
সাদাকালো
সন্তোষ রায়
এত ছবি কেন আমার ফেসবুকে!
আবক্ষ, আপাদমস্তক ?
মাসখানেক আগে যে হেসেছিলাম তারও!
মৃত্যুচিন্তা করছিলাম বসে গম্ভীর মুখে — সেটাও!
প্রেমের সাথে ঘোরাঘুরি ফিরিয়ে দিল ফেসবুক আবার!
জানি না, জানি না কেন এত ফটোচ্ছ্বাস!
পুরনো সাইকেলটার সাথে দাঁড়িয়ে আছি — এই যেনো ফিরে এলাম গোবিন্দপুর থেকে।
সূর্য অস্ত গেল, ঘাম শুকোল না, পিপাসা মিটল না। গলা শুকিয়ে কাঠ। চাঁদের দিকের রাস্তা একদম ভাল নয়, মেঘের ফাঁকে সাঁকো নেই, আসতে যেতে ধকল বড়ো।
ওই যে নদীর পার, সেখানেও পা ঝোলানো আমার ছবি, বিকাশদা’র স্টলের মাচায় তর্ক-বিতর্কের ছবি, মান-অপমানের ছবি, মাটি কামড়ে পড়ে থাকার, বুনো শুয়োরের মতো গোঁ গোঁ চলার ছবি — এত এত ছবি উঠে আসছে কেন!
স্বজনেরা চুপ, ভালবাসা চুপ, ঘৃণা চুপ — কারো ছায়া নেই ধারেকাছে। শুধু আমিই আছি উঠোন বারান্দা বাগিচায় —আমি আমি আর আমি — কোথাও সাদাকালো, কোথাও রঙিন আমি।
যাদেরে হিপোক্রেট বলতাম, ওরাও এখন আমার প্রশংসায় মুখর, যে ফেসবুকি উঠতে-বসতে গাল পাড়ত, তার টাইমলাইনেও আমার বাল্যের মুখ।
ঠিকই বুঝেছ হে, তোমার থেকে কত শিশু ছিলাম আমি, তোমাকে বুঝতে বুঝতেই জীবন গেল।
আমি জীবনকেই ভাবতাম, জীবন যেমন ভাবে কবিতা, কবিতা ভাবে ভালবাসা।
এসবের কোনো ছবি হয় না।
মাটি ছেড়ে গেলে শেকড়ের দাগ পড়ে থাকে, দাগে দাগে ঘোরে সাইকেলের চাকা, তার রঙ চটকে যায়, জং ধরে চাকায়, তবু নিয়ে চলে আমাকে সাদাকালো বসন্ত-গ্রীষ্মে