বলাই দে’র ছড়া

বলাই দে’র ছড়া

শাসক

বলাই দে

অনেক অনেক বাদশা ছিল
সারা বিশ্ব জুড়ে,
ইতিহাসের পাতায় পাতায়
পাবেই খুঁজে খুঁড়ে!

বাদশাহের আরাম আয়েশ
ছিল হারেমখানা,
চলন বলন ডগমগানো
কতনা খানসামা!

জাহাঁপনার লোক লস্কর
ছিল কতই নবাব,
হুকুমদারি তামিল করার
লোকের কী আর অভাব!

নবাব সাহেব খুব দাপুটে
মেজাজ ছিল খুব,
মৌ সাহেব ওই জমিদার সব
ভোগবিলাসে ডুব।

বাদশা নবাব রাজরাজারা
ইতিহাসেই আছে,
গণতন্ত্রের স্বৈরাচারী
তেমন করেই বাঁচে।

প্রজা বৎসল রাজা যিনি
হৃদয় জুড়ে রণ,
প্রজা পীড়ক শাসক যতই
বিতাড়িতই হন!

বেচেন্দ্রদা

বলাই দে

বেচেন্দ্রদা ব্যস্ত যে খুব
ব্যস্ততাটা নিতুই বাড়ে,
মুখে তাঁহার তত্ত্বকথা
ভিন্ন সুরটি মনের তারে।
জ্ঞানটি যেন টনটনে ভাই
নিন্দুকে কয় জ্ঞানপাপী,
কোটি লোকের নজর ফেরান
এমনি তিনি সদালাপী।
উড়ে বেড়ান পাখি যেমন
যখন যেথায় ছুটে চলে,
বাক্যবাণে হয় কুপোকাত
টিকে থাকেন ছলের বলে।
তুড়ি মেরে উড়ান ফানুস
সঙ্গী তাঁহার মুগ্ধ দোসর,
মনের কথা ফেরি করেন
ভিন্ন হৃদয় হয়না গোচর।
বেচেন্দ্রদা দেন যে বেচে
পড়ে পাওয়া জমিদারি,
বেঁচে থাকুক এ সংসারে
বালাই ষাট, বলিহারি!

পরিণতি

বলাই দে

ছুটছে দেখো ভেড়ার পাল
ভ্যাঁ ভ্যাঁ ভ্যাঁ ভ্যাঁ চিৎকারে,
সামনে ছোটার ভীষণ তাড়া
আহা আহা আহারে!

ভাবটা দেখো ওইযে ওরা
উচ্ছলতায় ছুটছে খুব,
দিশাহীন আর দিগম্বর
কোথায় কী কোথায় পুব।

লড়াই ওরা চালিয়ে যায়
গোলমেলে কেবল সোর,
মন্ত্র এখন মনের ভিতর
আছে আছে খুঁটির জোর।

যাকে পায় গুঁতোয় তাকেই
কপাল জুড়ে বর্ম’টা,
মনিব বেটা চাইছে যেমন
করছে তেমন কর্ম’টা!

সোনালি ফসল এখন
থরে থরে ওই মাঠে,
ছারখার করতে হবে
শক্তি ঢেলে দাপটে।

জানে কী সে, জানেনা সে
হায়রে হায় ভেড়ার দল,
ভাগাড়েই পড়বে জমা
তোদের যত কর্মফল!

সঞ্চয়ের আকাল

বলাই দে

সঞ্চয়টা কমেই গেছে
খরচ বাড়ার ফলে,
সেসব নিয়েই বিতর্কটা
সকাল বিকাল চলে!

নড়বড়ে নয় আগামীটা
সঞ্চয় তাই কম,
উদ্বাহুতে নৃত্য করেন
পারিষদ হরদম!

সম্পদ এখন নিম্নমুখী
বিশেষজ্ঞের ভাষায়,
নুন আনতে পান্তা ফুরায়
জল ঢেলেছে আশায়!

দুর্গম ওই পথখানি ভাই
মানতে নারাজ চাচা,
এই দেখোনা এই দেখোনা
চলছি জবর বাছা!

একদল কয় করো খরচ
আশাবাদী মানুষ,
ভিন্নমতে নিঃসম্বল
উড়ছে নিত্য হুশ!

দেশের আয় প্রায় শীর্ষে
বলেন যত অন্ধ,
চৌকিদার দেন পাহারা
রহেন অতন্দ্র!