বলাই দে’র ছড়া

লোকহিত

বলাই দে

ধান ভানতে শিবের গীত
গাইলে নাকি লোকের হিত,
এটাই এখন জপের মালা
বলেই চলেন আচম্বিত!

মোদ্দা কথায় উদাহরণ
মনীষীদের করেন স্মরণ,
ব্যাখ্যা নাকি বাহুল্যতা
ব্যাখ্যার তাই নিস্প্রয়োজন!

মিলিয়ে দেবেন রাজামশাই
তিনি যে মস্ত সে সাঁই,
কথায় ফোটে ভজন সাধন
ভক্ত জনে দেন যে সাফাই।

যাদের আছে পুঁজির পাহাড়
ত্রাতা ওরাই আমজনতার,
জনপদ থাকবে ভালো
অফুরান মিলবে আহার!

নীচের জল নামছে নীচে
জনতার ঢেউ ছুটছে পিছে,
জমিজমায় খাটছে মজুর
কোথায় যাবে এই ভাবিছে!

এত ভালো রাখছে রাজায়
ইচ্ছেমতো ছকটি সাজায়,
মিছেই করা হুজ্জতিটা
কানের আগে ডঙ্কা বাজায়!


দাদুর ঋণ
বলাই দে

আপনি কেবল খেয়ে যান
বিল মেটাবে নাতি,
পেটটি পুরে খেয়েদেয়ে
ঢেঁকুর তোলেন তাঁতি।
মুখ শুদ্ধি পুরে মুখে
বেরোচ্ছিলেন নাজির,
বেয়ারাটা ট্রে সাজিয়ে
বিলটি নিয়ে হাজির।
বিলটি দেখে মেজাজটা তাঁর
চড়ে গেলো ভীষণ,
বলেন হেঁকে,”এ কি মশাই
এ কেমনতর মিশন”?
বাঁধাই বোর্ডে লেখাটুকু
পড়েন ভালো করে,
খাবেন আপনি দেবে নাতি
দেখলেন পড়ে পড়ে।
ঠিকই আছে সবই কিছু
তাইতো খেলাম বেশ,
নাতি এসে মেটাবে বিল
বাকি হবে “ক্যাশ”।
আপনি খেলেন দেবে নাতি
এমনই তো হওয়ার,
এ’টা আপনার দাদুর বিল
এইটুকুই তো কওয়ার!
দাদু খুব কমই খেতেন
চিন্তা মণি দেশের,
ভেতরে আপনি ভিন্ন
বাইরেটা দরবেশের!
দাদুর গদী সামলে এখন
বসেই আছেন নাতি,
সামান্য বিল মেটান বাবু
নাজির হোসেন তাঁতি।