বলাই দে’র ছড়া

বলাই দে’র ছড়া

চোখের মণি

বলাই দে

সব তথ্যই পৌঁছে যায়
মন্ত্রবলে,
এই ভাবেই বাড়ে ফসল
সুকৌশলে।

দাদাই বড় শুভাকাঙ্ক্ষী
প্রাণের সখা,
টপাটপ ভাঙছি সিঁড়ি
শুধুই একা!

পিছনে রয় পড়ে রয়
বাকিরা সব,
ঝড়ের বেগে ছুটছে ঘোড়া
আজকে পরব!

সবই কেমন হাতের মুঠোয়
দেয় যে ধরা,
সাদামাটাই ছিলাম বটে
হতচ্ছাড়া!

আজকে এই জগৎ খানা
আকাশ ছুঁয়ে,
সবই কিছু সামনে আমার
পড়ছে নুয়ে!

ক্ষমতার পাঁকে পাঁকে
লেপ্টে গেছি,
আমি ‘দানি’ চোখের মণি
হয়েই বাঁচি!


গণতন্ত্র

বলাই দে

শাসন চলে শোষণ চলে
বেড়েই চলে শঙ্কা,
বেজেই চলে বেজেই চলে
গণতন্ত্রের ডঙ্কা।
জিগির তুলে গণতন্ত্রের
চলছে ‘দশের’ রাজত্ব,
‘নব্বই’ চলে আঁধার রাতে
এইতো মূলতত্ত্ব।
কৃষক খাটে ফলায় ফসল
ফেরেনা তার ভাগ্য,
পুঁজি খাটে দেশ-বিদেশের
তাদের পক্ষেই যজ্ঞ।
নতুন কলে পুঁজি ঢেলে
মজুর খাটে হাজারে,
মুনাফা তো বেড়েই চলে
গণতন্ত্রের বাজারে।
রোগ শোক লেগেই থাকে
সঙ্গে চলে অপুষ্টি,
এ’সব নাকি নিয়মের ফল
ভগবানের কুদৃষ্টি!
ঠুকেই চলে কপাল খানা
মন্দির আর মসজিদে,
চোখের জলের জীবনধারা
বেড়েই চলে নিভৃতে।

রবীন্দ্রনাথ

বলাই দে

যখন আমি জন্মেছিলাম,
   তখন তুমি অনেক দূরে,
তোমার ছবি সামনে রেখে
   মেতেছি যে গানেসুরে।
একটু যখন হলাম বড়,
   স্কুলে পড়ি কাব‍্যগীতি,
কিছু বুঝে, না বুঝেও,
   মাতায় তোমার জন্মতিথি।
আরো একটু বড় হলে
   ঘুরতে যাওয়া জোড়াসাঁকো,
আমার মতোই ছোট্ট তুমি,
   গল্প কাব্যে ছবি আঁকো।
আরো একটু বড় হলে,
   আরো একটু অবাক হলাম,
ধন্য আমি, আমিও যে
‌‌   এই ভাষাতেই জন্ম নিলাম।
তোমায় দেখি অবাক চোখে,
   বিস্ময়েরও নাই যে সীমা,
জগৎসভায় আসন তোমার
   বেড়েই চলে ঐ গরিমা।