গল্পটা শেষ করাই হল না
ব্রতীন বসু
পুজোবার্ষিকীর গল্পটা শেষ অবধি পড়াই হল না।
এক আদিবাসী মেয়ের গল্প,
কত পরিশ্রম করে প্রায় দশ কিলমিটার হেঁটে ইস্কুলে পড়তে যেত।
ঠিক মহালয়ার দিন রান্নার দিদি কাকলি ডিক্লেয়ার করল তার আর কাজ করা সম্ভব নয় কোলকাতায়।
গ্রামের বাড়িতে শাশুড়ি গুরুতর অসুস্থ,
ছেলে মেয়ে ঠাম্মার কাছে থেকেই পড়াশোনা করত। ওদের দেখতে হবে তাই গ্রামে গিয়ে থাকবে।
আমি শুনে বললাম, তুমি এক কাজ করো, মেয়েটাকে আমার কাছে রেখে যাও, ঘরের কাজ করুক। তুমি ছেলে সংসার দেখ গিয়ে। খাওয়া দাওয়া জামাকাপড় ছাড়া মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেব। পরে কাজ শিখে গেলে না হয় দুই করে দেব।
আমার বাড়িতে কাজ করছে কাকলি প্রায় দশ বছর হতে চলল। দুবেলা আসে, সামনেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকে, রান্না আর রুটি করে চলে যায়।
এত হাসি মুখ ওর আগে কখনও দেখিনি।
আনন্দে প্রায় কেঁদেই ফেলল কাকলি।
খুব ভাল হয় বৌদি তাহলে। আমি নিশ্চিন্ত হই। মেয়েটা তেরোয় পরল। বিয়ে না দেওয়া অবধি আপনার কাছে থাক্। কাজকম্ম শিখুক।
আজ চতুর্থী। আমি চাউমিন করব বলে গাজর বিন্স কাটতে কাটতে ভাবতে লাগলাম,
পুরো পুজোটা আমাকে রান্না করতে হবে।
পুজোবার্ষিকীর সেই আদিবাসী মেয়ের গল্পটা শেষ করাই হল না। পড়তে পারল তো সে? কে জানে?
কাকলি মেয়েটাকে দিয়ে যাক তারপর আবার সময় পেলে বসা যাবে।