রিয়েল মাদ্রিদ
ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা এসি
জানলা বন্ধ ঘরে শীত শীত ভাব
বারান্দায় ঝুলন্ত টবে অর্কিড কুঁকড়ে আছে –
এরকমই এক বাড়ি থেকে প্রেসার কুকারের সিটি শুনে
আমারও আজ সিটি দিতে ইচ্ছে হল
দু আঙুল মুখের কাছে নিলে বাতাস ফস্কে যায়।
সিটি দেওয়া? সেই কবেকার মান্ধাতার যুগে সিনেমা হলে
সিটি দিত সামনের সিট থেকে কারা যেন... কয়েকটা সিকি আধুলি
উড়ে যেত বচ্চনের গা ঘেঁষে – গোবিন্দার থাই থেকে হিল্লোলের করিশ্মা...
এ বাড়ি যথেষ্ট আধুনিক, ছিমছাম, মাপে মাপ
মাইক্রোওয়েভের ঢেউ স্থির হলে ফিনিশ বাজার-এর কুহু
সিটি দেওয়ার মত বেলেল্লাপনা নেই এ তল্লাটে
চকচকে কালো রাস্তা জুড়ে একঘর জ্বলন্ত ট্রাফিক সিগন্যাল
হাওয়া থেকে কার্বন শুষে নিতে হবে – নিতে হবে অলীক ঘাম
এমন সময়ে নাটকীয়তা এসে যায়
মোড়ের মাথায় দাঁড়ায় দু হাত খুলে
যেভাবে একটু পেছনে হেলে কয়ামৎ থেকে এসে দাঁড়াতেন শাহরুখ
তার বুকের ওপর ঝুঁকে যেত আমার নাটকের দল
রাতকানা পেঁচার মত চোখ খুলে দিনেও তারা গুনতাম।
এ এক বাড়ির দৃশ্য ছিল
অথচ দৃশ্য থেকে বারবার চলে যাই অন্য কোথাও
এই ভুলভুলাইয়ায় ঘুরে আমার মাথার ভেতরে পাক খায় –
পাক খেতে থাকে সমস্ত সিনেম্যাটিক থিওরির বাইরের যা কিছু
নাসিরুদ্দিন যাকে বেমালুম অস্বীকার করেছেন
শাবানা ও স্মিতার অন্তর্দন্দ্বে এই দৃশ্যরা নেই
ওম পুরীর কঠিন ও ভাবলেশহীন মুখের একটিও রেখা না কেঁপেই
আমাকে ব্যঙ্গ করেছে
তবুও আমি পুনে ইন্সটিউটের কাছে এসে দাঁড়িয়েছি
কান পেতে রেখেছি পাঁচিলের গায়ে
সেই বাড়িটা কেমন দেখতে ছিল এখন আর মনে নেই
এসির জল পড়েছিল গায়ে, দামী গাড়ির কাচ থেকে কেউ আমাকে দেখেও নি
ও বাড়িটা বাঁচল কী মরল, আমার কিছুই যায় আসে না
ল্যাপটপের এলসিডিতে মুখ দেখে নিই মাঝেমাঝে
ডেস্কটপে রিয়েল মাদ্রিদ, ক্লাব দি ফুতবল –
মুকুট পরে বসে আছে।
এই লেখাটা শেয়ার করুন