
সময়ের দাঁড়
গুলশন ঘোষ
রূপকথা হয়ে উড়ন্ত কল্পনার নীড় বুনছিল
তোমার কথার পাখনা
হয়তো এখন আগের মত আর
কোন কথা বিশ্বাস করতে পারি না কারো
কিন্তু, থর থর বাক্প্রতিমায় সেদিন অবিশ্বাসের
ভরসা পাইনি—পারদের মতোই তা ছিল ভারি আর নিরেট
জীবনসংগ্রাম, লেখাপড়া, কণ্ঠ-আরতি, প্রতিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ
সবই যেন মনে হয়েছিল একই ছাদের আধারে
হাজার গুণের কুঠুরি – কপালে ত্ৰিপুণ্ড্ৰ টানা।
খুব ইচ্ছে হতো তোমার গাওয়া
রবীন্দ্র-সংগীতের আওয়াজে
ঘুম ভাঙাতে।
কিন্তু, কয়েক দিনেই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হল
ভৈরবী নিনাদ।
ধীরে ধীরে – টেনশন, ব্যবস্থা—
সব কিছুই নেমে আসে বিষাদ সন্ধ্যার মতো
যত স্বপ্ন-ইচ্ছার টুঁটি টিপে ধরল
ব্যস্ততার জঠোর জ্বালা
আর, রূঢ় বাস্তবের ঘেমো জামা।
ভিড় বাসের ধকল
রিক্ত সময়ের কষায় ভাবের দ্রুত ধেয়ে আসা—
সবই যেন সময়ের দেওয়ালে পাঁজি আঁকা
নিত্যতার ভাঁজে বোনা ধুন।
তবু অস্তাপারের রাগিনীর সুরে
সময়ের দাঁড়ে বেঁচে থাকা।