সনজিৎ বণিকের কবিতা

সনজিৎ বণিকের কবিতা

ব্যাটারি

সনজিৎ বণিক

ব্যাটারির খয়ে যাওয়া স্পৃহা
দ্রুতগতিতে ঘড়ির কাঁটাকে পারে না জাগিয়ে দিতে,
এক সময় থেমে যায় ঘড়ি, সময় বাড়ে।
ভোরের শিশিরের শব্দেই
গতিশীলতা কমে যায়,
উবে যায় শিশিরবিন্দু সূর্যতাপে। ঘড়ির ভেতরে মরা ব্যাটারি গলে যায় মরা পোকামাকড়ের মতো, জঙ ধরে মৃতের শরীরের মতোই।
ব্যাটারি পাল্টে দিতেই টিক টিক শব্দ মান-অভিমানের মতোই বুকের ভেতর তুলে রাখে রহস্যের বাড়াবাড়ি, জেগে ওঠে সময়
ঘুম ভাঙে অ্যালার্মের নরম শব্দাবলীতে,
জেগে থাকা ও জাগিয়ে রাখার মন্ত্রগুপ্তি তোমার কানে যেতেই ভালবাসার দুচার কলি আর গান গেয়ে ওঠো হামি দিতে দিতে।
ব্যাটারির রহস্যের ভেতর প্রাণের স্পন্দন জাগিয়ে রাখার দিন চিরকাল বড়ো বেশি জরুরি।

কালোবেণী

সনজিৎ বণিক

ট্রেনের হুইসেল-এর শব্দ ছোট্ট এই পাহাড়ি ত্রিপুরায়
কালো মেয়ের চুলের বেণীর মতোই শহর ছেড়ে আধা শহর ও গ্রামের পথ মাড়িয়ে দুরন্ত ঘোড়া যেন এক লহমায় পৌঁছে দেয় ঘর        আমাদের ঠিকানায়,
মানুষ কেমন আনন্দে আত্মহারা কু ঝিক ঝিক, কু ঝিক ঝিক খেয়ালের ভেতর ঘুমিয়ে পড়ে।
একসময় ঘুম ভেঙে দেখে তার প্রেয়সী ফুলের মালায় সেজেগুজে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষায় স্বাগতমের
ভঙ্গিমায়,
ট্রেনের হুইসেল শুনলেই মন-যমুনায় ঢেউ উঠে দুরন্ত খেয়ালে।
কু ঝিক কু ঝিক কালোমেয়ের চুলের বেণী দৌড়ে যাবে পাহাড়জুড়ে অন্যপথে, শ্রাবণের মেঘরেখা বেয়ে খুঁজে নেবে বাকি দুনিয়ার নতুন দিগন্তকে।