চেয়ার – গুলশন ঘোষ

চেয়ার – গুলশন ঘোষ

চেয়ার                 (ছোটোগল্প)

গুলশন ঘোষ

বাড়ি থেকে বার হবে তখনই টিকটিকি ডেকে উঠল। দাঁড়িয়ে পড়লেন সদাশিববাবু। একটা শালিখের চিৎকারধ্বনি তাঁর কানে এলো। শালিক পাখিটা ডানা ফুলিয়ে কিছুটা নীচু দিয়ে উড়ছে। মোটর বাইক দাঁড় করিয়ে এগিয়ে গেলেন সদাশিববাবু। গিয়ে দেখেন একটা গোখরো সাপ।
সদাশিববাবু খুব বেশি বিচলিত হলেন না। তিনি শান্ত প্রকৃতির মানুষ। ধীর স্থির তাঁর কথা বলা। চাল চলন।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে সাপটার গতিবিধি লক্ষ করে একটা লাঠি আনতে গেলেন। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেন পেয়ারা গাছের দিকে।
সাপটা তখন গাছের গোড়ায় জড়ো করা ভাঙা ইট ও টালির ভাঙা স্তূপের ভিতর হাওড়া স্টেশনে রেলগাড়ির কামরার মত ঢুকছে অবশিষ্ট লেজটুকু নিয়ে। একটু হুস-হাস শব্দ করে তাড়া দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন তিনি।
লাঠি ফেলে হাত ধুয়ে মোটর বাইকে স্টার্ট করে বেরিয়ে গেলেন কলেজের উদ্দেশ্য। তিনি নিয়মিত হাতে সময় নিয়ে বার হন। অনেকটা পথ তাঁকে পাড়ি দিতে হয় – কলেজ আসার জন্য।
কলেজে এলেন প্রায় ঠিক সময়েই। এসে অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্টারে স্বাক্ষর করলেন।
তিনি কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য ও অভ্যন্তরীণ গুণমান নিশ্চিতকরণ কক্ষের কো-অর্ডিনেটর।
অভ্যন্তরীণ গুণমান নিশ্চিতকরণ কক্ষের ভিতর গিয়ে বসলেন সদাশিববাবু। গিয়ে দেখলেন তাঁর চেয়ারে বসে কাজ করছেন সৃঞ্জয়।
সদাশিববাবুকে দেখে তিনি উঠে পড়লেন। তাঁকে তিনি বললেন যে, আমার মেশিনটা একটু ডিসস্টার্ব করছিল তাই আমি একটু কাজ করছিলাম। সৃঞ্জয় খুব আগে বেশি উদ্যমী ছিলেন না। নিজের মতোই থাকতেন। যে যা বলতেন কথা শুনতেন। কাউকে ল্যাং মারা স্বভাব কোনদিন সেভাবে তাঁর আচরণে প্রকাশ পায়নি। সে সম্মান দিয়েই কথা বলতেন। কোন কাজ করতেন। কিন্তু তাঁর আচরণে ধীরে ধীরে উদ্যমী ভাবের প্রকটতা কেউ যদি ভালো করে লক্ষ করেন তবেই বুঝতে পারবেন।

সদাশিববাবু কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি কাউকে নিয়ে। কারো নিয়ে কোন কটু মন্তব্যও করেছেন বলে কোন অভিযোগও নেই। তিনি নিরীহ, শান্ত গলায় সর্বদা স্নেহের সুর। সেই সহজাত ভঙ্গিতে মুখে হাসি নিয়ে বলেন — আরে না না বোস… কি করছিলে করে নাও।
— আমার হয়ে গেছে, এই কথা বলে ডকুমেন্টটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পেনড্রাইভে কপি করে নিলেন সৃঞ্জয়।

চেয়ারে বসেই সদাশিববাবু গল্প শুরু করলেন।
আজকের সেই সাপের গল্প।
শহরের ছেলে সৃঞ্জয়। বেড়ে ওঠা পড়াশোনা কলকাতাতেই।
সাপের কথা শুনেই চোখ বড় বড় করে বললেন — বলেন কী সদাশিববাবু!

