বলাই দে’র ছড়া

বলাই দে’র ছড়া

খেয়াল খুশি

বলাই দে

সবলের খেয়াল খুশি
দুর্বল সদাই দোষী,
এই নিয়মেই চলছে জগৎ
যেমন চলে রবি শশী।

পাড়ার কুকুর পাড়ায় তেজী
অহি’র তো গুরু বেজি,
বেপাড়ায় পথ হারিয়ে
তাড়া জোটে প্রতিরোজই।

পায়ে পায়ে নজরদারি
সবল করে হুকুম জারি,
চাপিয়ে রেখে দাবিয়ে রেখে
মজা লোটে মজা ভারী।

দুর্বল যদি গড়ায় নীচে
তারে আরও ঠেলে পিছে,
ভেঙে দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে
সবল ভাবে এগিয়েছে।

অন্যের ভারী কালো মুখ
দেখে হৃদে দাপায় সুখ,
এই যেন এক পরম পাওয়া
প্রসারিত হয় যে বুক।

ঠকিয়ে সুখ জয়ের হাসি
সুখের স্বর্গে চলে ভাসি,
দুঃখী জন তাকি‌য়ে থাকে
ঠকেও যেন খুব উদাসী।


মহাজন

বলাই দে

ধারের টাকা ধারে বিলায়
নতুন মহাজন,
সেতু গড়া সড়ক গড়া
এইতো তাহার পণ।
ধারের টাকার সুদ তো আছে
কম বা একটু বেশি,
এ সব দেনাপাওনা নিয়েই
বিশ্বে রেষারেষি।
বন্দর সাজায় জাহাজ পাঠায়
টাকা নদীর জলে,
তরতরিয়ে ব্যবসা বাড়ে
পাতায় ফুলে ফলে।
এই ভাবেই প্রতিবেশী
বাড়ায় বন্ধু হাত,
বানিজ্যটা ফুলেই উঠে
ফোলে দিনরাত।
টোল প্লাজা বসিয়ে রাজা
উসুল করে ধার,
টগবগিয়ে চলছে দেখো
জীবন চমৎকার!
ধারের টাকা জমা করেন
নতুন মহাজন,
নতুন ধারে নতুন ভোরে
বাণিজ্যতে মন।

আমি

বলাই দে

আপন স্বার্থ সুরক্ষিত
তাইতো আমি মৌন,
অনেক ভাবা ভাবনাটা
আমার কাছে গৌণ!
অন্যের কোনও ব্যাপারে
নাকটি আমি গলাই না,
নিজের বিপদ ছাড়া আমি
দৌড় ছুটে পালাই না।
নাকের ডগার বাইরে আমার
ভিন্ন কোনও জগৎ নাই,
তাইতো আমি সবার প্রিয়
মিত্র আছে শত্রু নাই।
যদিও বা ভিড়ের মাঝে
আটকে পড়ি কখনও,
যেদিকটাতে হাওয়ার গতি
তারই সাথে তখনও।
বিচার যদি করতে বলো
আমি খুবই দক্ষ,
যাদের মাটি শক্তপোক্ত
নিই যে তাদের পক্ষ!
এইভাবেই দিন যে ফুরায়
সকাল বিকাল সন্ধ্যা,
বুকে বহে হালকা বাতাস
চোখে নামে তন্দ্রা।