রহিত ঘোষালের কবিতা

রহিত ঘোষালের কবিতা

রিফু

রহিত ঘোষাল

দুটো ঘড়ি কখনোই এক সময় বলে না—
এখন তাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ,
বালিয়াড়ির কাছে পড়ে আছে ভাঙা কাচ,
নিদ্রার মতো অস্থির আঘাত দিয়ে
নীল শাড়ি প্রথম ফাল্গুনে খাঁড়িমোহনায়
রজনী ছিঁড়েছে,
চালকবিহীন কোথায় চলেছে চিরন্তন
নক্ষত্র প্রহরীরা?
ধ্বংসস্তূপের কাছে উৎসারিত দীর্ঘ সূর্যাস্ত,
নিষ্প্রদীপ ক্লেদ ও লতার আড়াল,
প্রাঙ্গণে ফুটে আছে অকল্পিত অশ্রুফুল,
জলপ্লাবী খেত পিপাসা বিজড়িত,
অলৌকিক ধ্বনিরোল শত-শতাব্দী কণ্ঠে নিয়ে
আমাদের আবরণ খুলে যায়,
অগ্নিদগ্ধ অপবাদ এগিয়ে আসতে দেখি
আমরা, ব্যবহৃত গ্লাস ভ্রাম্যমাণ ঠোঁটের কাছে
বিলিতি মদের স্বাদ এনে দেয়,
ছবি ওঠে আমাদের, জ্বর ওঠে আমাদের,
মহাশূন্যের সমানুপাতিক গরিমা নেমে আসে তীরে,
সাড়াশব্দ করে না তবু কেউ,
সহ্য করে অতর্কিত লাঠি,
কক্ষপথ রমণী শরীর সন্ধান করে সীমাহীন
গ্রামে গ্রামে, ধুলো উড়িয়ে জটিল অক্ষর
আমাদের নাগরিক চামড়াকে কালো করে দেয়,
ঠিকানায় পৌঁছে যায় মায়া-সিকি-আধুলি,
মরুযাত্রীর নিঃসঙ্গতা পাত্রে রাখে তমসাচ্ছন্ন গল্প,
বিকৃত চোরাগর্ত প্রচণ্ড স্বতন্ত্র,
এই কথা ছড়ানো ইতস্তত—সূচবেঁধা জৈব দেহ,
শিলপাটা হৃদয়, কাঁই, ভাগ্যান্বেষী ঝিনুক বাটি,
উপলদ্ধির সেতু লেকগার্ডেন্সের কাছে
চুপ থাকে, অনেকক্ষণ, তারপর বাজপাখি হয়ে
উড়ে যায় বর্ণ-ধাতু-কশাঘাতের কাছে,
তাই তো উচিত,
সৈকত সলমা-জরির হীনমন্যতায়—
নাকি ফেনায় হিলহিলে বিদ্যুৎবাহী দৈত্য হয়ে ওঠে
কেউ কী জানে?