঘের পাতায় পাতায় কবিতা লিখে ছড়িয়ে দেবে
‘রিমঝিম ঘন ঘন রে ...’
নিশিরাতে গলা ছেড়ে গান গাইবে পূরবী-বিভাসে
গভীরে ঠিক লুকিয়ে রাখবে
সেতারের ঝালার মতো মল্লারের তান-বিস্তার;
জানলা খুলে দাঁড়িয়ে থাকা চশমা খুলে দেখার
চোখের পাতা বেয়ে নেমে আসা ঠোট ভেজা অশ্রুর
ডাকনাম ধরে ডাকতে থাকবে;
জেগে উঠবে কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া রানিবালা ইস্কুল ...
ভাওয়াইয়া
এর মধ্যেই একদিন সেনগুপ্ত বাড়ির
লাল কার্ডিগান পরা রোগা বিকেলের সঙ্গে দেখা
আনমনা দুই হাতে কমলালেবুর খোসা
ছাড়াতে ছাড়াতে জগৎপার্কের
সাতরঙা হাসিখুশির পাশ দিয়ে হাঁটছিলো;
তার আনন্দের মুহূর্তগুলি যেন চাপা পড়েছিলো
ডানাওয়ালা নিঃসঙ্গতার নিচে;
কিছু প্রশ্ন করার আগেই
দু’হাত পরপর সন্দেহের গর্তগুলি পেরিয়ে
অতি সন্তর্পণে সন্ধের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল ...
দূর থেকে ভেসে আসা রাতজাগা ভাওয়াইয়া গানে
কি ওর বেদনার কথাই বলছে!
এই লেখাটা শেয়ার করুন