হারানো জিনিস – লিডিয়া ডেভিস
হারানো জিনিস – লিডিয়া ডেভিস

হারানো জিনিস              (অনুগল্প) লিডিয়া ডেভিস (আমেরিকান গল্প, ইংরেজি থেকে অনুবাদঃ সদানন্দ সিংহ) তারা হারিয়ে গেছে, বা হারিয়ে না গিয়েও পৃথিবীর কোথাও আছে। তাদের বেশিরভাগই ছোট জিনিস। যদিও দুটো বড়ও আছে — একটা কোট এবং একটা কুকুর। ছোট জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল একটি নির্দিষ্ট রিং এবং অন্যটি একটি নির্দিষ্ট বোতাম। তারা আমার কাছ থেকে, আমার আশপাশ থেকে হারিয়ে গেছে। কিন্তু তারা সম্পূর্ণভাবে হারিয়েও যায়নি। তারা কোথাও আছে। এটাও হতে পারে তারা হয়তো অন্য কারো…

Read More

সদানন্দ সিংহের কবিতা
সদানন্দ সিংহের কবিতা

ফিরে আসা সদানন্দ সিংহ হয়তো কিছু কৌশল শিখতে হয় বেঁচে থাকার হয়তো খুঁজে নিতে হয় জীবনদায়ী কোন আশ্রয় তবু ফিরে আসতে হয়, একবার নয় বারবার আর ক্রমে ক্রমে ভুলভ্রান্তিও সব সহ্য হয়ে যায় আকাশও আবার রঙিন হয়ে যায় কেটে পড়া ঘুড়ির দোলা আর ঢেউ একা একা আমি সব তুলে রাখি এই রাস্তা, এই কাদা, এইসব চূড়ান্ত ভাইরাস, যাবতীয় নরক-গুলজার আর শেষ হেমন্তের কথাও মনে রাখি

Read More

শতায়ু ভব – সদানন্দ সিংহ
শতায়ু ভব – সদানন্দ সিংহ

শতায়ু ভব সদানন্দ সিংহ আজকাল ভেজাল যে কোথায় নেই তা খুঁজে পাওয়া খুব শক্ত ব্যাপার। বিষাক্ত ফরমালিন মাছকে টাটকা রাখে। মাঝে মাঝে সরকারিভাবে সেম্পল চেকিং-এর ফলে মাছে ফরমালিন রাসায়নিক পাওয়া গেছে বলে একটা হৈচৈ হয়। তখন আমদানি করা মাছ খাওয়া কিছুদিনের জন্যে কমে যায়। কিন্তু ভুলে যাওয়া মানুষের ধর্ম। তাই আস্তে আস্তে ফরমালিনের ক্ষতিকর দিকটির কথা লোকে ভুলে যায়। আবার হু হু করে মাছ বিক্রি হয়। হর্ষবর্ধনদা সবসময় আমাকে পই পই করে বলেন, “যে মাছে মাছিরা ভনভন করে ওড়ে…

Read More

সদানন্দ সিংহের ছড়া
সদানন্দ সিংহের ছড়া

ডিজিটাল সদানন্দ সিংহ থ্রী-জি থেকে ফোর-জি, এখন আবার ফাইভ-জি, ধাই ধাই ধিন তা। আনন্দতে নাচি, পরমানন্দে বাঁচি, বদলে ফেলুন বন্ধু মোবাইলটা। গড়গড়িয়ে ছুটবে, দেশটাও নাকি এগোবে, থাকবে না কেউ ন্যাংটা। সোশ্যাল মিডিয়া অবতার, প্রেমালাপের ঝংকার, বা খামচি খিস্তি ঘন্টা। বাবুদের খুশিতেই খুশি, গরীবের এই-ই বেশি, হাসে কেবল প্রাণটা। মোদের থাকুক টু-জি, জীবনটাই যে হিজিবিজি, বেঁচে থাকুক তবু দেশটা।

Read More

জীবন আর যৌবন — সদানন্দ সিংহ
জীবন আর যৌবন — সদানন্দ সিংহ

জীবন আর যৌবন সদানন্দ সিংহ খাটা পায়খানা। নিচে মাটির গর্ত। গর্তটা বিষ্ঠায় ভর্তি এবং ওপর থেকে এসব দৃশ্যমান। পায়খানার বাঁশের বেড়ার আড়ালে বসে বেড়ার ফাঁকে জীবন অনেক দূর-দূরান্তের গাছ-বাড়িঘর-ধানক্ষেতের দৃশ্য দেখতে দেখতে পেট পরিষ্কারের চেষ্টা করে আধঘন্টা যাবৎ। পেট ঠিকভাবে পরিষ্কার না হলে তার মেজাজটাও ঠিক থাকেনা। প্রথম প্রথম এখানে খুব অসুবিধে হয়েছিল জীবনের। সরকারি চাকুরিসীমা বয়েসের শেষপ্রান্তে কার্গিল যুদ্ধজয়ের মতো কপালে শিকে ছিঁড়ে কৃষিবিভাগের নতুন চাকরি পেয়ে সে যখন এই অজ গ্রামে পোস্টিং পেল, তখন সে বেশ খুশিমনেই…

