রহিত ঘোষালের কবিতা

ঝঞ্ঝা

রহিত ঘোষাল


স্বপ্নের গ্লাসে ঢক ঢক ঢক,
কুণ্ডলী পাকানো কালো কুকুর মেঘ হয়ে যায়
গুড় গুড় শব্দে নেমে আসে বৃষ্টি
উনুনের পাশে মুখ গুঁজে বসে থাকে মেয়ে
শরীর জ্বালিয়ে ভাত সেদ্ধ করছে সে
সঙ্গম তৃপ্ত শরীর তার, প্রেমিক তার আকণ্ঠ পান করেছে যৌবন, কোনও আন্দাজ নেই এখন কত রাত।


প্রেমিক শোনে আধা-ঘুমন্ত প্রেমিকার নিশ্বাস,
উ-হু’তে উত্তর দেয় মেয়েটি, ঘুমের অচেতন টান
সচেতন পুরুষটির থেকে দূরে নিয়ে যায়, পুরুষটির বুকে রাতের শেষ চুমু আঁকে প্রেমিকা, বাকি যৌনতা তোলা থাকে পরের দিনের জন্য, তোলা থাকে পর্যুষিত ডাল ভাত, এঁটো বাসনের উপর দাম্পত্য জীবন।


রাত বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বেড়েছে, কারেন্ট চলে গেছে, প্রেমিকা ঘুমোচ্ছে অঘোরে মশারির ভেতর, প্রেমিক উঠে বসে আছে টেবিলের পাশের চেয়ারে, বিদ্যুৎ চমক এর আওয়াজে প্রেমিকার ঘুম ভেঙে যায়, বিছানা হাতড়ে সে তার পুরুষকে খুঁজে পায় না, পিট-পিটে চোখ মেলে তাকায় সে প্রেমিকের দিকে, বড় আদুরে গলায় মেয়েটি ডেকে নেয় তাঁর মানুষটিকে নিজের বিছানায়, তখনই আদি ঝঞ্ঝার কারণে সমস্ত ভূপৃষ্ঠ আবার সমুদ্রের তলায় চলে যায় চিরতরে, সব আণুবীক্ষণিক জীব কিলবিল করে ওদের শরীর জুড়ে, পৃথিবীর প্রথম প্রাণের কণা স্রষ্টার বাণী প্রচার করে নোনতা স্বচ্ছদানা গুলিকে।


এরকম রাত প্রত্যেকের জীবনেই একবার আসা উচিত,
এই রাতেই জীবন-মৃত্যু এবং সঙ্গম চেতনা
খুব কাছাকাছি বসে থাকে
বৃষ্টির ছাঁট থেকে গা বাঁচায়। এরকমটা জীবনে কয়েকবারই হয়, খুব কম মানুষের হয়, তার থেকেও অনেক কম মানুষ তা বুঝতে পারে, বেশিরভাগ মানুষের জীবনে এরকম রাত একবারও আসে না,
তাইতো বেশিরভাগ মানুষ একবার ঘুমোলে আর ঘুম থেকে ওঠে না,
একবার ঘুমোলে আর ঘুমোনোর প্রয়োজন থাকে না।।