পূর্ব বর্ধমান জেলার চার সতীপীঠ – সুদীপ ঘোষাল

পূর্ব বর্ধমান জেলার চার সতীপীঠ

সুদীপ ঘোষাল

পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে সত্যযুগে মাতা সতী নিজের বাপের বাড়িতে বাবার কাছে স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে সেখানেই দেহত্যাগ করেছিলেন। মাতা সতীর দেহত্যাগের খবর মহাদেবের কাছে পৌছতেই মহাদেব সেখানে উপস্থিত হন। সতীর মৃতদেহ দেখে ক্রোধে উন্মত্ত মহাদেব এই দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য চালু করেন। মহাদেবের তাণ্ডব নৃত্যে পৃথিবী ধ্বংসের আশঙ্কায় শ্রীবিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দ্বারা মাতা সতীর দেহ একান্নটি খণ্ডে খণ্ডিত করেন। সেই দেহখণ্ড গুলোই যে যে স্থানে পড়েছিল সেখানে একটি করে সতীপীঠ প্রতিষ্ঠা হয়। এখানে যে চার সতীপীঠের বর্ণনা করে হয়েছে সেগুলি হল বেহুলা সতীপীঠ, সতীপীঠ ক্ষীরগ্রাম, উজানি সতীপীঠ এবং অট্টহাস সতীপীঠ।

১) বেহুলা সতীপীঠ

বর্ধমানের কাটোয়া থেকে প্রায় সতেরো কিলোমিটার দূরে কেতুগ্রামে বহুলা সতীপীঠ অবস্থিত। পীঠনির্ণয়তন্ত্র মতে দেবীর বাম বাহু পড়েছিল বহুলায়। পরে রাজা চন্দ্রকেতুর নামানুসারে এই গ্রামের নাম হয় কেতুগ্রাম। সেই রকমই একটি সতীপীঠ হলো “বেহুলা” বা “বহুলা” সতীপীঠ। অন্নদামঙ্গল গ্রন্থে এটিকে আবার “বাহুলা” পীঠ বলে উল্লেখ করা আছে এবং এখানের অধিষ্ঠিত দেবীকে “বাহুলা চণ্ডিকা” বলা হয়েছে। আবার “শিবচরিত গ্রন্থ” অনুযায়ী কেতুগ্রামেরই ‘রণখণ্ড’ নামে একটি জায়গায় সতীর ‘ডান কনুই’ পড়েছে। এখানে অধিষ্ঠিত দেবীর নাম বহুলাক্ষী ও ভৈরব মহাকাল।

পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার অন্তর্ভুক্ত এই সতীপীঠ আমার জন্মস্থান বড়পুরুলিয়া গ্রামের কাছাকাছি। তাই বারবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে সতীপীঠে।
অনেক বছর আগে এই গ্রামে তিলি বংশজাত ভূপাল নামক এক রাজা বাস করতেন। সেই রাজার একটি ছেলে ছিল, তার নাম চন্দ্রকেতু। মনে করা হয় চন্দ্রকেতুর নামেই এই গ্রামের নাম হয়েছে কেতুগ্রাম। প্রাচীনত্বের বিচারে এই কেতুগ্রামের বয়স অনেক। অনেকের মতে এই কেতুগ্রামেই জন্মেছিলেন নানুরের বিশালাক্ষী-বাশুলি দেবীর উপাসক চন্ডীদাস। এই গ্রামে ছিল তাঁর আদি বাসস্থান। এই কেতুগ্রামের উত্তরদিকের একটি জায়গাকে স্থানীয় মানুষজন চন্ডীভিটা বলে সম্বোধন করে থাকে। গ্রামেই অবস্থান বহুলা মায়ের মন্দিরের। রাও পদবিধারী জমিদারেরা বহুলা দেবীর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে মনে করা হয়। বর্তমানে মন্দিরের যে সেবাইতরা রয়েছেন তারা এই রাও জমিদারদের বংশধর। এই কেতুগ্রামে “মরাঘাট মহাতীর্থ” বলে একটি জায়গা রয়েছে। অনেক ঐতিহাসিকদের মতে শিবচরিত গ্রন্থে রণখণ্ড বলে যে জায়গার উল্লেখ করা আছে সেটি আসলে কেতুগ্রামের মরাঘাট মহাতীর্থ নামক জায়গাটি। এখানেই দেবীর দেহখণ্ড পড়েছিল। এই মরাঘাটের পাশ দিয়ে ছোট নদী বয়ে গেছে। প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে মরাঘাট মহাতীর্থ অনেক বছর আগে শশ্মান ছিল। শশ্মানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর তীরে মৃত শিশুদের দেহ পোঁতা হতো। এখানে অনেক সাধক সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছেন। এখানেই রয়েছে দেবীর ভৈরব ভীরুক। তবে এটা নিয়ে মতান্তর আছে। অনেকের মতে কেতুগ্রামে বহুলা দেবীর সাথেই ভৈরব ভীরুকের অবস্থান। আবার অনেকের মতে কেতুগ্রাম থেকে একটু দূর “শ্রীখণ্ডে” আছে মায়ের আসল ভৈরব ভীরুকের লিঙ্গ ও মন্দির।

