সমর চক্রবর্তীর কবিতা
একাকিত্ব সমর চক্রবর্তী নিজের রক্তের রঙের সাথে তুলনা করেছি পলাশের শিমুলেরত। পূ্ঁজের সাথে বর্জিত ঘৃণ্য পীত। রক্ত দিয়েই আমি বিচার করি — পরাজয় মানে নিষিদ্ধ সোঁতধারা, আগুনের শিখায় নাচে জিৎ।
একাকিত্ব সমর চক্রবর্তী নিজের রক্তের রঙের সাথে তুলনা করেছি পলাশের শিমুলেরত। পূ্ঁজের সাথে বর্জিত ঘৃণ্য পীত। রক্ত দিয়েই আমি বিচার করি — পরাজয় মানে নিষিদ্ধ সোঁতধারা, আগুনের শিখায় নাচে জিৎ।
হাতছানি সনজিৎ বণিক তোমার দিকে তাকাতেই আকাশের নীরব দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে বলে ওঠে পেয়ে গেছি আজ নীরব স্পর্শ, অনেক দিন দেখা নেই সূর্যস্নাত শালিকের চোখ গোলগাল হলুদ রঙের প্রলেপের পর বৃষ্টির পরশ মন জুড়িয়ে বড়ো কাব্যময়। শালিক তো আজ তুমিই, রোদ্দুরের রং মেখেছো ছিমছাম শরীরের পদাবলী চোখ ছুঁয়ে এঁকে যাচ্ছে একের পর আরেক ছবি, ভালোবাসার হাতছানি বারবার জাগিয়ে রাখে তোমার আঁখির রহস্য, হাসিমুখে বাতাসের পরশ মেখে জাগিয়ে রাখো ভালোবাসার স্বপ্ন। তোমার দিকে তাকালেই দেখি জ্বলজ্বলে মৌখিক আদল হাজার হাসির…
ঢিল অজিতা চৌধুরী তুমি ঢিল ছুড়বে। দেখবো জলে আলোড়ন কতক্ষণ থাকে। একসময় জল স্থির হবে। অথচ আমি ঢিল ছুঁড়বো না। অপলকে স্থির জল দেখবো, সময়টা পরিমাপ করবো। নিশ্চয় কোন গভীর উদ্দেশ্য, যার জন্য কাউকে প্রেরিত করতে হয়। উদ্দেশ্য সাধনের জন্য এই পন্থা সঠিক না বেঠিক সময়ই বলে দেবে
অভিজিৎ চক্রবর্তী চাঁদ বিষয়ক ১ জীবনে চাঁদের আভা নিয়ে দুঘণ্টা লেকচার দিয়ে গেল দুধওলা চাঁদের শরীরে সোনা না লোহা এ নিয়ে উত্তেজিত পাড়ার ক্রিকেট ল্যান্ডার বিক্রম নিয়ে কথা বলতে বলতে আবর্জনা নিয়ে ফিরে গেল যে মহিলাটি তারও চোখে মুখে টুকরো টুকরো চাঁদের কণা আমি নামতে পারছি না কোথাও ক্রমশ ওজন কমে যাচ্ছে হাল্কা বায়বীয় হয়ে উপরে উঠে যাচ্ছি তুমুল চিৎকার ওঠে মাঝে মাঝে কোথা থেকে ঠিক বুঝতে পারছি না মাথার উপর কালো আকাশ নিচে এবড়ো খেবড়ো জমি পৃথিবীকে চাঁদ…
নিয়ে চলা, না নিয়ে চলা ব্রতীন বসু সারা জীবনে অনেক কিছু ফেলে রেখে এসেছি। কখনো পছন্দের মানুষটাকে, কখনো প্রিয় স্বপ্ন যে গাছের গুঁড়িটাকে উইকেট করে ক্রিকেট খেলেছি ছোটবেলায় তাকে, খেলার ব্যাট, বল, বন্ধু কোথায় যে রেখে এসেছি। যা এক সময় মনে হত প্রচণ্ড কাছের যখন নিয়ে চলার সময় হল, ফেলেই এলাম। আর যা ছিল নিজের মত, ভাবতাম না তাকে নিয়ে অত সাথেই রাখলাম, যদি ভাবি কখনও। জীবন যেন জানালা বন্ধ ঘরের মাটিতে পরে থাকা ধুলো কখনো কোন বিধাতা ঝি…
