উপলব্ধি – সুদীপ ঘোষাল

উপলব্ধি – সুদীপ ঘোষাল

উপলব্ধি

সুদীপ ঘোষাল

অতি সূক্ষ্ম তরঙ্গের স্পন্দন শোনার অপেক্ষায় মৌন হয়ে অপরূপ প্রকৃতির, কোলে আশ্রয় নিতে চাই। চাওয়া, পাওয়ার উর্ধ্ব জগতে ভাসতে ভাসতে ছাই হোক নশ্বর দেহের অহংকার।
স্থূল পদার্থ নিয়ে পরমাণু বিজ্ঞানীরা অপেক্ষায় থাকেন না। অণু পরমাণু নিয়েই তাঁরা ব্যস্ত। তা না হলে হিমালয়ের চূড়া কিংবা জমি জায়গা নিয়েই তারা টানাটানি করতেন বেশি।
আকাশকে আমরা পৃথিবীর মানুষ, স্বার্থপরের মত খণ্ড খণ্ড করেছি। এটা কাটোয়ার আকাশ, ওটা দিল্লির, ওটা রাশিয়ার আকাশ। অখণ্ডতার বাণী আমরা ভুলে যাই। আকাশ চিরদিন অখণ্ডই থাকে। তাকে খণ্ডিত করার অকারণ অপচেষ্টা না করাই ভালো। তবু কাঁটাতার হয়, সীমানা ভাগ হয়। অদ্ভুত মূর্খতার অন্ধকারে ডুবে আছে প্রাণীকুল।
আলোর অন্তরে বাদ্য বাজে, ‘অনন্ত নাদ’ এর ভেরী। সূক্ষ্ম তরঙ্গে মিশে যায় তার অস্তিত্ব, ভুলে যায় তার অবস্থান। এ অনুভূতি ঝরনার মত, কবিতার মত, ভালোবাসার মত, নদীর প্রবাহের মত। জোর করে সে গতি পাল্টায় না।
সৃষ্টির সবাই ভয়ে কাজ করি। অস্তিত্ব বিনাশের ভয়ে। পৃথিবী ঘোরে ভয়ে, তা না হলে সে ধ্বংস হবে। সূর্য তাপ দেয় ভয়ে, তা না হলে তার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
সৃষ্টি মানুষের প্রশ্বাস, স্থিতি মানুষের ক্ষণিক ধারণ, প্রলয় মানুষের নিশ্বাস।
আলোর অনুসন্ধানীর ভয় নেই, তাই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই নেই। লোভ নেই, তাই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা নেই। অকাল বার্ধক্য নেই।
আছে শুধু আনন্দ, ছেলেমানুষি, বোকামি, সরলতা, সোজা পথে হাঁটার সোজা রাস্তা…
বন্ধু, জাতপাত নির্বিশেষে অখণ্ডতার অসীম ভালোলাগায় মনসায়রে আপনি ডুব দিতেই পারেন…