খেলা খেলায় –  সদানন্দ সিংহ    

খেলা খেলায় –  সদানন্দ সিংহ    

খেলা খেলায়               (ছোটোগল্প)

সদানন্দ সিংহ

কালিচরণ জানে, খেলা হবে। রবিরাই বলেছে।
তবে এখন গ্রীষ্মকাল। এ বছর দুপুরে তীব্র গরম। তার ওপর রুজি-রোজগার নেই। বাতাস নেই। আকাশে মেঘ নেই। এখন বৃষ্টির আশাও তাই কেউই করে না। অন্তত এক টুকরো ঝড় এলেও যেন ভালো হত। কালিচরণ মুণ্ডা গাছের ছায়ায় বসে গরমে হাঁসফাঁস করে আর এসব ভাবে।

বিকেলে তাপমাত্রা একটু কমে যায়। হয়তো তখন রবিরাই আসবে। কালিচরণকে জিজ্ঞেস করবে, “খবর কী” ? কালিচরণ হয়তো আগের মতোই জবাব দেবে, “নাই খবর”। তখন হয়তো রবিরাই কিছুক্ষণ বসবে, তারপর বলবে, “আইজ যাই। কাইল আবার খবর নিমু”। পরদিন রবিরাই সকালে একবার খবর নেবে, তারপর বিকেলে আবার খবর নেবে। গত সাতদিন ধরে এই চলে আসছে।
আর এই গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে সাতদিন ধরে এভাবে খবরের জন্যে অপেক্ষা করে যাচ্ছে শধু কালিচরণ আর রবিরাই নয়, বলতে গেলে সমগ্র গ্রামবাসীই।

এ গ্রামের নাম মুংকুরুই। রবিরাই রিয়াং এ গ্রামের গাঁওপ্রধান। রবিরাইয়ের দাদু ছিল গ্রামের সর্দার। দাদুর নামেই হয়েছে গ্রামের নাম। এখানে এভাবেই গ্রামের নাম হয়ে যায়। পাহাড়ি জঙ্গলে নতুন বসতি তৈরি হয়, গ্রামের নামকরণও হয়ে যায়। কখনও আবার গ্রামের পাহাড়ি জমিগুলি জুমচাষের অনুপযুক্ত হয়ে গেলে গ্রামের লোকজন অন্য জায়গায় গিয়ে নতুন গ্রাম বসায়। তবে এখন অনেক সরকারি সাহায্য পাওয়া যায় বলে গ্রামশূন্য করে চলে যাবার প্রবণতা বেশ কমে গেছে বলা যায়।

কালিচরণ মুণ্ডা এ গ্রামের বহুদিন আগের বাসিন্দা। কালিচরণের পূর্বপুরুষরা অনেকদিন আগে ইংরেজ আমলের সময় ঝাড়খণ্ড বা পশ্চিমবঙ্গ থেকে এদিকে মানে ত্রিপুরা সহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। এসেছিল প্রধানত চা বাগানে কাজ করার জন্যে। অবশ্য সে সময় ঝাড়খণ্ড ছিল বিহারের অন্তর্গত। তারপর থেকেই কালিচরণরা এদিক ওদিক ছড়িয়ে এখানকার বাসিন্দা হয়ে গেছে। সুখেদুঃখে স্থানীয়দের সঙ্গী থেকেছে।
আর চা বাগানের কাজ চলে গেলে একসময় কালিচরণের বাবা এই মুংকুরুই গ্রামের পাহাড়ি জায়গায় এসেছিল বসবাস করতে। তখন তাদের পরিবারের লোকসংখ্যা ছিল তিনজন। মা, বাবা আর কালিচরণ। তখন কালিচরণ বয়েস কতই বা হবে, বড়জোর পাঁচ-ছয়। মা-বাবা জুমচাষ করত, সে ওদের সাহায্য করত ওইটুকু বয়সেই। লেখাপড়ার কোনো বালাই ছিল না। পরে যুবক বয়েসে সে গ্রামের পঞ্চায়েত সেক্রেটারির উদ্যোগে কোনোভাবে নাম সই করতে শিখেছে সরকারি সাহায্য পাবার আশায়।
কালিচরণের মা তার ছোটবেলাতেই মারা গিয়েছিল ম্যালেরিয়ার জ্বরে ছটফট করতে করতে। হাসপাতাল অনেক দূরে, গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যাবার মত টাকাপয়সা ছিল না। বনাজি ওষুধ খেয়েও আর কাজ হয়নি।
তারপরেও বছরের পর বছর কেটে গেছে। এখন সরকারি বনজঙ্গলে জুমচাষও প্রায় বন্ধ হবার মুখে। সরকারিবাবুরা বনজঙ্গল কেটে জুমচাষ করতে মানা করছে। অবশ্য গভীর জঙ্গলে সরকারিবাবুরা যায় না। সেখানে ইচ্ছেমতো জুমচাষ করা যায়। তবে সেখানেও অন্য সমস্যা। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেনাবাহিনির মতো ইউনিফর্ম পরে সেখানে কিছু লোক চলাফেলা করে। দেশ পারাপার করে। ওদেরকে বার্ষিক ট্যাক্স দিতে হয়। ওরা এলে ওদের জন্যে মাংস-ভাতের ব্যবস্থা করতে হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে বন্দুকের গুলি চলে। বন্দুকের গুলিই সেখানের আইন। কালিচরণ সেদিকে যায় না। খেয়ে, না খেয়ে সে তার পৈতৃক বাড়িতেই পড়ে থাকে। গাঁওপঞ্চায়েতের সরকারি একশো দিন কাজ-এর ওপর ভরসা করে সে এবং গ্রামের লোকেরা আধপেট খেয়ে আশায় আশায় দিনযাপন করে যায়।