Read More

প্রতিদান – সদানন্দ সিংহ
প্রতিদান – সদানন্দ সিংহ

প্রতিদান    (অনুগল্প) সদানন্দ সিংহ পাশ থেকে শ্রাবণী চেঁচাচ্ছে ক্রমাগত, আস্তে যাও, আস্তে। কী হচ্ছে এসব! মরতে চাও তুমি? আমি চাই না। কিন্তু রাজ গাড়িটা কিছুতেই থামাচ্ছে না। স্পিডোমিটারটা শুধু উঠছে তো উঠছেই, মনে হচ্ছে যেন তাদের কারটা হাওয়ার ওপর ভেসে যাচ্ছে। চল্লিশ থেকে ষাট, ষাট থেকে সত্তর, সত্তর থেকে আশি। তারপর আশি ওপরও ওঠে যাচ্ছে। নতুন গাড়ির একটা শখ রাজের ছিল অনেকদিন ধরে। মাস ছয়েক আগে গাড়িটা নিয়েছে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে। এই ছ মাস ধরে একটা লার্নার…

Read More

গান গাওয়া পাথর – ভাসিল বাইকোভ
গান গাওয়া পাথর – ভাসিল বাইকোভ

গান গাওয়া পাথর ভাসিল বাইকোভ                (রাশিয়ান গল্প, ইংরেজি থেকে অনুবাদঃ সদানন্দ সিংহ) আমি পাশের দ্বীপের চারপাশে হেঁটেছি, মাঠের মধ্য দিয়ে পথ অতিক্রম করেছি এবং খাড়া ডান পাড় ধরে দৌড়েছি। সেখানে উজ্জ্বল বসন্তের সূর্যালোক পৃথিবীকে প্লাবিত করেছে, সেখানকার নদীটি তীক্ষ্ণ সোনালি তারার মতো ঝলমল করছে, স্বচ্ছ বাতাস উষ্ণ এবং সদ্য চাষ করা মাঠের উপরে কম্পন ধরাচ্ছে যেখানে কিছু সাদা-চঞ্চুযুক্ত রুক পাখিরা চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এবং ব্যাঙগুলি সবুজ রঙে আচ্ছাদিত পুকুরে ঘ্যাঙরঘ্যাং করে ডেকে…

Read More

বেবি ডল – বেকি রুবিসন
বেবি ডল – বেকি রুবিসন

বেবি ডল                (অনুগল্প) বেকি রুবিসন (আমেরিকান গল্প, ইংরেজি থেকে অনুবাদঃ সদানন্দ সিংহ) র‍্যাগেডি অ্যান সর্বদা আমার মা ছিল না, কিন্তু যখন আমি যখন জন্মেছিলাম তখন ছিল। হ্যালোউইনের এক সপ্তাহ আগে অফিসের এক পার্টিতে, অফিসে নয়, রিচার্ড নিক্সনের বেসমেন্ট অ্যাপার্টমেন্টে আমি যখন আমার জেলিসিক্ত মুঠো দিয়ে তার কমদামি ডেনিম জাম্পারের নিচে আঘাত করি তখন সে চুমুক দিচ্ছিল শার্লি টেম্পলে (শার্লি টেম্পল=অ্যালকোহলহীন এক জাতীয় পানীয়)। আমি গ্রেনাডাইন (গ্রেনাডাইন=ফলের রসযুক্ত এক পানীয়) ঘৃণা করি, কিন্তু…

Read More

শনিপুজোয় হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন – সদানন্দ সিংহ
শনিপুজোয় হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন – সদানন্দ সিংহ

শনিপুজোয় হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন    (ছোটদের গল্প) সদানন্দ সিংহ স্কুল থেকে ফিরেই দেখলাম, টেবিলের ওপরে আমার চার নম্বরী খাতায় বানানো ‘ভিজিটরস্‌ বুক’ খাতায় বড় বড় হরপে জ্বলজ্বল করছে – “হাবু, আজ আমাদের বাড়িতে সন্ধ্যেয় শনিপূজার উদ্বোধন করিবেন কলিকাতার প্রখ্যাত হর্ষবর্ধন; সঙ্গে থাকিবেন উনার ভাই গোবর্ধন। ইতি – জটুমামা।” জটুমামা মানে আমাদের চিংড়িমামা ওরফে জংলিমামা। আর আমি জানতাম পৃথিবীতে প্রখ্যাত হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন জুটি শুধু শিব্রাম চক্কোত্তীর গল্পেই আছে। উনারা কি এখন আগরতলার জংলিমামার বাড়িতেও উপস্থিত হচ্ছেন নাকি ? কথাগুলি আমার একদম বিশ্বাস হচ্ছিল…

Read More

ক্ষ্যামা দাও — সদানন্দ সিংহ
ক্ষ্যামা দাও — সদানন্দ সিংহ

ক্ষ্যামা দাও সদানন্দ সিংহ সকাল থেকেই কানে কেবল এক গানের কলি ভেসে আসছে, “বাবা গো, ফোড়ন দাও ফোড়ন দাও। তোমার নয়নতলে চরণতলে স্থান দাও।” এই সুরের সঙ্গে দামামার এক শব্দ। অথচ এই সুরটা আমি আগে জীবনেও শুনিনি, গানের গায়ক আছে কিনা তাও জানি না। আর আশ্চর্য কলিটা বারবার আমাকে বাজাচ্ছে। তবে কি আমার মতিভ্রম হয়ে গেল? একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম। এইসময় দেখলাম, সেনাপতিদা বাজারের থলি হাতে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে সেনাপতিদা আমার কাছে এসে অনেক উদ্ভট পরামর্শ চান।…

Read More