পুনর্গঠন – ব্রতীন বসু

পুনর্গঠন        (অনুগল্প)

ব্রতীন বসু

হ্যালো অম্লানবাবু,আমি প্রভিডেন্ট ফান্ড ডিপার্টমেন্ট থেকে বলছি।
বলছি, বলুন।
আপনার একাউন্ট থেকে এক লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন সাত দিন আগে, সেটার ব্যাপারে ফোন করছি।
না না অতো নিইনি তো। কুড়ি হাজার নিয়েছিলাম, ছেলের কলেজে ভর্তির জন্য।
কিন্তু এখানে তো এক লাখ দেখাচ্ছে।
সর্বনাশ কি করে হয়! এখন কি করব আমি?
টেনশন এর কিছু নেই। চেক করে নিচ্ছি। বোধ হয় সিস্টেম ভুল করছে। ভুল হয়ে থাকলে আপনার সেভিংস একাউন্টে আমরা আশি হাজার রিটার্ন করে দেব। দশ মিনিট সময় দিন প্লিজ। লাইনে থাকুন। হ্যা স্যরি, আমাদের এখান থেকেই ভুল হয়েছে। তবে আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই। টাকা ক্রেডিট হয়ে যাবে। আপনার কোন ব্যাংকে একাউন্ট আছে?
পাঞ্জাব ব্যাংক।
একাউন্ট নাম্বার?
ডেবিট কার্ড নাম্বার?
সিভিভি?
এক্সপায়রি ডেট?
আচ্ছা আপনার ফোনে একটা ওটিপি গেছে। ওটা বলুন প্লিজ।
বেশিক্ষণ লাগল না। পর পর চারটে এসএমএস-এ অম্লানবাবু দেখলেন কুড়ি হাজার টাকা করে ওনার একাঊন্ট থেকে সব মিলিয়ে আশি হাজার টাকা বেরিয়ে গেছে।

থানায় যাবে বলে তড়িঘড়ি জামা প্যান্ট পরতে গিয়ে খেয়াল পড়ল আজ এক বড় পার্টি আসছে অফিসে। একটা ল্যান্ড বিল পাশ করাবার আছে। প্রমোটারি ফার্ম। উনি না থাকলে পাশের টেবিলের মিলনবাবু পুরো ক্ষীরটা লুটেপুটে নেবে।
না থানা পুলিশ করে লাভ নেই। সকালের বোকামি উনি বেলায় চালাকি করে উশুল করে নেবেন।
অমিত কম্পিউটার বন্ধ করতে করতে মাকে বলল, মা মনে আছে আমাকে স্কুলে ভর্তি করাতে যেদিন নিয়ে যাচ্ছিলে বাসে তোমার ব্যাগ থেকে আটশো টাকা পকেটমারি হয়ে গিয়েছিল?

এক মানুষের মৃত শরীরের ছাই দিয়েই নাকি অন্য মানুষের গঠন হয়। নাহলে এত নতুন মেটিরিয়াল ঈশ্বর কোথায় পাবেন?