আজ ঘোড়া নেই
সুবীর ঘোষ
আমাদের চোখে যারা কথা দিত তারা সে-কথাই রাখত,
যারা আসি বলে চলে যেত তারা দু’দিনেই ফিরে আসত।
শব্দ শেখেনি প্রতারণা; তারা টইটুম্বুর ছিল; ভারীও।
দেয়ালের ছিল দুই কান খোলা, পথে পথে পদচারীও।
বর্ষায় যারা ভরসা জোগাত, বসন্তে প্রাণবন্ত,
সারাটা বছর দরদী কথায় তারাই লক্ষ্মীমন্ত।
আমরা কোথায় বসব দাঁড়াব, কোথায় শৈত্য উত্তাপ
এসব যাদের ভাবনায় ছিল তারাই জোগাত প্রস্তাব।
আমরা দেখেছি মৌপায়ী অলি আয়নার কাচ ঠোকরায়
আমরা দেখেছি নদীতট জুড়ে সংগীতে জল উপচায়।
দুরের ধামসা থেমে যায়; রাত নিদ্রায় চলে মেপে
এসব পাবে না কোনোদিন কোনো ট্রামের পদক্ষেপে।
পাখিরা বলত — নাচছি আমরা বসে থাকো আর দেখ
ঝর্নাতলার নূপুরের সাথে ঠাণ্ডায় হাত রেখ।
ভালোমানুষের জামার আড়ালে ছিল না ক্ষুরের গন্ধ
শ্বাসকষ্টেও নলকূপগুলি হয়নি কখনো স্থবির অচল বন্ধ।
চাঁদের এ-পিঠ ও-পিঠ কোথাও লাগত না ঝুলকালি;
সবাইকে আজো কাছাকাছি ডাকি — দুর্বল বলশালী।
কারো কাছে আজ ঘোড়া নেই শুধু জিনখানা থেকে গেছে,
ঢিবিবেলাকার সাপ একপাশে মৃতপ্রায় পড়ে আছে।