বলাই দে’র ছড়া

বলাই দে’র ছড়া

তিনিই সব

বলাই দে

তিনিই কেবল চালাক চতুর
বাদবাকি সব বোকা,
সাবালক আর প্রাজ্ঞ একাই
বাকিরা, কচি খোকা।

কূটনীতিতে হয় কুপোকাত
ঘায়েল ভীষণ ঘায়েল,
মার্গ সঙ্গীত রক্তে তাঁহার
বাঁধেন পায়ে পায়েল।

হোঁচট খেয়ে পড়তে পড়তে
সামলে নেবার চেষ্টা,
গভীর জ্ঞানের ভাণ্ডারীও
নিজেই, নিজ উপদেষ্টা!

জাহাজ যখন ডুবোডুবো
উত্তাল ঘূর্ণি জলে,
হেসে বলেন সাবমেরিন যে
ডুব সাঁতারে চলে।

কালিদাসও বোকাই ছিলেন
ডালে বসেই কাটা,
পণ্ডিত ওতো তিনিই মস্ত
এইতো জোয়ারভাটা।

কে বোঝাবে জ্ঞানী জনকে
কম যে কাণ্ডজ্ঞান,
ভক্তরা দেয় জয়ধ্বনি
তিনি করেন ধ্যান।


পরিণতি

বলাই দে

ছুটছে দেখো ভেড়ার পাল
ভ্যাঁ ভ্যাঁ ভ্যাঁ ভ্যাঁ চিৎকারে,
সামনে ছোটার ভীষণ তাড়া
আহা আহা আহারে!

ভাবটা দেখো ওইযে ওরা
উচ্ছলতায় ছুটছে খুব,
দিশাহীন আর দিগম্বর
কোথায় কী কোথায় পুব।

লড়াই ওরা চালিয়ে যায়
গোলমেলে কেবল সোর,
মন্ত্র এখন মনের ভিতর
আছে আছে খুঁটির জোর।

যাকে পায় গুঁতোয় তাকেই
কপাল জুড়ে বর্ম’টা,
মনিব বেটা চাইছে যেমন
করছে তেমন কর্ম’টা!

সোনালি ফসল এখন
থরে থরে ওই মাঠে,
ছারখার করতে হবে
শক্তি ঢেলে দাপটে।

জানে কি সে, জানে না সে
হায়রে হায় ভেড়ার দল,
ভাগাড়েই পড়বে জমা
তোদের যত কর্মফল!

তারই মাঝে

বলাই দে

মাথার উপর দাঁড়িয়ে আকাশ
বিশালত্ব নিয়ে,
ভাবনাগুলো থমকে দাঁড়ায়
সেই দিকে তাকিয়ে।

কখনও বা ঢাকছে মেঘে
মেঘের গুড়ুগুড়ু,
তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখা
সে যে কল্পতরু।

কবি, লেখক, শিল্পীরা সব
কল্পলোকে ছোটে,
প্রার্থনাতে ব্যাকুল হওয়া
প্রসন্নতাই ঠোঁটে।

গাছ-গাছালি,পাখ-পাখালি
গায় যে জয়গান,
তারই মাঝে নদীসাগর
দরদী, পাষাণ।

নীরব থেকে দিবানিশি
শেখায় কত কিযে,
তারই মাঝে সূর্যতারা
ব্যস্ত নিজে নিজে।


নেয় যে কত বাঁক

বলাই দে

জ্ঞানী হলেই হবেনা কেবল
চাইযে কাণ্ডজ্ঞান,
তবেই হবে ঠিক রসায়ন
স্বার্থক হবে ধ্যান।

জীবনভর কৃচ্ছ্বসাধন
করে কত জনে,
কোলাহল, ভীড়ের মাঝে
কেউবা চলেন বনে।

দ্বন্দ্ব আছে সব খানেতেই
জলে, অন্তরীক্ষে,
ফলটি কেমন হবে না হবে
পরিচয় সেই বৃক্ষে।

সুখের কি সংজ্ঞা যে হয়
কেমনই বা সুখ,
অন্যে সুখী হলেই বাঁচে
প্রসারিত বুক।

বোঝা টেনে টেনে জীবন
নেয় যে কত বাঁক,
ঠকিয়ে সুখী, ঠকেও সুখী
থাকরে বেঁচে থাক।