গ্রামে মায়ের যে মন্দির আছে, সেটিকে নতুন ভাবে সংস্কার করা হয়েছে। মন্দিরে দেবীর মূর্তিটিকে একটি কালো পাথরের উপর স্থাপন করা হয়েছে। দেবীর মুখ বাদে সারা শরীর সুন্দর বস্ত্র দ্বারা আবরণ করা থাকে। মায়ের মূর্তির চারটি হাত। মায়ের পাশেই রয়েছে অষ্টভুজ গণেশের মূর্তি। গণেশের এই মূর্তিটি অনেক পুরানো। মা এখানে স্বামীপুত্র নিয়ে একসাথে বাস করেন। এখানে দেবীর নিত্য পুজো করা হয়। মাকে রোজ অন্নভোগ দেওয়া হয়। মন্দিরের পাশে একটি পুকুর আছে, অনেকের বিশ্বাস এই পুকুরে অবগাহন করলে রোগ ভালো হয়ে যায়।

২) সতীপীঠ ক্ষীরগ্রাম

কাটোয়া থেকে ক্ষীরগ্রামের দূরত্ব প্রায় তেইশ কিলোমিটার। প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে এই জলাশয়ের দক্ষিণ দিকে দেবী সতীর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল। দেবীকে এখানে যোগাদ্যা রূপে পূজা করা হয়। দেবী যোগাদ্যা মায়ের স্থায়ী বাসস্থান এই জলাশয়ের নীচে। একমাত্র বৈশাখ সংক্রান্তিতে দেবীকে জল থেকে তুলে মূল মন্দিরে ভক্তদের সামনে রাখা হয়। এইদিন সবার অধিকার থাকে দেবীকে স্পর্শ করার পুজো দেবার। এই সংক্রান্তিতে সারাদিন ধরে মায়ের পুজো হয় ও গ্রামে মেলা বসে। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে এই দীঘির ঘাটে মা যুবতীর বেশ ধরে শাঁখা পড়েছিলেন। সেই উপলক্ষে ৩১শে বৈশাখ মাসের উৎসবে মাকে শাঁখা পড়ানো হয় এবং গ্রামের বধূরাও ওই দিন শাঁখা পরেন। পুজো শেষ হলে ভোরবেলা দেবীকে আবার ক্ষীরদীঘিতে রেখে আসা হয়। এছাড়াও বছরের অন্যান্য বিশেষ সময়ে দেবীকে জল থেকে তুলে মন্দিরে এনে পুজো করা হলেও ভক্তরা দেবীর দর্শন পান না। একমাত্র বৈশাখ সংক্রান্তির দিনই দেবীর দর্শন করা যায়।

পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে দেবী যোগাদ্যাকে ক্ষীরগ্রামে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বয়ং রাম। লংকায় রাম-রাবণের যুদ্ধ চলাকালীন রাবণের ছেলে মহীরাবণ রাম ও লক্ষণকে মায়াজালে আবদ্ধ করে পাতালে নিয়ে আসে বলি দেবার জন্য। এই পাতালে মহীরাবণের আরাধ্যা দেবী ছিলেন ভদ্রকালি তথা দেবী যোগাদ্যা। প্রতিদিন দেবীর সামনে নরবলি দেওয়া হতো। কিন্তু মহীরাবণের সেই উদ্দশ্য সফল হয়নি। হনুমান মহীরাবণকে পরাজিত করে রাম ও লক্ষণ কে উদ্ধার করেন। মা যোগাদ্যা রামের কাছে থাকতে এবং তার হাতে পুজো নেবার ইচ্ছে জানালে রাম দেবীকে পাতালপুরী থেকে পৃথিবীতে এনে এই ক্ষীরগ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন। এই সব বর্ণনা কবি কৃত্তিবাসের রচনায় পাওয়া গেছে। যারা ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন তাদের মতে এই ক্ষীরগ্রাম থেকে বহু প্রাচীন পুঁথি উদ্ধার হয়েছে যেখানে যোগাদ্যা বন্দনার প্রায় ৪০টি পুঁথি পাওয়া গিয়েছে।

দেবী মূর্তিটি কালো কষ্টি পাথরের। দেবীর রূপ দশভূজা ও দেবী মহিষমর্দিনী। বলা হয় প্রাচীন মূর্তি চুরি যাওয়ায় বর্ধমানের রাজা কীর্তিচন্দ দাইহাটের নবীনচন্দ্র ভাস্করকে দিয়ে দশভূজা মহিষমর্দিনীর একটি প্রস্তর প্রতিমা তৈরি করিয়েছিলেন। এই প্রতিমাটিই ক্ষীরদীঘির জলের নীচে রাখা থাকে। তবে মূল মন্দিরে কোনো প্রতিমা নেই। গর্ভগৃহে বেদী রাখা আছে, এই বেদীতেই মায়ের নিত্য পুজো করা হয়। মাকে আমিষ ভোগ প্রদান করা হয়। এই মন্দিরের একটু দূরে রয়েছে ভৈরব ক্ষীরকণ্ঠের শিব মন্দির। একসময় এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে, হারিয়ে যাওয়া মূর্তিটি নিয়ে। ক্ষীরদীঘি সংস্কারের সময় নতুন মূর্তির সাথে খোঁজ মেলে হারিয়ে যাওয়া মূর্তির। পুরনো মূর্তি ফিরে পাবার আনন্দে গ্রামবাসীরা আরও একটি মন্দির গড়ে তোলেন। এই মন্দিরেই রাখা থাকে পুরনো যোগাদ্যা মূর্তিটি। ফলত এখন গ্রামে গেলে সারাবছরই মায়ের দর্শন পাওয়া যায়। এবং বৈশাখ সংক্রান্তির সময় গ্রামের দুই মন্দিরেই সমান আরাধনা চলে।

জানা যায়, এই ক্ষীরগ্রামে একটা সময় বেশ কিছু চতুষ্পাঠী ছিল। সেই সময়ের সাক্ষী বহু প্রাচীন পুঁথি। স্থানীয় ইতিহাস নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁদের দাবি, বেশ কয়েক জন পণ্ডিত এই গ্রামে বিদ্যাচর্চা করতেন। অন্তত ৪০টি যোগাদ্যা বন্দনা পুঁথি পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। তবে জানা যায়, সবথেকে আগে যোগাদ্যা বন্দনা লিখেছিলেন কবি কৃত্তিবাস। কবির মতে, রামায়ণের কালে মহীরাবণ বধের পরে তাঁরই পূজিতা ভদ্রকালী বা যোগাদ্যাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেন রামচন্দ্র।

