বায়না (অনুগল্প)
সদানন্দ সিংহ
অরুণ তার জামাইবাবুদের গ্রামের বাজারে ব্যান্ডপার্টির লোকজনদের খোঁজ করছিল। শেষে সে খোঁজ পেল। জামাইবাবুর নাম করে বলল চারদিন পরে জামাইবাবুর মেয়ের বিয়ে হবে, তাই ব্যান্ডপার্টির বায়না করতে এসেছে। ব্যান্ডপার্টির লোকেরা খুব খুশি, ইদানীং তাদের ব্যবসাটা মন্দ যাচ্ছিল। ব্যান্ডপার্টির লোকজন আবার তার জামাইবাবুকে ভালোই চেনে তাই রাজি হয়ে গেল পনের হাজার টাকায়। বায়নার টাকা দিতে পকেটে হাত ঢুকিয়েই সুজন জিভে কামড় দিয়ে বলল, “ইস, টাকার ব্যাগটা ঘরে ফেলে এসেছি। এক কাজ করুন। জামিন হিসেবে আমার হাতঘড়িটা দিয়ে যাচ্ছি।” বলে হাতের অচল ঘড়িটা খুলতে যায়। তখনই ব্যান্ডপার্টির সর্দার বলে উঠল, “ঠিক আছে, কোন জামিন লাগবে না। আমি তো আপনার জামাইবাবুকে ভালোই চিনি।” তারপর ব্যান্ডপার্টির লোকজনদের পয়সায় চা-পরোটা পেট ভরে ফ্রী খেয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে যাবার সময় সুজন বলল, “একটা অনুরোধ করছি, জামাইবাবু পান, সুপারি, তামাক কেনার জন্য পাঁচশো টাকা দিয়েছিল, আর আমি মানিব্যাগটা ঘরে ফেলে এসেছি। আপনারা কেউ যদি আমাকে পাঁচশো টাকা ধার দেন তাহলে খুব ভাল হয়। এই টাকাটা বিয়ের দিন দিয়ে দেব।” ব্যান্ডপার্টির সর্দার তার পকেট থেকে কড়কড়ে পাঁচশো টাকার এক নোট বের করে দিল। এই নোটটা পকেটে অনেকদিন ধরে সঞ্চয় করে রেখেছিল সর্দার। টাকা পেয়ে অরুণ তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে যেতে ভাবে, এবার তো জামাইবাবুকে যা একখানা টাইট দিয়েছে জীবনেও ভুলতে পারবে না। তাকে বলে কিনা বাটপার!