আজ ইদানীং অনেকদিন যাবৎ কাজ নেই গাঁওসভায়। গ্রামের লোকেরা রবিরাইকে চাপ দেয়। রবিরাই বিডিও আফিসে বারবার ধর্ণা দেয়। বিডিও অফিস থেকে একই কথা বারবার জানানো হয়, সরকারি টাকা এখনো আসেনি, এলেই কাজ শুরু হবে। এই আশ্বাস পাহাড়ি গ্রামের অভুক্ত মানুষগুলোকে আরো ক্ষেপিয়ে তোলে। আবশেষে অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে রবিরাই এবং গ্রামের লোকের মিলে এক বুদ্ধি বের করে। আর সেই বুদ্ধি প্রয়োগ করার জন্যেই ওরা সবাই মিলে এক খবরের অপেক্ষা করতে থাকে।

অষ্টম দিন ভোরবেলাতেই রবিরাই এসে হাজির। কালিচরণ তখনো মেঝেতে এক ছেঁড়া চাদরের ওপর ঘুমোচ্ছে। রবিরাই কালিচরণের ঘরের বাঁশের দরজার হাত দিয়ে ঠকঠক আঘাত করতে করতে ডাক দেয়, “হেই কালিচরণ, কী খবর আইজ” ?
কালিচরণ তখন স্বপ্নে দেখছে সে আর তার বাবা জুমের মাটি তৈরি করছে। এইসময় গাঁওপ্রধানের ডাক শুনে সে ধড়মড় করে উঠে পড়ে। দরজা খুলে সে বলে, “ভেতরে আইয়েন। একটু দেইখা যান অবস্তা ক্যামন”।
রবিরাই ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। কালিচরণ রবিরাইকে ঘরের বেড়ার পার্টিশনের অন্য প্রান্তে নিয়ে যায়। সেখানে কালিচরণের বাপ আছে স্থির হয়ে শুয়ে। শরীরে এক ফোঁটা মাংসও নেই যেন, চামড়ায় ঢাকা এক কঙ্কাল। বৃদ্ধ এবং মাস দুয়েক অসুস্থ। কালিচরণ বাপকে জেলার হাসপাতালেও নিয়ে গেছিল একদিন। হাসপাতালের ডাক্তার বলেছেন কিডনি কাজ করছে না, বাঁচার আশা নেই। তাই কালিচরণ বাপকে হাসপাতাল থেকে ফেরত নিয়ে এসেছিল। আজ সাতদিন ধরে কথা বন্ধ হয়ে আছে, একটু একটু নিশ্বাস নিচ্ছে, তবে ডাকলেও সাড়া দিচ্ছে না। তার আগেই খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
রবিরাই কালিচরণের বাপকে ভালো করে দেখে বলে, “মনে হইতাছে আর নাই। শ্বাস বন্ধ হইয়া গ্যাছে”।
কালিচরণ তার বাপকে স্থির হয়ে দেখে। দেখতে দেখতে তার চোখ জলে ভরে উঠে। তারপর সে তার বাপকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে য়ার বলতে থাকে, তুমিও আমারে ছাইড়া গেলা বাপ, আমার যে অহন কেউ নাই রে বাপ, আমার যে অহন……”
রবিরাই সান্ত্বনা দেয়, দুঃখু কইরা লাভ নাই রে। আমরাও যামু একদিন। অহন উঠ। নিজেরে সামলাইয়া নে। আমি যাই। গেরামের সবাই রে খবর দিতাছি তোর ইখানে জড়ো হওয়ার লাইগা। তারপর আমি বিডিও অফিসে যামু।
রবিরাই কালিচরণের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। সরু পাহাড়ি পথে যেতে যেতে পথের পাশের গ্রামের বাড়িগুলির লোকদের খবর দিতে থাকে, কালিচরণের বাড়িতে জড়ো হওয়ার জন্যে। গ্রামের বাকি লোকজনেরা একে অপরের কাছ থেকে খবরটা পেয়ে যায়। আস্তে আস্তে গ্রামের লোকজন কালিচরণের বাড়িতে জড়ো হতে থাকে।
রবিরাই প্রথমে তার নিজের বাড়িতে যায়। জামাকাপড় পালটে সে টিলার নিচের পুকুরে বারবার ডুব দিয়ে স্নানটা সেরে নেয়। তারপর ঘরে গিয়ে ইস্তিরি দেয়া জামা-প্যান্ট পরে বিডিও অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হবার সময় নিজের কাছেই বিড়বিড় করে বলে, এবার খেলা হবে।

