আবদুল হকের কবিতা

আবদুল হকের কবিতা

তোমার নামে অলক্ষ্যে লেখা

আবদুল হক

রাত্রির ভেজা জানালায় ছায়া পড়ে চুপচাপ,
তুমি কি জানো, আমি কতকাল অপেক্ষায়?
চোখের পাতায় নামছো—একটা নরম গোলাপ,
ভাষাহীন স্পর্শে জেগে ওঠে পুরনো ব্যথায়।

হাঁসফাঁস করে জোছনায় শুয়ে থাকে ব্যথা,
তোমার হাসি জ্বলজ্বলে, অথচ দূরের তারা।
কোনোদিন বলা হয়নি—চেয়েছিলাম চিঠিতে লেখা
“তুমি”—এই একটি শব্দই আমার সারাজীবনের হারা।

পদ্মফুল ফোটে ভোরে, তবু রাতের গন্ধ ফেলে যায়,
তুমি যে স্পর্শ করোনি—সেই চুম্বনেই আলো ছড়ায়।
তোমার নামে অলক্ষ্যে প্রতিটি দিন লেখা থাকে,
ভালোবাসা, না হয় অভিমান—সবই আমার ভাগ্যে থাকে।

ঘড়ির ভেতর এক শহর

আবদুল হক

একটা শহর ঘুমিয়ে আছে ঘড়ির কাঁচের নিচে,
প্রতিটা সময় সেখানে মানুষ নয়, কেবল ছায়া।
বৃষ্টি এলে পাতা গজায় দেয়ালে—কিন্তু সবুজ নয়,
লাল, নীল, আর ছাই রঙের ঘ্রাণ ছড়ায় হাওয়া।

তুমি আসো প্রতিদিন—একই মিনিটে, একইভাবে,
ঘড়ির কাঁটা থেমে থাকে ঠিক তোমার চুল ছোঁয়ার আগে।
তোমার চোখে তখন দুইটা চাঁদ, আর ঠোঁটে ঘুমের স্বর,
আমি শুধু দেখি, কখনো ছুঁই না—এটাই আমাদের চুক্তিপত্র।

রাস্তাগুলো হাঁটে, বাড়িগুলো কথা বলে,
একটা জানালা থেকে কবিতা বেরিয়ে আসে উড়ে উড়ে।
তুমি একদিন বলেছিলে, “আমি স্বপ্ন, কিন্তু ঘুম না,”
তাই হয়তো এই শহরেই আমি জেগে থাকি—ঘুমিয়েও না।