কবিতা

ঈশানকোণ একটি সাহিত্যের ওয়েবজিন গ্রীষ্ম সংখ্যা মে ২০১৭ ইং 

[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]

মণিপুরের তিনটি কবিতা
[মণিপুরি থেকে বাংলায় অনুবাদঃ সদানন্দ সিংহ] 

আয়ু

ই. নীলকান্ত সিং


ছায়াপথের মাঝে কতোবার খুঁজেছি

জীবনের কী মানে

বন্ধ চোখে কতোবার বসে গেছি

দেখা হবে বলে

হাজার সূর্যের এক মিছিল


খুঁজে গেছি কেবল সারাজীবন

পাই নি কিছু, ব্যর্থ হয়ে এসেছি ফিরে

উপায়হীন হয়ে বুঝে গেছি – এক ধারণা, গতিহীন


তারপর ছুঁয়ে দেখেছি এক ফুলকে

ঝরে গেছে সেটা এক পলকে

চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এক আলো, সৌন্দর্যের


গুরুতর এক প্রশ্ন নেমে আসে অসময়ে

জীবনের মানে তবে কি এই ?

অর্থহীন ঔজ্বল্য

যেন কোন আগুনের ফুলকি !


[মণিপুরের প্রয়াত কবি ই. নীলকান্ত সিং-এর লেখা কাব্যগ্রন্থ “তীর্থযাত্রা” থেকে]




বাগান

রাজ কুমার ভুবনস্না


এখানে নেই।


ঝরে যাওয়া ফুল

আর ঝরা পাতার ওপর

পদধ্বনির

যে প্রথম আওয়াজ

আর আমার ঘুমহীন সারারাত


এখানে ফুলবাগান নেই।


অজান্তে উড়ে যাওয়া

পাখিদের ডানার শব্দ

উদ্ভ্রান্ত চোখের 

নিঃশ্বাস প্রশ্বাস

ফোটেনি বুকে কোন ফুল

একপলক


এখানে ফুলবাগান নেই।


[মণিপুরের কবি রাজকুমার ভুবনস্নার কাব্যগ্রন্থ “অশাংবা ঊনাগী মমি” থেকে] 


গৃহহীনের ঘর

শরতচান্দ থিয়াম


সমস্ত চোখ যদি বন্ধ হয়ে যায়

কী আর লাভ হবে অর্গস

একশোটা চোখ থেকেও ?


বিরামহীন

নির্মিয়মান ঘর কতো

সংখ্যাহীন

কিন্তু কে করবে বাস

এই ঘরে

তোমার বন্ধ চোখের সামনে 

তৈরি যেসব ঘর ?


দীর্ঘ নীলনদ

আর তুলনাহীনা নদী ইম্ফাল

তুমি তো ছিলে ঘুমিয়ে

তখন নীলনদ আর নদী ইম্ফাল,

সব একাকার 

কতোবার হয়েছে অর্গস।


কী করে গাইবো এখন

আমার প্রাণ আমার দেশের গান

গৃহহীনের ঘরে ? 


[মণিপুরের কবি শরতচান্দ থিয়ামের কাব্যগ্রন্থ “য়ূমলিংদবাশিংগী য়ূম” থেকে] 


HOME

এই লেখাটা শেয়ার করুন