প্রসেনজিৎ রায়ের কবিতা

প্রসেনজিৎ রায়ের কবিতা

অবাধ্য সময়

প্রসেনজিৎ রায়

অবাধ্য সময় জুড়ে জানালার ফাঁকে দূর দিগন্তজুড়ে দুচোখে আঁকতে থাকি অভেদ্য অক্ষরেখা
ঘোর ঘনঘটা হঠাৎ অলক্ষ্যে ভিড় করে ফেলে আসা পথের বুকে রেখে আসা স্মৃতির নিষ্ঠুর পদচিহ্নে,
ভেতর ভেতর কোনো এক অভিশপ্ত অপরাধবোধে কুঁকড়ে থাকি,
রাত যায়, আবার দিন আসে নিয়ে নতুন পালকি তাগিদ,
দুহাতে পথ হাতড়াই খুঁজে নিতে একবুক উদ্দাম মুক্তির পথ,
লকডাউন জুড়ে প্রহর কাটে অভিশপ্ত লাল বেলাভূমিতে,
তবু খেদ নেই, দুঃখ নেই – এ কি নিছক অবহেলা নাকি আঘাতে আঘাতে জর্জরিত বুকের প্রহরভেদী প্রচণ্ড ইমিউনিটি ?
ভাবতে ভাবতেই হারিয়ে যায় আমার নিতান্তই অবাধ্য সময়।

প্রেমিকা

প্রসেনজিৎ রায়

তুমি আমার স্মৃতিকুঞ্জে বিশাল দিগন্ত বরাবর মাঝেমাঝে হেঁটে গেলেই তোমার কর্তব্য সেরে যায়।
আমার কর্তব্য শুরু হয় ভোররাতে খালি স্টেশনের পাশে নর্দমায় গচ্ছিত ঘৃণা কুড়িয়ে …
তারপর সেই ঘৃণা দিয়ে ফানুস বানিয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে দেই সে ঘৃণা আকাশে বাতাসে,
স্মৃতিপটে কিছু হেয়ালি খেয়াল জমে বুকে চিনচিন ব্যথার বিনিময়ে।
তবু ভালো অন্তত বেঁচে থাকি না মরে যাওয়ার এক দুর্দম লড়াইয়ে।
আমার বেঁচে থাকার ঘৃণা তোমার মেকআপ বক্সে রং বাড়ায়, হয়ে উঠো মেকি সুন্দরী,

মিছে প্রতিশ্রুতি আর ছলছাতুরীর ভিড়ে ফিঁকে লাগে তোমার রংচঙা মুখ …
আমি ছেঁড়া কাপড়ে শেষে অবজ্ঞা ধার করে নেই।
যাই হোক্ তোমার অবজ্ঞাখানিও কম কিসের…
তবুও তো তুমি জীবনের প্রথম প্রেমিকা।

তুমি ঘর বাঁধো, আমার স্বপ্ন ভাঙে,
আমি একা নেশায় বুঁদ, তুমি তখন প্রিয়ের সঙ্গে…
তোমার বৈশাখী বিকেল, বর্ষাস্নাত রাত, শারদ প্রাতকাল, হৈমন্তী দুপুর, শীতের কনকনে সন্ধ্যে, বসন্তের আবেগ সব বেঁচে থাকে…
আমি বাঁচি সেই স্মৃতি আর স্মৃতিভ্রমের মাঝামাঝি উদ্ভট রোজনামচায় ।