বিডিও সাহেব কোনোখানে না গেলে সকাল সাড়ে ন’টার আগেই সাধারণত অফিসে ঢুকে যান। তাই রবিরাই সকাল দশটার একটু আগে যখন বিডিও অফিসে পৌঁছে যায় তখন বিডিও সাহেব তাঁর চেম্বারেই। রবিরাই সেই চেম্বারে ঢুকতেই সাহেব বলে উঠেন, কী ব্যাপার প্রধানবাবু, আজ এত সকালেই উপস্থিত দেখছি। বসুন।
রবিরাই চেয়ারে বসতে বসতে বলে, আর কইবেন না স্যার। গেরামে গণ্ডগোল।
বিডিও সাহেব অবাক, গণ্ডগোল ? কীসের গণ্ডগোল ?
রবিরাই চোখ বড় বড় করে বলে, গেরামের লোকেরা একটা ডেডবডি আটকাইয়া রাইখা দিছে।
বিডিও সাহেব আরো অবাক, ডেডবডি ? খুন নাকি ?
রবিরাই মুচকি হাসে, না না, বয়স্ক লোক। কিডনি খারাপ। অনেকদিন ধইরা অসুস্থ। আইজ মারা গেছেন।
— তাহলে আবার সমস্যা কীসের ?
রবিরাই এবার আসল কথাটা খুলে বলে, স্যার, গেরামের লোকেরা কইতাছে, আইজ থাইকা যদি রেগা-র কাজ শুরু না হয় তাহইলে তারা ডেডবডি আটকাইয়া রাইখা দিব, সৎকার করা যাইব না।
— অ্যাঁ, বলেন কি ! রেগা-র ফান্ড না এলে কীভাবে কাজ শুরু হবে ?
— হ স্যার, আমি জানি। তবে গেরামের লোকেরা বুঝতে চাইতাছে না। স্যার আপনে একটু চলেন। গেরামের লোকদের একটু বুঝাইয়া কন।
বিডিও সাহেব ব্যাপারটা নিয়ে একটু চিন্তান্বিত। এ রকম প্রতিবাদ ভূ-ভারতে আর কোথাও হয়নি। অবস্থা আরো জটিল হয়ে উঠলে তো বিডিও-কেই আগে জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং বিডিও সাহেব রবিরাই প্রধান এবং পঞ্চায়েত সেক্রেটারিকে নিয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে অফিসের জীপগাড়িতে রওনা হন।

চোখের সামনে ঘটে যাওয়া কোনো কিছুই চাপা থাকে না। মুংকুরুই গ্রামের এই ঘটনার কথা মিডিয়ার কাছে সহজেই পৌঁছে যায়। আর মিডিয়ার লোকেরাও ক্যামেরা নিয়ে স্কুটার মোটরসাইকেল গাড়ি করে বিডিও-র গাড়ির পিছু পিছু রওনা হতে থাকে।

