সদানন্দ সিংহের ছড়া
হেইয়ো ভাই সদানন্দ সিংহ চ আকার চা ট আকার টা চা-আ-আ-আ টা। হেইয়ো ভাই বাঘের মাথায় দিলাম চাটা। কঁ আকার কাঁ ট আকার টা কাঁ-আ-আ-আ টা। হেইয়ো ভাই যমের দুয়ারে দিলাম কাঁটা। ঝঁ আকার ঝাঁ ট আকার টা ঝাঁ-আ-আ-আ টা। হেইয়ো ভাই ভূতের টাকে দিলাম ঝাঁটা।
হেইয়ো ভাই সদানন্দ সিংহ চ আকার চা ট আকার টা চা-আ-আ-আ টা। হেইয়ো ভাই বাঘের মাথায় দিলাম চাটা। কঁ আকার কাঁ ট আকার টা কাঁ-আ-আ-আ টা। হেইয়ো ভাই যমের দুয়ারে দিলাম কাঁটা। ঝঁ আকার ঝাঁ ট আকার টা ঝাঁ-আ-আ-আ টা। হেইয়ো ভাই ভূতের টাকে দিলাম ঝাঁটা।
হর্ষবর্ধনের স্বদেশীয়ানা (ছোটোদের গল্প) সদানন্দ সিংহ মা আমাকে চা পাতা কেনার জন্যে দোকানে পাঠিয়েছিলেন। আমি বুড়োর মুদি দোকানে ঢুকে দাঁড়িয়ে আছি তাই। আমার সামনে তিনজন ক্রেতা। এইসময় টের পেলাম কেউ আমার কাঁধে হাত রেখেছে। পেছনে তাকালাম। দেখলাম আমার পিছেই গোবর্ধনদা। হেসে গোবর্ধনদা বললেন, দাদার জন্যে সাগুদানা নেবো। উত্তরে বললাম, আমার ঠাকুর্দাও খেতেন। একাদশীর দিনে। গোবর্ধনদার উত্তর শুনলাম, না না, দাদা একাদশী করে না। দাদা স্বদেশী করে। কথাটা শুনে আশ্চর্য হইয়ে বললাম, স্বদেশী! কী করে করেন? — সাগুদানা…
ইলাস্ট্রেশন সদানন্দ সিংহ হিমপরশের পরাগ জ্বেলে যে ব্যক্তি অমানিশায় সূর্যকে আহ্বান জানায় তাকে আমি স্বপ্ন পূজারি বলি। আর জীবন মরুর তৃষ্ণা ঢেলে যে-জন সামুদ্রিক আস্বাদ পেতে চায় তাকে আমি স্বপ্ন বিলাসী বলি। আমার চরাচরেই এখন স্বপ্ন পূজারি ঘুরে বেড়ায়, নোঙর ফেলে স্বপ্ন বিলাসী ম্রিয়মাণ রোদ আর জ্যোৎস্না ঢাকা রাতে আমি নিঃশেষ হতে হতে টের পাই এক জমিন অক্লান্ত ক্ষেত ফিঙের বাহার নিয়ে টিকে আছে, যেখানে বাতাসে দোল খায় এক…
মেস মেসবাড়ি মেসজীবন সদানন্দ সিংহ মেস হল এমনই একটা ব্যবস্থা যেখানে একের বেশি পরিবারের বাইরের সম কিংবা অসম বয়সের বা বিভিন্ন পেশার বা শিক্ষার্থী লোক মিলে জীবনের তাগিদে একসঙ্গে মাসের পর মাস খাওয়া-দাওয়া করে থাকেন নিজেদের দায়িত্বে এবং সেই খাওয়া-দাওয়ার ব্যয়ভার নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে বন্টন করে নেন। একসঙ্গে একই ঘরে থেকে বা একই বাড়িতে ভিন্ন ভিন্ন ঘরে থেকে বা ভিন্ন ভিন্ন বাড়িতে থেকেও মেস করা যায়। সাধারণত মেসের খরচ দু রকমের হয় — ফিক্সড এবং রেকারিং। ফিক্সড খরচের…
গোবর্ধনের চাল (ছোটোদের গল্প) সদানন্দ সিংহ আজ এপ্রিলের পাঁচ তারিখ। সামনে জংলিমামাকে এগিয়ে আসতে দেখে মাথায় একটা দুষ্টবুদ্ধি খেলে গেল। ভাবলাম একটা এপ্রিল ফুল করে দিই। হলই বা আজ এপ্রিলের পাঁচ তারিখ, কিন্তু এপ্রিলই তো, মে মাস তো আর হয়নি। যেই ভাবা সেই কাজ। জংলিমামাকে ডাক দিলাম, জটুমামা। জংলিমামা পাশে এসে বলল, আজ দেখি জংলিমামা না বলে জটুমামা বলে ডাকছিস? কোন কু-মতলব আছে নাকি? আমি হেসে বললাম, আরে না না। তোমাকে একটা খবর দেব বলেই ডাকছি। কথাটা বলেই…
