নিবন্ধ

ঈশানকোণ একটি বাংলা সাহিত্যের ওয়েবব্জিন জুলাই-আগস্ট সেপ্টেম্বর ২০১৮ সংখ্যা

[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]

অ্যারিস্টটলের কবিগণ
সদানন্দ সিংহ

প্লেটোর আদর্শ শিষ্য অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খৃষ্টপূর্ব) তৎকালীন সময়ে কবি এবং কবিতা নিয়ে যে কথাগুলি বলেছিলেন, তা অন্য কেউ সেভাবে বলতে পারেননি।

অ্যারিস্টটলের মতে কবিতা বিভিন্ন ধরনের। একটি ভালো কবিতার গঠন এবং বিভাজন তার উপাদান অংশেই থাকে। তিনি কবিতাকে একটি অনুকরণের মাধ্যম হিসাবে বর্ণনা করেন যা চরিত্র, আবেগ বা কর্মের মাধ্যমে জীবনকে প্রতিনিধিত্ব বা প্রতিলিপি করার চেষ্টা করে। তাই কবিতা বিভিন্নভাবে বিস্তৃত হয়ে মহাকাব্য, ট্র্যাজেডি, কমেডি, লিরিক্যাল, এমন কি স্তোকবচন সহ কোনো লৌকিক নৃত্যও হতে পারে।
অ্যারিস্টটলের মতে কাউকে বাস্তব জীবন থেকে আরো উন্নত ও অতি ভালো দেখাতে গিয়েই ট্র্যাজিডির জন্ম। কমেডি অন্যদিকে নিম্নতর টাইপ প্রকাশিত করে। অপরপক্ষে এপিক কবিতা ট্র্যাজেডির মত উন্নতচরিত্রের লোকদের নিয়েই হয়, যা বর্ণনাধর্মী, কিন্তু ট্র্যাজেডির মত শেষ হয়না। ট্র্যাজেডি ছয় উপাদান বহন করেঃ- প্লট, চরিত্র, কথা, চিন্তাধারা, প্রদর্শনী এবং গান। প্লট ট্র্যাজেডির আত্মা। একটি প্লটের শুরু, মধ্যম এবং শেষ থাকতে হবে; এর তাৎপর্য সর্বজনীন হতে হবে।
চরিত্র তৈরি করার সময় একজন কবিকে চারটি জিনিসের ওপর লক্ষ্য রাখবে হবে। প্রথমত নায়ককে ভাল মানুষ হতে হবে, এবং তার বক্তব্যে উদ্দেশ্যপূর্ণ নৈতিকতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, নায়ককের কাজগুলি হবে নির্ভুল এবং বীর রসাত্মক। তৃতীয়ত, নায়কের অবস্থান হবে জীবনের সত্যে। চতুর্থত নায়ককে হতে হবে পক্ষপাতহীন।

কবি নিজের অবস্থান নিয়ে, বা তার কল্পিত বিষয়গুলি নিয়ে লিখবেন, অথবা যা হওয়া উচিত তা নিয়ে লিখবেন। কাব্যিক লেখায় রূপক বা সমসাময়িক শব্দ থাকা বাঞ্ছনীয়। কবি যখন ভুলগুলি অনুকরণ করে তখন কাব্যের ত্রুটিগুলি বেরিয়ে আসে এবং এইভাবে কবিতার সারাংশ ধ্বংস করে দেয়। তবে আংশিক ত্রুটি পুরো কাজকে ধ্বংস করে দিতে পারেনা।

কবিদের বিষয়ে এতসব বলার পরেও অ্যারিস্টটল তার কল্পিত আদর্শ রাষ্ট্র থেকে কবিদের নির্বাসিত করেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় কবিরা সত্যিই হয়তো কোনো কালেই দায়িত্ববান নন।                                                                                                                  HOME

এই লেখাটা শেয়ার করুন