বলাই দে’র ছড়া

মেঘের খেলা

বলাই দে

বর্ষা নাকি শরৎকাল
পড়েছি যে ধন্দে,
মেঘগুলো সব পেঁজা তুলো
ওড়ে শরৎ ছন্দে।

যেখানটাতে থমকে ছিল
গরমটা কালকে,
এগিয়ে নিয়ে যায় যে বয়ে
গরমের সেই তালকে।

ভাবি বটে তাদের কথা
আছে যারা মাঠে ঘাটে,
তেজবাহাদুর সূর্য ব্যাটা
বিষম দাপট এ তল্লাটে।

মাঠ শুকনো,খাল শুকনো,
নদীর জলে টান,
চাতক ব্যাকুল,উদাস দুপুর,
ওষ্ঠাগত প্রাণ।

মেঘ উড়ে যায় রাজার বাড়ি,
নাই যে ঝরার তাড়া,
দগ্ধ দিনে, দগ্ধ রাতে,
সবাই দিশেহারা।

যাওনা উড়ে

বলাই দে

সহজ জীবন করো জটিল
মিছেই কেন?
সহজিয়ায় যাওনা ভেসে
পানসি যেন!

তুচ্ছ কথায় অহর্নিশি
গুমোটে ভাব,
সবই আছে হাতের মুঠোয়
কিসের অভাব?

সময় দেখো যায় ফুরিয়ে
থমকে না রয়,
কেবলই হিসেব কেবল
জয় পরাজয়।

পিছনে কতই কথা
দিয়োনা কান,
এগিয়ে চলো এগিয়ে চলো
হও আগুয়ান।

মনের ভিতর যে সুর আছে
রাগরাগিনী,
নিজেকে জানায় মাতো
জীবনবাণী!

ভেবে ভেবেই নাকাল হবে
মিছেমিছি,
পাখি হয়ে যাওনা উড়ে
কিচিমিচি!

ছন্দে লয়ে

বলাই দে

কেউ কি আছো
অন্যে বাঁচাও নিজেও বাঁচো,
হাতটা ধরো
অন্যে নাচাও নিজেও নাচো!

ওইযে পাখি
ডানার জোরে উড়ছে না কী?
তারই মতো সহজিয়ায়
করোই নাহয় ডাকাডাকি।

ক’জন জেতে
চলার পথে রয় যে মেতে,
খোশমেজাজি
হারজিতের এই বানিজ্য’তে!

সুরেলা সুর
ওই শোনা যায় নয় বহুদূর,
ঘণ্টা বাজে মন্দিরেতে
আযান ধ্বনি কী যে মধুর!

গান গেয়ে যায়
জীবনপুরের পথিক এথায়,
ওই দেখোনা নাই সে যেন
চাওয়া পাওয়ার ঝুটঝামেলায়।

হিসেবের বেড়াজালে
সকাল সন্ধ্যা বা বিকালে,
কখনও হ্যাঁ কখনও না
চলেছে সে লয়ে ছন্দে তালেতালে!

এই ভুবনে

বলাই দে

মন খারাপের কারণ খুঁজি
খুঁজে ফিরি প্রতিরোজই,
এগিয়ে গিয়ে অনেকটা পথ
খেই হারালাম এই বুঝি!

কখন যে হই উচ্ছ্বসিত
উল্লাসে হই সমবেত,
তখনও পাইনা কারণ
চড়াই উৎরাই অবিরত।

আকাশ ঢাকে কালো মেঘে
ঝড় যে ওঠে ভীষণ বেগে,
ইশান,বায়ু, অগ্নি,নৈঋত
একযোগে সব আসে রেগে!

পুবের আকাশ হয়েছে লাল
এইতো আসে নতুন সকাল,
আশা কুঁড়ি থোকায় থোকায়
হাওয়ায় যেন উড়ানো পাল।

পাখি গাহে মধুর মধুর
নিয়ে চলে দূর থেকে দূর,
আলো কেবল আলোর দ্যুতি
জীবন যেন এক কোহিনুর!

মনের ভিতর ভুবন গড়ি
আপদকালে ঢুকেই পড়ি,
সেই ভুবনে সেই ভবনে
ভিড়াই তরি ভিড়াই তরি!