ব্যাটার বৌ সদানন্দ সিংহ বেচারাম ব্যাটা নেশাখোর, খেয়ে বৌয়ের ঝাঁটা মাইশূর, চলে আসে দুঃখে ব্যাঙ্গালোর। তৈল্যরাম ব্যাটা ওজনদার, ঝটপট চটপট কিন্তু মালদার, বৌ নেই তাই দুঃখের ভাণ্ডার। বলরাম ব্যাটা সন্দেহপ্রবণ, বাড়ির নাম যদিও দুর্গাসখী ভবন, বৌকে চোখে রাখে শুধু সারাক্ষণ। সুখুরাম ব্যাটা বদরাগী, এক-দু টাকার চুলচেরা হিসেবি, বৌকে বৌ বলে না, বলে মাগি। সাধুরাম ব্যাটা হারামজাদা, ফস্টিনস্টির মহাগুরু, আছে অনেক পেয়াদা, বৌ পিটিয়ে শেষে, পেল জেলের সাজা।
আনন্দের উল্লাস সদানন্দ সিংহ প্রতিদিন ফেবু থেকে ফেবুবন্ধুদের জন্মদিনের অনেক নোটিফিকেশান পাই। কিন্তু আমার কাউকে উইশ করতে ইচ্ছে হয় না। করিও না। তা সবাই জন্মদিন পালন করুন, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। সবাই সবাইকে উইশ করুন, তাতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। শুধু আমার ব্যাপারটা অন্যরকম। এক্ষেত্রে আমি একটু কেলাস লোক। আমি নিজেও আজপর্যন্ত কোনোদিন আমার জন্মদিন পালন করিনি। কোনোদিন করতেও চাই না। তাই আমি কাউকে জন্মদিনে এখন আর মনেপ্রাণে উইশ করি না। ভবিষ্যতেও করবো না। এতে হয়তো অনেকে ক্ষুণ্ণ…
আমার মৃত্যু (অনুগল্প) পিটার অর্নার (আমেরিকান গল্প, ইংরেজি থেকে অনুবাদঃ সদানন্দ সিংহ) তার নাম ছিল বেথ। আমরা একে অপরকে চিনতাম না। আমরা তার গাড়ি নিয়ে শিকাগো থেকে মিসৌরির দিকে রওনা হয়েছিলাম। আমার মনে আছে যে যখন আমরা স্টিভেনসনের কয়েক মাইল দক্ষিণে পৌঁছে গিয়েছিলাম তখন ইতিমধ্যেই আমাদের বলার মতো কথা শেষ হয়ে গেছিল। এই দৃশ্যটি দু’জন অপরিচিত ব্যক্তির একসাথে একটি সিয়েন্সের বৈঠকে অংশ নেওয়ার গল্পের মতো দেখায় যেখানে মৃত লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পাঠকদের ভয়ানক…
দৃষ্টিবিভ্রম (অনুগল্প) সদানন্দ সিংহ দৃষ্টিবিভ্রম চতুরতাকেও ছাড়িয়ে যায়। হয়তো এভাবেই একটা মিথ তৈরি হয়। সে মিথের নির্যাসটুকু সত্যি কিনা মিথ্যা তার বাছবিচার করেনি। ধ্বনিলাল তাই স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখে প্রায়ই এক যুদ্ধক্ষেত্রের। সে বন্দুক হাতে একা এক যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। বন্দুকটা কীসের তৈরি তার কাছে অস্পষ্ট। সেটা কী দো নলা নাকি এ কে ফোরটি সেভেন কিংবা লাইট মেসিনগান সেসব উহ্য থাকে। তবু তার কাছে এসব স্বপ্ন ভালোই লাগে। এবার কিন্তু ধ্বনিলাল অন্যরকম একটা স্বপ্ন দেখল। সে দেখল জনারণ্যে…
চুয়াল্লিশ নাম্বার সদানন্দ সিংহ বলরাম চুয়াল্লিশ নাম্বার বাসের নিত্যযাত্রী। তার প্রধান কারণ, অনায়াসে বসার জায়গা পাওয়া যায় এ বাসে; যেহেতু বাসটা এখান থেকেই যাত্রা শুরু করে। মাঝে মাঝে বাসস্ট্যান্ডে আসতে একটু দেরী হয়ে গেলে মিনিবাস, এসি বাস ইত্যাদি সামনে যা পায় সে তাতেই উঠে যায়। চুয়াল্লিশ নাম্বার বাসস্ট্যান্ডের একটু আগে অটোরিক্সা স্ট্যান্ড। ওখানে রোদের মাঝে লাইনে দাঁড়াতে হয় বলে সে চুয়াল্লিশের বাসেই যাতায়াত করে। জ্যাম না হলে মিনিট কুড়ির মধ্যেই সে উল্টাডাঙ্গা পৌঁছে যায়। তারপর উল্টাডাঙ্গা থেকে কাছেই ওর আপিস।…