আপেক্ষিক সদানন্দ সিংহ আমি জানি, আপনি বলবেন রাস্তা অনেক প্রকার আপনি বলবেন জিরো থেকে হিরো হওয়া যায় আপনি বলবেন পাপীদের কপালেই দুঃখের আস্তানা আরো আরো কীসব বলে যাবেন কেবল ভাল ছাত্রের কাছে এখন আমার দিন বয়ে যায়, কুটিরে রাত আসে রাতের গুমোট হাওয়া শুরু হলেই নিঃঝুম রাতের কান্না ভাসে, তখনই দ্বিপ্রাহরিক দরবার শুরু হয়; সংশোধনী জমে ওঠে টাওয়ারের মতো বুঝে নেওয়ার সময় বলে ইদানীং রক্তমাংস আর হাড় আঁকি, শিশির বিন্দুর খোঁজ করি হারিয়ে যাওয়া আস্তানায় বারবার ঘুরি ফিরি কোনো…
মনের মানুষ সন্তোষ রায় ‘আয়রে আমার মনের মানুষ’ ডাক শুনেই সারি থেকে উঠে কপালে টোকা দিতেই জেগে ওঠে কপালে এক বলয়, মাথা থেকে শরীর জড়াতে জড়াতে পা বেয়ে নেমে যায় মাটিতে। —এবার বের করো কে সেই মনের মানুষ! আমি ঘুরতে ঘুরতে খুঁজি। সবই যে একরকম। একজন মাথা নিচু করে তো সবার মাথা নিচু, একজন হাসে তো সবাই হাসে। ভাবি, পাগল না হলে কি মনের মানুষ হয় ! সকাল দুপুর বিকেল খুঁজে খুঁজে এখনো পেলাম না। হয়ত ছোটবেলায় ছিল, আমার…
বৃষ্টি অজিত দেবনাথ অনেকদিন পর আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরল তারপর জলপ্রপাতের মতো হলুদডুবানো বিকেলবেলাকে খেদিয়ে সীমান্ত পার করে দিল পাখির ডানার মতো ঝাপটাতে-ঝাপটাতে আমলকি বনের ছায়ায় হারিয়ে যায়। আমার ভ্রষ্ট সচলতা মেঘের ইশারায় রাগিণীর চাদর গায়ে জড়িয়ে নিষ্করুণ সন্ধ্যার কপালে তিলক পরিয়ে যায়। অনেকদিন এমন আগুন ঝরানো বৃষ্টি দেখিনি বৃষ্টির স্তবকে-স্তবকে দেশ-বিদেশের কত গোলাপরঙের ফুল ফুটে ওঠে মনের গালিচা ভরে ওঠে আপ্লুত আহ্লাদে আমি দূরে সরে যাই বিচ্ছেদের আকাশ ভরে ওঠে সর্বাঙ্গ রূপের শূন্যতায় বিদায় বেলার মুহূর্তে এত প্রাণের…
অর্জন হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনের যা কিছু অর্জন সব তার দান কিন্তু দান তো এক সময় ফুরিয়ে যায় ঠাকুর প্রকৃতির গ্রাসে, তাহলে ? বিমূর্ত পথিক যায় চলে পাখিদের ডাকে নৌকো পারাপার করে যে মাঝি তার গানের উজানে ক্রমশ শস্যদানা শ্যামল হয়ে ওঠে নদীর দুই তীর শুধু রাতের কল্লোলে নক্ষত্রগুলো ঝরে ঝরে পড়ে … তখন রাত জাগে দিনের গভীরে তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় আলো এসে অন্ধকারে লুকোয়, তখন চাঁদকে আর চাঁদ মনে হয় না তবু তুমি চলে যাও দূরে, আমি জানি যেতে হবে,…
নিক্কণ দেবারতি দে অন্ধকারের যোনি থেকে স্তনের দিকে আমার যাত্রা – তুমি শুধু নুপুরের নিক্কণ গেঁথে রেখো প্রতিটি রোমকূপে। আমরা পেরেছি দেবারতি দে তুমি হাওয়া আমি ধুলিকণা অনন্ত কাল ধরে পরস্পরের মুখ না দেখেই একসাথে চলেছি সূর্যের অশ্বারোহণ শেষে মাটির সাথে সঙ্গম ঘটাতে কেবল আমরাই পেরেছি।