ইতিমধ্যেই বাকি সদস্যরা এক এক করে আসতে শুরু করেছেন।
ন্যাক-এর পরিদর্শক দল আসবেন কয়েক মাসের মধ্যেই। যদিও নির্দিষ্ট ডেট দেননি তাঁরা। দিনরাত এক করে কাজ চলছে। সারা বছর ল্যাদ খেয়ে দিন যখন ফুরিয়ে আসে তখন এঁদের ঘুম ভাঙে।
এঁদের কেন প্রায় সব কলেজেই একই অবস্থা। এ যেন ছেলেবেলায় পাড়ার সরস্বতী পুজোর তোড়জোড়ের মতো, বললেন বাংলার পলাশবাবু। পুজোর বাকি ১-২ দিন। জানুয়ারি মাস পড়তেই রাস্তা আটকে চাঁদা তোলা হয়। তারপর পুজোর আগের দিন প্রতিমা আনা ও রাত জেগে নাওয়াখাওয়া ছেড়ে পুজোর মণ্ডপ সজ্জার কাজ চলছে তো চলছেই। পঞ্চমীর দিন ঠাকুরমশাই এসে যথা সময়ে হাজির। তখনও কোনও জোগাড়পাতি হয়নি। তিনি এসে ২-৪ বার তাড়া দিয়ে গেলেন। তবুও কাজ যেন শেষ হতে চায় না। অবশেষে দুপুরে একটু-আধটু অসমাপ্ত মণ্ডপেই পুজোয় বসতে বাধ্য হন ঠাকুর মশাই। তাঁর কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠল।
— ভাই ঠিকই বলেছো, অনেক কলেজের অবস্থাও তাই শোনা যায়। বললেন জিওগ্রাফির বিপ্লববাবু। ন্যাক ভিজিটের সময় যত সাজো সাজো রব। সারারাত জেগে কলেজে কাজ চলছে। মিস্ত্রি থেকে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সবাই। এমনও শোনা যায় ন্যাকের টিম এসে গেছে তখনও রং করা শেষ হয় না। সাজানোর কাজ চলে। গতবার তো শহীদ যতীন্দ্রনাথ কলেজে নতুন ফার্নিচার কিনে এনে তার স্টিকার ও পিপি মোড়ক পর্যন্ত খোলার সময় পায়নি। ন্যাক-এর টিম পৌঁছে গেছে সেমিনার রুমে।
এই সব নিয়েই নানান গল্পে জমে ওঠে কক্ষ। হাসির তরঙ্গ মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে কেউ সতর্ক হয়ে ওঠায় বলেন — ‘আস্তে এখুনি প্রিন্সিপাল স্যার চলে আসবেন।

ডকুমেন্টের হার্ড কপিতে ভরে উঠছে যক্ষপুরী। কাজ যত না হয় তার চেয়ে অকাজ বেশি। লাফিং ক্লাব বলাই ভালো। সব ডকুমেন্ট এক সঙ্গে পেলে ২-৪ দিনও লাগত না কাজ করতে। কিন্তু, এখানের কাজ যেন ‘ভন্ডুল মামার বাড়ি’ তৈরির মতো শেষ আর হয় না। এস.এস.আর-এর অলঙ্করণ বিন্যাস (format) রোজই বদলাতে থাকে। তার উপর অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হওয়ার উপক্রম। তবু কাজ শেষ করতেই হবে। দেওয়ালে যে পিঠ ঠেকে গেছে।
প্রায়দিন এমনই চলতে থাকে। অন্যকে অনেকেই মনে মনে দেখে – আড়চোখে। এ-ওর পিছনে ফিসফাস করেন। আমি সবার বড়। আমি ছাড়া হবে না কাজ, এমনই সবজান্তা ভান করে কর্মযোগীর দল।

দুই

সৃঞ্জয় একটি ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর।
বেশ ভালো। কাজের ইচ্ছা আছে তাঁর। তবে সাহসে কুলায় না। কলেজ প্রশাসককে বেশ ভয় পায়।
সে সদাশিববাবুর কাজ করা দেখে টেবিলের ওপার হতে। প্রায়দিন আসে আর দেখে। মাঝে মাঝে চশমার উপর দিয়ে তাকিয়ে দেখেন সদাশিববাবুকে। কখনও বা অন্য কোন সদস্যদের দিকে চেয়ে একটু মিটমিটিয়ে হাসে। মনে মনে ভাবে কী যে করে কে জানে। নিজের দক্ষতার কথা ভেবে ঘুরে চলে যান সৃঞ্জয়। ইচ্ছা থাকলেও সাহসে কুলায় না জোর করে কিছু সাজেশন দেওয়ার। তাঁর অসহ্য লাগে নিড়বিড়ে কাজের স্বভাবকে।
এমনি চলছে গত ছয় মাস।

