মগ্ন প্রকৃতির চেনা উঠোন
রওশন রুবী
আমাকে ধারণ করো মেঘ অনুধাবিত হই এই ভূম-লের প্রতিটি কোণে।
ধারণ করো পৃথিবী, দেখে আসি ওই অন্ধকারে যে পতঙ্গের আহার হবো
দেখে আসি শান্ত প্রকৃতির প্রতিটি শ্বাস কতো
সহজে বরণ করে ঘাত-প্রতিঘাত।
তার আগে কথা রাখা চাই এবার ফিরিয়ে দেবে।
ওই যে চোখগুলো পথ চেয়ে আছে তাদের জলটুকু ঝরবার আগে
চোখ হয়ে উঠি, জাগিয়ে দেই সুতীক্ষ্ম বোধ, অনন্য বিশ্বাসে।
যেন তারা নিটোল জলীয়বাষ্পে ঘেরা এই প্রান্তরে
দৈনন্দিন কোলাহল, কৃষকের কোটরাগত চোখের নির্লিপ্ত ঘামে
মজুরের দীপ্তকণ্ঠে, মানবতা পিষ্টকারীর পিঠে
তীব্র চাবুকের গতিতে দেখে আমাকেই।
ধারণ করো শিশির মনোরম গীত তুলি প্রখ্যাত কবিদের কবিতায়
তবু কবি বলো না, কাব্যিক সময়ের মঞ্চে তুলতে বলো না বোবা পা
দু’হাতে তুলে দিও না ফুল ভালোবাসায়,
এসব ভীত করে, দখলদারিত্ব হারায় অলক্ষ্যেই আরামের ক্ষণ।
আমি কিছু নই, কিছু হতে আসিনি। খুব সাধারণ
একটা মানুষ আমার ভেতর, সেই মানুষেরও নিয়ন্ত্রক আমি নই।
নিতান্ত মেঠো মজুরের মতো অন্ন যোগাতে রোজ পাঠশালায়।
এই হাতে প্রত্যহ প্রহারের শিকার হয় কতো কাব্যিক শব্দ
যাদের জন্য আমি চেয়েছিলাম
শৈশবের চারুপাঠ থেকেই যাযাবর জীবন,
দূর মাড়িয়ে আসা চাওয়াটা মাঝে-মধ্যে ভ্রমণ বিলাসী হয়ে উঠে
আমিও বেরিয়ে পড়ি শূন্য হাতেই, কুড়াতে প্রকৃতির সব প্রতিদান।
আমাকে কিছুতেই কাব্যিক সময়ের মঞ্চ খোলার চাবিটা দিও না,
যতনেও হারিয়ে যায় যতনের ধন,
হারিয়েছে আমারও প্রাথমিক পথ।
পেয়ে যাই তারপর নিজের দিকে তাকালে
কবিতা নয়, ‘মগ্ন প্রকৃতির চেনা উঠোন।