মন্দির থেকে অদূরে একটি টিলার উপর দেবীর ভৈরব ক্ষীরকণ্ঠ শিবের মন্দির। তাই এই গাঁয়ের নাম ক্ষীরগ্রাম, আদরের ক্ষীরগাঁ। মন্দির আর ক্ষীরদীঘি থেকে খানিকটা দূরে গ্রামের এক প্রান্তে ধামাসদীঘি। কথিত আছে, মহীরাবণকে কৌশলে বধ করে লক্ষ্মণ যখন পাতাল ত্যাগ করতে উদ্যাত হন, তখন রাবণের আরাধ্যা দেবী মহাকাল প্রভু রামচন্দ্রের সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। হনুমানের কাঁধে চেপে মহাকাল এসে ওঠেন মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে। পুরাণ মতে, সেই সময় থেকেই দেবী মহামায়া বা মহাকালী কিংবা ভদ্রকালী যোগাদ্যা হয়ে রাঢ় বঙ্গে অন্ত্যজ শ্রেণির হাতে পূজিতা হতে শুরু করেন। শাক্ত মতে এটি সতীপীঠ। দেবীর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল পড়েছিল এখানে। এখানে আলাদা কোনও কালী মূর্তি নেই। দেবীর রত্নবেদীতে কালীমন্ত্রে পুজো করা হয় দেবী যোগাদ্যাকে।

৩) উজানি সতীপীঠ

কাটোয়া থেকে উজানি সতীপীঠের দূরত্ব প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার। অজয় নদের পাড়ে এই মন্দির অবস্থিত। মূল মন্দিরটিতে প্রথমে একটি বারান্দা আছে। তার ভিতরে আয়তাকার গর্ভগৃহ। এই গর্ভগৃহের মধ্যে মা মঙ্গলচণ্ডীর ছোটো কালো পাথরের দশভূজা মূর্তি রয়েছে। প্রাচীন মূর্তিটি নব্বইয়ের দশকে চুরি হয়ে যায়। ১৯৯৪ সালে মল্লিক উপাধিধারী গ্রামের এক ধনী পরিবার বর্তমানের কষ্টিপাথরের দশভুজা মূর্তিটি নির্মাণ করে দেন। সেই থেকে এই কষ্টিপাথরের মূর্তিটির পূজা হচ্ছে। ২০০৬ সালে মন্দিরটি সারানো এবং বাড়ানো হয়েছে। মূল মন্দিরের সামনে একটি ছোট নাটমন্দির যোগ করা হয়েছে।