ঘূর্ণন চেয়ারে বসেন সদাশিববাবু। মস্ত গোলগাল ভুঁড়ি। মনে হবে জামার ভিতরে ৬ নম্বরের ফুটবল লুকানো আছে। প্যান্টের বেল্ট ছিঁড়ে যেন তা বেরিয়ে আসছে। সেটাকে যেন বার হয়ে আসার হাত থেকে রক্ষার জন্য বেল্ট দিয়ে টেনেটুনে বেঁধে রাখা হয়েছে।
কথা কম। যেন জাপানি হাইকু। তবুও ৫২ বয়সী সদাশিববাবুর কোন বাক্‌প্রতিমায় রস গড়িয়ে পড়ে। তাঁকে বাইরে দেখে বেরসিক বলে মনে হলেও মনটা তাঁর গোপীকান্ত গোঁসাই-এর মতো সর্বদা রসে সিক্ত। গোপীকান্তের মনোরঞ্জনের জন্য কাউকে পাশে লাগত কিনা রবি ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করার সৌভাগ্য হয়নি। তবে সদাশিববাবুর মন ভেজাতে পার্বতীদের সদস্য করার বাসনায় আবার লিস্টে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলেও কান পাতলে শোনা যায়। সে রসিকতাও চলে গোপনে।
যদি বা কাজ এতদিন হত নবাগতদের আগমনে তাও লাটে ওঠার জোগাড়। কাজ যত না চলে তার চেয়ে ঢের বেশি গুলতানি। পড়াশোনা উঠেছে লাটে। চোখে মুখে ব্যস্ততার ভান। যতটা ক্লাস ডুব দেওয়া যায় ততটাই যেন জয়। লক্ষ্য ছেড়ে উপলক্ষের রকেটে চড়েছে সবাই। কেবল-ই একটা রব কাগজ চাই… কাগজ। যে যতো কাগজ কুড়াতে পারে তাদেরই জয়।
এই সুযোগে এক্সজাম ডিউটি, খাতা মূল্যায়নের কথা বলেই সব চেয়ে লম্বা তৃতীয় হাত ন্যাকের কাগজ জোগাড়ের অজুহাত দেখিয়ে পাশ কাটাতে মরিয়া তাঁরা।

একমাস দু’মাস করে টানা ছ’মাস পার হয়ে যায়। একই রুটিন চলছে। সৃঞ্জয় যেন আগের চেয়ে অনেক সাবলীল। নিজের ইউনিটের কাজ ছেড়ে মাঝে মাঝেই পুরো ইউনিটের কাজের খোঁজ নেন। কখন যেন নিজের মনে কাজের ছক জপতে জপতে নিজেই ঢুকে যান কাজে। বসে পড়েন সদাশিববাবুর পাশে চেয়ারে।
তিনি উঠে কোথাও গেলে সৃঞ্জয় এসে কম্পিউটারের সামনা সামনি রাখা ঘূর্ণন চেয়ারে বসেন। সাইড থেকে কাজ করতে অসুবিধা হয়। কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে বেশ সুবিধা।। ভাগ্যিস চেয়ারে কোন ছারপোকা নেই তাই নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকেন সৃঞ্জয়।
কাজ প্রায় শেষের দিকে। আজই ফাইনাল চেকের পর S.S.R সাবমিট করা হবে। ভালো করে চেক করছেন সৃঞ্জয়। মনে মনে ভাবছেন এই কাজ করতে এতদিন লাগল। কিছুই তো নেই।
হাসি-মজা করতে করতে বিভাগের সবার কম বেশি প্রচেষ্টা মান-অভিমান কথাকাটির মাঝেই কত ডেটাই না জোগাড় হয়ে গেছে তার তল হয়ত তলিয়ে দেখবে না কেউ। কিন্তু, ফাইনাল সাজানো ডেটা দেখে বার বার তাঁর মনে হয় এইতো কয়েকটা ইউনিট মাত্র। এ কাজ কোন ব্যাপার না। এই সব ভাবতে ভাবতে প্রতিটা এক্সসেল সিট স্ক্রল করে চলেছেন সৃঞ্জয়বাবু। শেয়ার মার্কেটের সূচকের উত্থান-পতনের মতোই তাঁর মন আজ বারবার ওঠানামা করছে।
সে চেয়ারের ওপার ছেড়ে আজ এপারে বসে। বাকি সদস্য যারা আসছেন সবাই ঘূর্ণন চেয়ারের ওদিকে। এই অনুভূতি এর আগে কখনও হয়েছে কিনা এই তার কথা অস্পষ্ট সৃঞ্জয়ের কাছে। কিন্তু, আজ যেন তা স্পষ্ট।

তিন

বাইরে আবার প্রবল নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হল। এখনও সদাশিববাবু এসে পৌঁছালেন না, তিনি মিটিং-এ আছেন।
মাঠ-ঘাট ডুবে জলে থৈ-থৈ করছে। কলেজের সামনেই ধানের জমিতে ব্যাঙাচিগুলো কিলবিল করছে।
সৃঞ্জয়ের চোখে পড়ে সেগুলো। কিন্তু কিছুতেই অসংখ্য ব্যাঙাচিকে স্পষ্ট চিহ্নিত করতে পারছেন না। জুলজির অধ্যাপক সৃঞ্জয়। তিনি জানেন একদিন এই ব্যাঙাচিগুলো লেজ খসিয়ে পুর্ণাঙ্গ ব্যাঙ হয়ে উঠবে।
এতক্ষণ পর যেন পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙের মতোই কোন ডাক শুনতে পাচ্ছে মনের ভিতর। গ্যাঁ-গো, গ্যাঁ-গো করে যেন একই কথার সুর তাঁর মনে তান ধরেছে।

