বলাই দে’র ছড়া

যোগ্য আমি

বলাই দে

আলোচনা চলতে পারে
তথ্য তোমায় দেবোনা,
কিছু জানাই কিছু চাপাই
ওসব নিয়ে ভেবোনা।

বৃথাই চেষ্টা অবিরত
জানতে চাও হাঁড়ির হাল?
উড়ছে দেখো কামড়ে দেবে
দলদাসের পঙ্গপাল।

আমিই জানি আমিই বুঝি
হেঁসেলের এই হিসেবখানা,
কী করে যে জোটাই সাধন
এক এক করে ষোলোআনা!

আশঙ্কার মেঘ উড়ছে উড়ুক
দিগন্তে তে ঘনায় কালো,
কে আর আছে আমার মতো
এমন দক্ষ এমন ভালো?

আমিই সেরা সর্বকালের
দম্ভ যত আমায় মানায়,
আর বাকি সব চুনেপুঁটি
পূর্ণ আমি কানায় কানায়!

খেয়াল খুশি

বলাই দে

সবলের খেয়াল খুশি
দুর্বল সদাই দোষী,
এই নিয়মেই চলছে জগৎ
যেমন চলে রবি শশী।

পাড়ার কুকুর পাড়ায় তেজী
অহি’র তো গুরু বেজি,
বেপাড়ায় পথ হারিয়ে
তাড়া জোটে প্রতিরোজই।

পায়ে পায়ে নজরদারি
সবল করে হুকুম জারি,
চাপিয়ে রেখে দাবিয়ে রেখে
মজা লোটে মজা ভারী।

দুর্বল যদি গড়ায় নীচে
তারে আরও ঠেলে পিছে,
ভেঙে দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে
সবল ভাবে এগিয়েছে।

অন্যের ভারী কালো মুখ
দেখে হৃদে দাপায় সুখ,
এই যেন এক পরম পাওয়া
প্রসারিত হয় যে বুক।

ঠকিয়ে সুখ জয়ের হাসি
সুখের স্বর্গে চলে ভাসি,
দুঃখী জন তাকি‌য়ে থাকে
ঠকেও যেন খুব উদাসী।

জাগিয়ে রাখে

বলাই দে

সরু আলের পথটি ধরে
বেরোয় পথে ফেরে ঘরে,
শীত গ্রীষ্ম বারোমাস
জীবন চলে এমনি করে।

চাষের জমি আলের পাশে
কখনও বা জলে ভাসে,
কখনও বা ফেটে চৌচির
পাথর যেন খরার গ্রাসে।

সেচের জলও মেলানো ভার
আকাশ জুড়ে ঘিরলে আঁধার,
কৃষকের চোখ চমকে ওঠে
খুশি যেন ধরে না আর।

ফসল তোলার খরচ বেজায়
দাম মিলেনা কি করা যায়,
কেমন করে জীবনযাপন
আঁধার কেবল আলো কোথায়!

পাশে থাকার কথা বলে
নির্বাচনের সময় এলে,
তারপর রয় ভুলে ভুলেই
জেতার কৌশল ছলেবলে।

কিচিরমিচির সারাবেলা
গাছে ডাঙায় করে খেলা,
মনুষ্যত্ব জাগিয়ে রাখে
পাহাড়, বন আর নদীনালা।

শূন্য কলস

বলাই দে

একই অঙ্গে কত রূপ
ঝিলিক মারে,
মহামারী অতিমারি
ছোঁয়না তাঁরে।

তিনি আছেন তিনির ভাবে
আপন ধারায়,
বিজ্ঞাপনের মহানায়ক
নজর কাড়া’য়।

নদী সাগর উত্তাল ওই
জলোচ্ছ্বাসে,
নিত্য নতুন বাহার দেখি
বারো মাসে!

মাকাল ফল দেখতে ভালো
দেখছি তাই,
শূন্য কলস বেজেই চলে
হায় গোঁসাই!

প্রশংসায় ভরিয়ে দিলে
বেজায় খুশি,
বেগার বাই প্রশ্ন শুনে
উঠান ঘুষি।

ঠিক আছে সব ঠিক আছে
কোথাও নাই গণ্ডগোল,
তিনিই সেরা মৌ সাহেব
বাজায় ঢোল।