বলাই দে’র ছড়া

বলাই দে’র ছড়া

একটি পরামর্শ

বলাই দে

ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখো বর্তমানকে ছেড়ে,
তবেই না থাকবে বেঁচে, বাঁচবে তেড়ে তেড়ে।
নিজের ভালো, দেশের ভালো, বর্তমানকে ভুলে,
ভবিষ্যতের ভবিষ্যতে থাকো ঝুলে ঝুলে।
স্বপ্ন দেখো, স্বপ্ন দেখো, স্বপ্ন দেখো খুব,
বর্তমান তো যায় না দেখা ভবিষ্যতেই ডুব।
হোক না ফিকে বর্তমানটা সাদা কাগজ যেন,
বর্তমানের ভাবনা নিয়ে কষ্ট পাওয়া কেন?
যেমন আছে তেমনি থাকুক বর্তমানের গতি,
বেশি বেশি ভাব ভাবনায় ভবিষ্যতের ক্ষতি।
আছো তো বেশ বর্তমানে, নাচো, নাচো, নাচো,
কালের স্রোতে আজটা যাবে ভবিষ্যতেই বাঁচো।

মন

বলাই দে

স্থির হয় না সে এক জায়গাতে
ঘুরঘুর তার স্বভাবখানা,
জানি না তার হালহকিকত
কখন যে সে মেলে ডানা!

স্বভাবটাই চপল চপল
হিল্লি দিল্লি করে বেড়ায়,
কখন যে হৈ হুল্লোড়ে
কখনও বা ভিড়টি এড়ায়।

কখনও সে কষ্টে থাকে
ফের কখনো উচ্ছলতায়,
এইভাবে তার দিবসযাপন
নাইকো বাধা এগিয়ে চলায়।

আজকে আমি শহরবাসী
বলতে পারো বন্দিজীবন,
মন যে কখন সুড়ুৎ পাখি
কখন যে হয় মন উচাটন।

মুহূর্তে সে ঘুরেই আসে
পাহাড় নদী খালে বিলে,
জীবনটাকে জানতে শিখে
একটু নয়, তিলে তিলে।

তার ভাবনা সে ভেবেই চলে
হয় না তাতে তেমন ক্ষতি,
চেষ্টা তুমি যতই করো
মাপা কী যায় মনের গতি?

আমি

বলাই দে

প্রতিবেশী ভালো আছে
সে সুখ আমার সয় না,
উচাটন মন যে আমার
মনের ভিতর রয় না!

কালো মেঘের ঘনঘটায়
উজ্জ্বল এই মুখটা,
মনের মতো খোরাক পেয়ে
সদাই নাচে বুকটা!

এইতো আমার জীবনবিলাস
অনিত্যতে নিত্য,
ঘরে বসেই পেয়ে যে যাই
জীবনপুরের তীর্থ!

কানমন্ত্রে উসকে দিলাম
বেড়েই চলে দ্বন্দ্ব,
তাতা থৈয়া তাতা থৈয়া
দারুণ চলার ছন্দ!

খারাপ দিকটাই তুলে ধরি
আমার প্রচার তথ্যে,
ভালো দিকটা লুকিয়ে রাখি
কালকুঠুরির গর্তে!

এই ভাবেতেই জীবনযাপন
বুঝলেন বাবু কর্তা,
আগাছা সব আগলে রাখি
আমি সমাহত্তা!

জবাই

বলাই দে

চালাকিতে মার খেয়েছে
বন্ধু প্রিয়জন,
কার ইশারায় আগ বাড়িয়ে
করেছে গর্জন?

তূন থেকে তির ছুঁড়েছে
বুমেরাং সেই তির,
তারই বিষে কালো শরীর
হায় রে আলমগীর!

বিষবৃক্ষে ফললে ফসল
চওড়া হাসি মুখে,
ব্যর্থতার দায় বলির পাঁঠা
দেয় রে তারে ঠুকে।

ফসল যদি ফললো তেমন
তাঁর, দক্ষতারই ছাপ,
ব্যর্থ হলে দায় এসে যায়
এ কী করলি বাপ!

আওড়ে চলে বুলি হরদম
হায়রে তোতাপাখি,
বলি চড়ায় হাড়কাঠিতে
থামে ডাকাডাকি!

হবু চন্দ্র রাজার দেশে
গবু মন্ত্রির ঠাঁই,
অবশেষে গবুরা সব
হলো রে জবাই!