সন্তোষ রায়ের কবিতা

সন্তোষ রায়ের কবিতা

ট্রেন ও স্টেশন

সন্তোষ রায়

দিন আর রাত কেবল দু’টোই স্টেশন।
লোয়ার বার্থে ঘুম দিলে একঘুমে
পৌঁছে যাই গন্তব্যে,
তারপর শিস মেরে সেরে ফেলি সারাদিনের কাজ।
ভিখিরি ভাবে না কেউ।
তোমাকেই ভাবি বলে কিছু লিখি, কিছু টিপ মেরে বুঝে ফেলি ভেতরে বাদাম নেই।
স্টেশন মাস্টার জানে আমি পাগল নই।
ভিক্ষের নেশা আছে। জানু পেতে বসি–
কী জানি কী দেবে আমায়! চাই ত অনেক কিছুই — সোনালি কাবিন চাই, সোনালি ডানার চিল চাই, আরো কত কী চাই — সোনার হরিণ, সোনার তরি।
ধনরত্ন চিনেছি অনেক — স্টেশনে ঘোরাফেরা করে খুঁজি — আর কী পাই! আর কী পাই!

জিভের ডগায় নুন দিয়ে বলি, মর, নয় জীবনটাকে ঘষে ঘষে দেখ্‌ — চন্দন আছে কি না —

গন্ধর্ব

সন্তোষ রায়

যেভাবে বাঁচা যায় তার উল্টোদিকে মহারাজগঞ্জ বাজার। লোকে বলে, গোলবাজার। আমি গোলকধাঁধায় পড়ে যাই। চালবাজারে ঢুকব বলে মাছ বাজারে পা বাড়াই — দা-এর শাণে ঝলসে ওঠে মাছের পাতি। উদোম শিশুরা দৌড়য় শাণ বেয়ে — ক্ষুধার ভয় নেই ভূখণ্ডে।

মালবাজারে বসেছে রাজার আসর, জানে না কা’র রক্তে কত কোলেস্টেরল। পায়ের নিচে মাটি নেই, গগনচারী সব। আলাপে-বিলাপে স্তম্ভিত মেঘ, কত কথা গালিগালাজ কান্নাহাসির রোল।
খিদে নেই, পরাজয় নেই, মোকাবেলা টলোমলো।
অতঃপর আমার ভাবনারা রাজাকে নিয়ে যায় ঘরে।
কোথায় ঘর ! ভাঙা সিঁড়ির নিচে বাঁকা বউ, বাচ্চা দু’টো বেঘোর ঘুমে। মহারাজও শুয়ে পড়লেন সাম্রাজ্য জুড়ে।

যেভাবে যে বাঁচে সবই কবিতা হয়, কবিতারও খিদে পায়, বিয়ে হয়, মাল টেনে বাচ্চা নামায় ঘরে, গন্ধর্বসংসার বাড়ে। আমাদের নাভি ঘিরে এমন বাজার প্রতিদিন বসে। অন্ধকারে গন্ধর্ব বিকোয় ক্ষুধার দরে —