গ্রামের ভেতর কালিচরণের বাড়ি ঘিরে বসে রয়েছে গ্রামবাসীরা। বাড়ির ভেতর কাউকেই ঢুকতে দিচ্ছে না। বিডিও সাহেব পৌঁছে গেছেন। গ্রামবাসীরা তাদের দাবীতে অনড়, আজ থেকেই রেগা-র কাজ শুরু করতে হবে। দাবি মানলেই কেবল মৃতদেহের সৎকার করা যাবে। নইলে না।
এই কড়া রোদের মাঝখানে মিডিয়ার লোকেরাও একে একে পৌঁছে যাচ্ছে। পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই এরা ক্যামেরা খুলে রেকর্ডিং বা লাইভ টেলিকাস্ট শুরু করে দিয়েছে।
রবিরাই একজন পাক্কা লোকের মতো একবার গ্রামবাসীদের কাছে যাচ্ছে, আরেকবার বিডিও সাহেবের কাছে গিয়ে দাবার চাল দিয়ে চলেছে। এদিকে দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। একসময় উপায়বিহীন হয়ে সাহেব অফিসের ক্যাশিয়ারের কাছে ফোনে জানতে চাইলেন স্পেশাল ফান্ডে কত টাকা আছে এবং তা থেকে এখন কত খরচ করা যাবে। তারপর টাকার অঙ্ক জেনে বিডিও সাহেব রবিরাইকে ডেকে বললেন, শুনুন প্রধানবাবু, স্পেশাল ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে আমি একদিনের কাজ দিতে পারব। আপনি ব্যাপারটা একটু ম্যানেজ করুন।
রবিরাই জানে, ম্যানেজ তার হাতের মধ্যেই। তাই সে সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দেয়, স্যার, এই বছরে অহনও গেরামের লোকেরা কাজ পায় নাই, খুউব কষ্টর মইধ্যে আছে। এক দিনের কাজে কেউ মানব না। স্যার, এক লগে পাঁচদিনের কাজ দ্যান, আমি এদের মানাইয়া নিমু।
বিডিও সাহেব চিন্তা করতে থাকেন, কী করা যায় এখন। অবশেষে সাহেব এলাকার শাসক দলের এম.এল.এ.-কে ফোন করে ব্যাপারটা সবিস্তারে বলেন। এম.এল.এ. তাড়াতাড়ি জবাব দেন, সামনে ভোট, আর যাতে অবস্থার অবনতি না হয় তা দেখতে হবে। আরো স্পেশাল ফান্ডের ব্যবস্থা তিনি করে দেবেন তাই পাঁচদিনের কাজের ব্যবস্থা যেন করা হয়, হোক না গ্রামের লোকেরা বিরোধী পার্টির।
আরো স্পেশাল ফান্ডের আশ্বাস পেয়ে বিডিও সাহেব গ্রামের লোকদের জন্যে পাঁচদিন রেগা-র কাজের ঘোষণা করেন শেষে। অবরোধ প্রত্যাহত হয়। গ্রামের লোকেরা আনন্দে চিৎকার করে ওঠে। কিন্তু সমস্যা বাধে আজকের কাজ নিয়ে। কারণ ইতিমধ্যেই দুপুর গড়িয়ে গেছে, কখন থেকে কী কাজ শুরু হবে সেক্রেটারিবাবু বলতে পারছেন না।
তাতে রবিরাই সমস্যার সমাধান হিসেবে বলে, স্যার, আইজ-কের রেগার কাজটা হউক মৃতের সৎকার দিয়ে।
কিন্তু কিন্তু করেও বিডিও সাহেব ব্যাপারটা মেনে নেন শেষে। কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামের লোকেরা মৃতদেহ নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে এক মিছিলের মাধ্যমে। এই গ্রামেরই কিছু লোক এক ব্যান্ডপার্টি খুলেছিল। তারা শ্মশানযাত্রায় ব্যান্ড নিয়ে এসে তা বাজিয়ে অংশগ্রহণ করে ফেলে।

মিছিল এগোচ্ছে। ব্যান্ডও বাজছে, কিন্তু ব্যান্ডের সুরটা করুণ নয়। ব্যান্ডপার্টির লোকেরা বিয়ে-অন্নপ্রাশনের মতো অনুষ্ঠানেই ব্যান্ড বাজায়, ফলে এদের হিন্দি সিনেমার সুরই ভালো জানা ছিল। আর তাই ওরা মিছিলে দেশাত্মবোধক গান “সারে জঁহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা” বাজিয়ে চলছে।
কালিচরণ চলছে শ্মশান-মিছিলের অনেক পিছে, কেউ তার তেমন খোঁজও রাখছে না। বিডিও সাহেবরা চলে গেছেন ইতিমধ্যেই। মিডিয়ার লোকেরা যায়নি। তারাও ক্যামেরা নিয়ে মিছিলের পিছু পিছু চলেছে। কালিচরণের পাশে মিডিয়ার একজন লোক ক্যামেরার সামনে বলে চলেছে, এ মিছিল বিজয়ের মিছিল। এ মিছিল অভুক্ত লোকদের মিছিল। মনে হচ্ছে এ শ্মশানযাত্রা নয়। মনে হচ্ছে এ যেন স্বর্গযাত্রা ……। কালিচরণের কানে আর কথাগুলি ঢোকে না। সেই ছোটবেলা থেকে স্বর্গরাজ্যের কথা সে শুনে এসেছে। তার বাপ কি সেই স্বর্গরাজ্যে যাচ্ছে ? কালিচরণ ঠিক জানে না। তাই সে হঠাৎ মিডিয়ার কমেট্রি করা সেই লোকটির সামনে গিয়ে বলে ওঠে, আইছা দাদা, স্বর্গরাজ্যটা কোন্ দিকে আমারে একটু দেখাইয়া দিবেন ?