বলাই দে’র ছড়া

বলাই দে’র ছড়া

বিকল হলে

বলাই দে

চাকা যদি হয়রে বিকল
হুংকারে কী চলে গাড়ি,
অর্থশাস্ত্র রাজনীতি নয়
এইটুকু তো বুঝতে পারি।
দেশাত্মবোধ ভিন্ন ব্যাপার
হয়তো একটু আবেগ তাড়া,
নুন আনতে পান্তা ফুরায়
কীইবা করে হতচ্ছাড়া!
রোজগার কই, কেইবা দেবে
গা খাটিয়ে উদর পূর্তি,
আকাশ তলে গাছের নীচে
তাদের আবার কিসের ফুর্তি।
বেঁচে থাকার হাজার হ্যাপা
কথাটুকু কে না জানে,
পকেটে নাই কানাকড়ি
যাবে সে কোন্ দোকানে?
দেশেই থাকো দেশেই বাঁচো
ছুঁড়ে ফেলো পুড়ে ফেলো,
নদীর জলে উদর পুরে
কর্তাবাবুর পাঁপড় বেলো।
কর্তাভজা’র এমন সুযোগ
কেনই করো হাতটি ছাড়া,
আসবে সময় শ্মশান ঘাটে
কেন বাপু দিচ্ছ তাড়া?


একটি পরামর্শ

বলাই দে

ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখো বর্তমানকে ছেড়ে,
তবেই না থাকবে বেঁচে, বাঁচবে তেড়ে তেড়ে।
নিজের ভালো, দেশের ভালো, বর্তমানকে ভুলে,
ভবিষ্যতের ভবিষ্যতে থাকো ঝুলে ঝুলে।
স্বপ্ন দেখো, স্বপ্ন দেখো, স্বপ্ন দেখো খুব,
বর্তমান তো যায়না দেখা ভবিষ্যতেই ডুব।
হোকনা ফিকে বর্তমানটা সাদা কাগজ যেন,
বর্তমানের ভাবনা নিয়ে কষ্ট পাওয়া কেন?
যেমন আছে তেমনি থাকুক বর্তমানের গতি,
বেশি বেশি ভাব ভাবনায় ভবিষ্যতের ক্ষতি।
আছো তো বেশ বর্তমানে, নাচো, নাচো, নাচো,
কালের স্রোতে আজটা যাবে, ভবিষ্যতেই বাঁচো।


বৈচিত্র্যময়

বলাই দে

একটা গাছে পেকেছে তাল
ঝরছে ধপাস ধুপ,
একটা গাছ দাঁড়িয়ে পাশে
দাঁড়িয়ে থাকে চুপ।
একটা কুকুর ছুটছে ওই
কিসের এত তাড়া,
একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ ঘেউ
দেখাই মজা দাঁড়া।
একটা কোকিল ডাকছে দেখো
ডাকছে মিহি সুরে,
একটা লোক ভেঙচি কাটে
দাঁড়িয়ে একটু দূরে।
একটা বিড়াল মিউ মিউ
হাঁটছে চুপিসারে,
বাড়ির লোক আড়াল হলে
হাঁড়ি দেবে ঝেড়ে।
একটা পাখি চুপটি মেরে
বসে গাছের ডালে,
একটা পাখি মারবে ছোঁ
রয় যে সেই তালে।
একটা লোক দিবানিশি
করে কারসাজি,
একটা লোক হেরেও সুখী
রহেন খোস মেজাজি।