
স্কুল ও কয়েকটি এলোমেলো ছবি
অভিজিৎ চক্রবর্তী
১
রৌদ্রভরা স্কুল,
ধানখেতের মাঝখানে,
দূরে বট, একচিলতে মাঠ, আর একটি টিপ কল–
সাদা ফিতেবাঁধা
যে মেয়েটি এলোমেলো দৌড়ে আসছে
তার সঙ্গে প্রজাপতিও পারছে না
সে আমার মা
তখনও জন্ম হয়নি আমার
২
টিলা থেকে নেমে খাল
খালের পাশে মরা গরু
জলহীন শূন্য ধু ধু
শকুন বসে আছে–
পাশ দিয়ে ছেলেরা যায়,
বগলে বই মেয়েরা
কাচা আমড়া আর নুন মাখানো দুপুর–
দূরে শ্লেট-কালো আকাশ
শকুনের গলার মত লোমহীন পথ
বিদ্যালয় বহুদূর
৩
মৃদু ঘণ্টা শোনা যায়
একটু পরেই টিফিন
সুধাবাবু দাঁড়িয়েছেন বারান্দায়
চারদিকেই খোলা
ধানখেত এসেছে ঘরের কাছে
শোনা যায় অ আ ই ঈ
দিদিমণি পড়ান
আর কোনো শব্দ নেই
ঝিঁ ঝি ডাকে
সরসর পাতার শব্দ
ঝিমধরা দিন
দুটি উদ গলা উঁচিয়ে দেখে
তাদের স্কুলে যাওয়া নেই
৪
গুনগুন শব্দ শুনি
কাউকে দেখি না
বাচ্চারা কোথায়!
নানা দার্শনিক চিন্তা আসে
ভাবি, কথারও নীরবতা আছে
নীরবতারও আছে ধ্বনি–
জানলায় তাকাই–
কয়েকটি মেয়ে উঠে গেছে মগডালে
বড়ই গাছের নিচে আরো কয়েক দল
অথচ তেমন আওয়াজ নেই–
মাঝেমাঝে শব্দ শুধু বড়ই পতনের–
বুঝি, শব্দের মাহাত্ম্য কত
বাইরে উল্লসিত রোদ
তিরতির কাঁপে
৫
ঢুকে দেখি ক্লাসে কেউ নেই
সারি সারি বেঞ্চি পাতা
দুটি পায়রা
কেবল বকম বকম
আমিও বলি বকম বকম
সাদা পৃষ্ঠা ওড়ে ঘরময়
ভাবি, পড়া শেষ করে ওরা যখন যাবে
ডালে ডালে বসবে
বাড়িতে, বাজারে, সৈকতে যাবে
কাজে লাগবে!
নাকি সব হবে নতুন
নতুন সমস্যা
আমাদের সমাধানগুলো হবে বকম বকম