বলাই দের ছড়া

বলাই দের ছড়া

থামাও কথা

বলাই দে

বুঝি না বাপু রকম সকম
করছো কেবল বকম বকম,
বাক্যবাণে ঝাঁঝরা এ বুক
ভীষণ বিষম জখম।

ইচ্ছে ছিলো সুরে শুনি
তুমি নাকি মস্ত গুণী,
ভক্তজনে পেটায় ঢেঁড়া-
যেথায় খুশি জ্বালায় ধুনি।

আলাপনেই বাড়লো বেলা
কখন শুরু করবে খেলা?
অপেক্ষাতে ধরেছে ঘুন
কখনই বা জমবে মেলা?

আকাশ ঝিমায়, ঝিমায় বাতাস,
ঝাপটা মারে কেবল “হতাশ”
পলেস্তারা পড়ছে খুলে
হায়রে হায় কী উপহাস!

কথায় লাগাও দাড়ি, কমা,
ভাল্লাগেনা আর উপমা,
অনেক হলো স্তোকবাক্য-
থামাও কথা, চাই যে ক্ষমা।

আমি-১

বলাই দে

প্রতিবেশী ভালো আছে
সে সুখ আমার সয় না,
উচাটন মন যে আমার
মনের ভিতর রয় না!

কালো মেঘের ঘনঘটায়
উজ্জ্বল এই মুখটা,
মনের মতো খোরাক পেয়ে
সদাই নাচে বুকটা!

এইতো আমার জীবন বিলাস
অনিত্যতে নিত্য,
ঘরে বসেই পেয়ে যে যাই
জীবন পুরের তীর্থ!

কান মন্ত্রে উসকে দিলাম
বেড়েই চলে দ্বন্দ্ব,
তাতা থৈয়া তাতা থৈয়া
দারুণ চলার ছন্দ!

খারাপ দিকটাই তুলে ধরি
আমার প্রচার তথ্যে,
ভালো দিকটা লুকিয়ে রাখি
কালকুঠুরির গর্তে!

এই ভাবেতেই জীবন যাপন
বুঝলেন বাবু কর্তা,
আগাছা সব আগলে রাখি
আমি সমাহত্তা!

আমি-২

বলাই দে

আপন স্বার্থ সুরক্ষিত
তাইতো আমি মৌন,
অনেক ভাবা ভাবনাটা
আমার কাছে গৌণ।

অন্যের কোনও ব্যাপারে
নাকটি আমি গলাইনা,
নিজের বিপদ ছাড়া কভুও
দৌড়ে ছুটে পালাইনা!

নাকের ডগার বাইরে আমার
নাকের ডগায় জগৎটাই,
তাইতো আমি সবার প্রিয়
মিত্র ছাড়া শত্রু নাই!

যদিও বা ভিড়ের মাঝে
আটকে পড়ি কখনও,
যেদিকটাতে হাওয়ার গতি
তারই সাথে তখনও।

বিচার যদি করতে বলো
খুবই আমি দক্ষ,
যাদের জমি শক্তপোক্ত
লই যে তাদের পক্ষ!

এইভাবে তে দিন যে ফুরায়
সকাল বিকাল সন্ধ্যা,
বুকে বহে হালকা বাতাস
চোখে নামে তন্দ্রা!

ছদ্মমেঘ

বলাই দে

ছদ্মমেঘের আনাগোনা
তোকে নিয়েই স্বপ্ন বোনা,
বেরিয়ে তুই আয়-
আয় আয় বৃষ্টি সোনা।

মাথার উপর মেঘের পাহাড়
গুমোট গুমোট এই চারিধার,
জ্বলেপুড়ে হয়েছে খাক-
আয় তো বেরিয়ে এবার!

খালবিল নদীনালা
তাদের বুকেও দারুণ জ্বালা,
আয় আয় আয়না নেমে –
তোর বিরহে মুখটা কালা!

ওদিকে তো অনেক দিলি
সমান ভাগে করনা বিলি,
নজর ঘোরাও,ঘোরাও নজর-
নজর কেন ঘুরিয়ে নিলি?

তোর প্রতীক্ষায় থেকে থেকে
ক্লান্ত শ্রান্ত ডেকে ডেকে,
কড় কড় কড় আচম্বিতে-
স্বপ্ন কেবল যাই যে এঁকে।

মাঠঘাট আর প্রান্তরটা
চৈত্র দিনের ফাটাফাটা,
একবার তো সিক্ত করে-
সরল করো সমস্যাটা!