সদাশিববাবু এলেন। অন্য বাকি সদস্যরাও এই বৃষ্টিভরা সন্ধ্যায় সব কাজ সমাপ্ত করলেন শেষ পর্যন্ত।

চার

সে এক যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সাজোসাজো রব। যেন বর এসে গেছে কনেকে তখনও সাজানো চলছে। বিয়ের লগ্ন যে বয়ে যায়…
যাঁরা কাজ করে তাঁরা জামা বদলানোর টাইম পান না। অথচ টিকি না দেখতে পাওয়া বাতেলাবাজ ফ্যাকাল্টি মেম্বারের দল বরযাত্রীর মতো সেজে সাত সকালে উপস্থিত। সেলফি নিতে ব্যস্ত। তাঁদের ফেসবুক লাইভ আর স্ট্যাটাস বন্যায় স্যোসাল মিডিয়ায় জড় বয়ে যাচ্ছে। নেটিজেনদের কমেন্টে্র বিনিময়ে নেকু নেকু রিপ্লাই। হাসি। তারাই তো অনুষ্ঠানের অলঙ্কার।

মখমলের লাল গালিচা পাতা। গোলাপ পাপড়ি বর্ষণ ও নৃত্যের তালে তালে রাজকীয় অভ্যর্থনা থেকে শুরু করে ‘চর্বচোষ্যলেহ্যপেয়’র মধ্য দিয়ে দু’দিনের ধুন্ধুমার কাণ্ডের সমাপ্তি ঘটল। ফলাফলের অপেক্ষা। অজানা ফল খারাপের আশঙ্কায় একে অন্যকে দোষারোপ চলতে থাকে আনাচে কানাচে। ফোনে-ফোনে। হ্যোয়াস্ট অ্যাপ গ্রুপে।

সপ্তাহ শেষে ফল প্রকাশে আবার খুশির বান ডেকে গেলো মহাসিন্ধু বিজয় কলেজে। সবাই যে যার কৃতিত্বের ক্রেডিট নিতে চায় — অন্যদের প্রশংসার কোন সুযোগ না দিয়ে। সেদিনে কারও উপস্থিতি, কারও একটু হাসি কিংবা ন্যাক পরিদর্শক সদস্যদের সামনে দু’টো কথাতেই যেন এই সফলতা এনে দিয়েছে — এমনই গৌরবগাঁথা প্রচার করে চলেন অনেকেই।
বিজয় উল্লাসের রেশ তখনও আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুলেছে। দেশ স্বাধীনের সময় এমন হয়েছিল কিনা জানা নেই। সামনে আগমনী। বাতাসে শিউলির সৌরভের সঙ্গে কাশফুলেরগুচ্ছের দোলাও হার মানে বিজয়ের উল্লাসের গুঞ্জনে।

পুজো এসে গেলো। ছুটি। বিজয়া দশমীর পর কলেজ খুলতেই জানা গেল রেসের পরাজিত ঘোড়ার মতোই বিজয়ী সেনাপতিকে যেন কারা গুলি করে দিয়েছেন। যদিও তিনি রেশে পরাজিত নয়।
ঘূর্ণন চেয়ারে বসে সৃঞ্জয়ের মুখে চওড়া হাসি। চোখ দুটি জ্বলজ্বল করছে চশমার ভিতর থেকে।

কয়েকমাস পরেই হল ভোট । রাজ্যে শাসকের বদল ঘটল। কলেজে ক্যান্টিনে চোখে চোখ পড়তেই সদাশিববাবু বেরিয়ে যাওয়ার জন্য টেবল ছেড়ে উঠে পড়লেন। বিজয়ার বিষাদে মন ভারাক্রান্ত। একঝলকের দেখায় সৃঞ্জয়ের মুখের ম্লান হাসির বেআব্রু ছবি সদাশিববাবুর বোধের স্টিকারের আটকে গেলো। কোথা থেকে একটা টিকটিকি ডেকে উঠল। আজ তবুও দাঁড়ালেন না তিনি। আপন স্বভাবেই ধীরে ধীরে বেরিয়ে যেতে যেতে তাঁর ছেলেবেলায় শোনা ঠাকুরমার মুখের গল্পের শেষ কথাটা হঠাৎ মনে পড়ে গেলো — পুনঃ মূষিক ভব।