
ঠোকেন তাল
বলাই দে
নিজেকে মাপতে জানেন
মেপে মেপে পদক্ষেপ,
যুক্তিটাও খুবই মানেন
আঁকেন বেশ চলার ম্যাপ।
কোথায় কেমন চলতে হবে
বলতে হবে মন খুলে,
মাততে হবে উৎসবে
হাসতে হবে সব ভুলে।
নিজের ভাবনাই সেরা নয়
আরও আছে সেরা ওই,
সংকটেও করবে জয়
সেই আশাতেই জেগে রই!
ইনিয়ে বিনিয়ে কথার প্যাঁচ
প্যাঁচিয়ে বেশ তৃপ্ত হন,
জীবনব্যাপী করেন সেচ
সেচেই চলেন আজীবন!
ঠকিয়ে খুশী ঠকবাজে
টগবগিয়ে ছোটান ঘোড়া,
নানান ফিকির নানা কাজে
অন্যে ভাবেন কপাল পোড়া।
হেরেই যান সকাল বিকাল
হারিয়ে খুশি লোক ‘পাঁজি’,
ভুবন গড়ে ঠোকেন তাল
হেরেও যিনি খোস মেজাজি!

তরঙ্গহীন
বলাই দে
মুক্ত মনের দুয়ার আটা
গণতন্ত্রে চলছে ভাটা,
ভাটি স্রোতের প্রবল টানে
দিশাহীন এক যন্ত্রণাটা।
কে যে কোথায় দিচ্ছে হাওয়া
যায় যে সেসব বুঝতে পাওয়া,
পরতে পরতে ছন্দ হারায়
মলিন চোখে শুধুই চাওয়া!
যুক্তি কোথায়, তর্ক কোথায়
গা জোয়ারি শক্তি হেথায়,
আদল ভাঙার চলছে খেলা
ডালে ডালে পাতায় পাতায়।
পা মিলিয়ে চললে তবে
প্রেমিক তুমি হবেই হবে,
হলো যদি ব্যতিক্রমণ
দাঁড়িয়ে শমন রবেই রবে!
এক দেশ একই ভাবনা
নাহলে দেশ এগোবে না,
ঝাড়াই বাছাই অহর্নিশি
সেই হিসেবেই বেচাকেনা।
স্বপ্ন দেখো যতই রঙিন
করছে কেমন দীন হতে দীন,
নামছে কেবল সুখের পারদ
তরতরিয়ে তরঙ্গহীন!

মাছধরা
বলাই দে
বাজারটা যে বিশাল বিপুল
তাতেই তোমার এত্ত কদর,
“হাউডি হাউডি” জিগির ওঠে
মাঝি বলে বদর বদর।
লক্ষ কোটি ডলার ঢেলে
গুছিয়ে নিতে বানিজ্যটা,
পণ্য ফেরির পরিসেবা
দিতেই যেন ঘনঘটা।
দেশের শিল্প, দেশের শ্রমিক
উৎপাদনটা শিকেয় তুলে,
স্বাধীন সত্তা বিকিয়ে দিয়ে
হাট করে দে দরজা খুলে।
নিম্ন চাপের চতুর কৌশল
চাপিয়ে যেতে হবেই হবে,
ফাঁদ পেতেছে চতুর্মুখী
জালে ধরা পড়বে তবে।
এমন সুযোগ বিশ্বমাঝে
কেউ কি তাকে হারায় হেলায়,
নিজের শর্তে মুনাফাটা
সারতে হবে বেলায় বেলায়।

কি জানি কি হয়
বলাই দে
শরীরটা নাই বশে
চোখের নীচে কালি,
চুল পড়েছে খসে
মাথা পুরো খালি।
বাঁধলো কোথায় গোল
যাচ্ছেনা যে ধরা,
ধরে ধরে তোল
যমে নাড়ছে কড়া।
নিদান দিলো হেকিম
সাবধান হও বাপু,
মাথাটাও ঝিমঝিম
শরীর কাঁপু কাঁপু।
হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা
কেঁপে কেঁপে জ্বর,
বন্ধ মিঠাই মণ্ডা
বুকে ঘড়ড় ঘড়।
সবই বুঝি গেছে
ভেতর হৃদয়হীন,
লিভারটাই যা বেঁচে
আশঙ্কায় যায় দিন!