বসন্তসময় – সুদীপ ঘোষাল

বসন্তসময়         (অনুগল্প)

সুদীপ ঘোষাল

চণ্ডীদাসের মত ছিপ ফেলে বিপিন মাছ ধরা দেখছে ফাতনার কথা ভুলে। বাউরিবৌ গুগলি আর ঝিনুক ধরছে জলের তলা থেকে। তার সুডৌল স্তন ঝুঁকে পরেছে জল ছুঁয়ে। জল কখনও সখনও রসে ডুবিয়ে দিচ্ছে যুবতি হৃদয়। বিপিন দেখছে ভিজে নিতম্ব ফুটে উঠেছে খাজুরাহের ছবির মত। বিপিন ভাবছে ঝিনুক, গুগলির জীবন — বাউরিবৌকে স্বামী সোহাগী করে তুলেছে কোমল দেহসৌষ্ঠবের মাধ্যমে।
পুকুরের পাড়ে গাছ গাছালির স্নেহচ্ছায়া। এই দুপুর হয়ে উঠেছে বসন্তমায়া। কোন এক অদৃশ্য মায়ায় বৌ মাঝে মাঝে তাকায় বিপিনের দিকে। কেউ কোথাও নেই। দুপুরের অবসর, বাউরিবৌ ধরে শামুক, ঝিনুক। অলস স্বামীর খপ্পরে পড়ে জীবনে তার লড়াই প্রকট হয়ে উঠেছে। বিপিন বেকার যুবক। তাই ছিপ নিয়ে বসে এই সময়ে বাউরিবৌকে দেখার লোভে। সুন্দরী বাউরিবৌ ভোলে না এই বসন্তসময়। কি বর্ষা, কি শীত বা গ্রীষ্ম — দুজনের বসন্তসময় কেড়ে নিতে পারে না।

আজ বিপিন জলে নেমেছে। বাউরিবৌ কাপড় ঝেড়ে জলে ধুয়ে নিচ্ছে। দুজনেই ডুবে আছে আকণ্ঠ শীতল জলীয় আবরণে। জলের নিচে চলে জলকেলি। একটা পানকৌড়ি ডুবে ডুবে মাছ ধরার কৌশল দেখায় দুজন প্রেমিক-প্রেমিকাকে। ছিপ ডাঙায় তুলে দেখল বিপিন একটা বড় রুই ধরা পড়েছে বড়শিতে। বাউরিবৌ সোহাগী আঁচলে তুলে নেয় বিপিনের প্রেম।