প্রত্যেকটি সতীপীঠ বা শক্তিপীঠে দেবী এবং ভৈরব অধিষ্ঠিত থাকে। দেবী হলেন সতীর রূপ। ভৈরব হলেন দেবীর স্বামী। উজানি সতীপীঠে দেবীর নাম মঙ্গলচণ্ডী। উঁচু কালো রঙের পাথরের একটি শিবলিঙ্গ হল দেবীর ভৈরব। ভৈরবের নাম কপিলাম্বর। অনেকে কপিলেশ্বর বলেও উল্লেখ করেন। শিবলিঙ্গের সামনে নন্দীর কালো পাথরের একটি ছোট মূর্তি আছে। শুধু তাই নয়, ভৈরবের বাঁদিকে একটি বজ্রাসন বুদ্ধমূর্তিও আছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে এই মূর্তিটি পাল যুগের। কবিকঙ্কণ চণ্ডীতে বর্ণিত ভ্রমরার দহ, মাড়গড়া, শ্রীমন্তের ডাঙা প্রভৃতি স্থানগুলি উজানিতেই। বর্তমানে সেই স্থানগুলির হদিশ পাওয়া যায় না। কথিত আছে সপত্নীপীড়িতা খুল্লনা উজানির কাছে ছাগল চরাতেন। যে স্থানে ভাত রান্না করে মাড় গালতেন সেই স্থানটি মাড়গড়া নামে পরিচিত ছিল। চণ্ডীমঙ্গলের ধনপতি দত্ত এই ভ্রমরার দহ থেকেই ডিঙায় চেপে সিংহলে বাণিজ্যে গিয়েছিলেন। আবার তাঁর পুত্র শ্রীমন্তও মঙ্গলচণ্ডীর চরণে পুজো দিয়ে সিংহলে পিতার অনুসন্ধানে যেতে ভ্রমরার দহ থেকেই সাত খানি ডিঙা ভাসিয়েছিলেন। যে স্থানে দাঁড়িয়ে সাতখানি ডিঙা দেখেছিলেন সেই স্থানটি শ্রীমন্তর ডাঙা নামে পরিচিত ছিল। সেগুলির সন্ধান বর্তমানে না পাওয়া গেলেও উজানির সতীপীঠ-কপিলাম্বর রয়েছেন স্বমহিমায়। দেবীর মূল পুজো হয় শারদীয়া দুর্গাপুজোর সময়। পুজো চলে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত। এটি সতীপীঠ হওয়ার কারণে পুজোয় আলাদা করে মূর্তি আসে না এবং নবপত্রিকা আনা হয় না। শুধু ঘট বারি আনা হয়। বছরে তিনবার ঘট বদল হয়। প্রথম ঘট আসে বৈশাখের শেষ মঙ্গলবার এবং বাৎসরিক পুজো হয়। এরপর ঘট আসে জিতাষ্টমীর পরদিন, যাকে বোধনের ঘট বলা হয়। তারপর ঘট আসে দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিন। এছাড়াও বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসের মঙ্গলবারে মঙ্গলচণ্ডীর পুজো হয়। এখানে বলিপ্রথা চালু আছে। দুর্গাপুজোর সপ্তমী এবং অষ্টমীতে চালকুমড়ো, নবমীতে চালকুমড়ো, কলা, আখ এবং ছাগ বলি হয়। মঙ্গলকাব্যের দেবদেবীরা লৌকিক ও পৌরাণিক দেবদেবীর মিশ্রণ। লৌকিক দেবদেবীদের সঙ্গে কালে কালে যুক্ত থাকে পরিপুষ্ট গভীর আবেগ, ভক্তির উচ্ছ্বাস, অন্ধবিশ্বাসের ঐকান্তিকতা। শ্রীমন্ত এই স্থান থেকে সিংহলে যাত্রা করে সিদ্ধকাম হয়েছিলেন এই বিশ্বাসের ওপর ভর করেই উজানি শক্তিপীঠের প্রতি সাধারণ মানুষের ভক্তি ও বিশ্বাস আজও অমলিন।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে এখানে সতীর বাঁ হাতের কনুই পড়েছিল। এখানে অধিষ্ঠিত দেবী মঙ্গলচণ্ডী এবং ভৈরব হলেন কপিলাম্বর বা কপিলেশ্বর। পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরার কাছে কোগ্রামে অবস্থিত এই সতীপীঠ।

বলা হয় কোগ্রামের সতীপীঠ উজানিতে মাতা সতীর বাঁ হাতের কনুই পড়েছিল। যার সাধনায় অনেক অসাধ্যকে সাধ্য হতে দেখেছেন ভারতবাসী। এদেশের হিন্দুদের তিটি ঘরে রয়েছে ঈশ্বর আরাধনার বাতাবরণ। রয়েছে সেই মহাশক্তির ছায়া। বাকি ভারতের সঙ্গে তুলনা টানলে দেখা যাবে যে এই বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনকী এখানে নাস্তিকতার আড়ালেও চলে দৈব সাধনা, পুজো-অর্চ্চনা, জপ-তপ। চলে তন্ত্রচর্চাও। যার সাহায্যে জীবনের অনেক কঠিন পরিস্থিতিকে সহজে সামলে নেন ভক্তরা।

8) অট্টহাস সতীপীঠ

এই সতীপীঠের কাহিনি আগেই প্রকাশিত হয়েছে। পড়ার জন্যে নিচের লিংকে ক্লিক করুনঃ-
https://ishankon.com/1381/অট্টহাস-সতীপীঠ-সুদীপ-ঘোষ/ভ্রমণ/