মাষ্টারমশাই (ছোটোগল্প)
সাধন কুমার পাত্র
মাষ্টার! তুমি কি ডাক্তার ? ছেলের এমন প্রশ্নে কিছুটা হকচকিয়ে গেলেন সৌমেনবাবু। ক্লাস ফাইভে ওদের প্রথম দিন। সবার সাথে ভালো করে পরিচয়, এখনো হয়ে ওঠেনি। কিন্তু সকলের চোখমুখ যেন উত্তর পেতে চাইছে। হুম্, আমি মাষ্টার আবার ডাক্তারও। শুনে হি হি করে উঠল সবাই। কিন্তু সমরেশ ছেলেটি চূপ হয়ে বসে পড়ল। ওর কি আরো কিছু প্রশ্ন আছে? স্যার বললেন-তুমি কি আরো কিছু বলবে? না, স্যার। ভর্তির সময় স্কুল থেকে যে ডাইরি পেয়েছি, ওখানেই দেখেছি তুমি ডাক্তার। প্রথমদিনের ক্লাস এইভাবে হৈ-হুল্লোড়েই কেটে গেল।
টিফিনের সময় যখন সারা স্কুল চত্বর কলকল করছে। মাঠভর্ত্তি ছেলেমেয়ে এদিকে ওদিকে খেলায় মেতেছে। সমরেশ তখন পা ছড়িয়ে গাছের নীচে বসে, ভরা পুকুরের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে। টিফিন বক্সে কয়েক পিস কেক। তুমি খাচ্ছো না? খাওয়ার পরে স্টাফরুমে একবার দেখা করবে। তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে। পিঠ চাপড়ে আশ্বাস দিলেন সৌমানবাবু।
কিন্তু না। সমরেশ স্যারের কথা রাখল না। সেদিন আর স্টাফরুমে গেল না। বরং পঞ্চম পিরিয়ডের পর সে বাড়ি চলে গেল। সৌমেনবাবু ছেলেকে দেখেই বুঝেছেন, ও অন্যদের থেকে একটু আলাদা। অবশ্যই কোন কষ্ট লুকিয়ে আছে, ওর মধ্যে। ঐরকম ফরসা টুকটুকে একটা ছেলে। যাকে দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যাবে সকলের। সেই ছেলের মুখে কোন হাসি নেই। অথচ কথায় কথায় এক অদ্ভুত মায়া। বিকেলের পর থেকে কোন কাজেই আর স্বস্তি পাচ্ছেন না সৌমেনবাবু। রাত্রিতে বিছানায় শুয়ে ওর সরল নিষ্পাপ মুখটা বার বার ভেসে উঠতে লাগল। ঘুম আর আসেনা। বার তিনেক বাথরুমে গিয়ে মুখে ঘাড়ে জল নিয়ে আবার শুয়েছেন। কি ব্যাপার বলতো, তুমি কি কোন টেনশনে আছো? এই প্রশ্ন করে বসলেন স্ত্রী নমিতাদেবী। এবার সৌমেনবাবু স্ত্রীর কাছে সব কথা খুলে বললেন। ঠিক আছে, কালকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর। বলেই ফ্যানের স্পিডটা বাড়িয়ে দিলেন।
পরের দিন। প্রার্থনাসভায়।সকলেই একসুরে গাইছে, “ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা”। সৌমেনবাবুর চোখ কিন্তু সমরেশকেই খুঁজতে চাইছে। ক্লাস ফাইভের দুটো লাইন। সমরেশ দ্বিতীয় লাইনের একেবারে শেষে। সকলে লাইন করে শ্রেণীকক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই কঁচি শোন – বলতেই মাথা নীচু রেখে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে এগিয়ে এল সমরেশ। আজ ঠিফিনের সময় দেখা করবে, কেমন।মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানাল কঁচি।
না, আজ আর অমান্য করেনি, সে। যথারীতি স্টাফরুমের দরজার সামনে এসেছে। সমরেশ, এসো এসো। আচ্ছা চলো, ঐ ফাঁকা রুমে বসে দুজনে গল্প করি। বেঞ্চে বসে স্যারের আনা টিফিন ভাগ করে খাচ্ছে দুজনে। প্রথমে না না করলেও, খাচ্ছে বেশ। ভালোবাসার চোখ দেখলেই বোঝা যায়। আচ্ছা বাবু, তুমি খেলতে ভালোবাসো? হ্যাঁ, খুব ভালোবাসি। কিরকেট খেলতে খুব ভালো লাগে। আগে বাবার সঙ্গে- একথাটা বলেই আটকে গেল। মুখটা শুকনো হয়ে উঠলো এক রত্তি ছেলেটার। বল বল, থামলে কেন? আচ্ছা, সমরেশ! তুমি যদি আমাকে না বল, তাহলে আমি তোমার ভালো স্যার হবো কেমন করে? কিছু সময় মৌন থেকে ও বলল – আমার মায়ের খুব শরীর খারাপ। কদিন ধরেই জ্বর।তুমি তো ডাক্তার। যদি মাকে একবার দেখে আসতে। আমি কালকে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে মাকে সব বলেছি। আর তোমার বাবা? মা বলেছে, বাবার কথা কাউকে না বলতে। তবে তোমাকে বলতে পারি। না না, থাক বাবু। মায়ের অবাধ্য হতে নেই। মা, যা বলবেন তাই করবে।মাষ্টার! তুমি কি আজ আমার মাকে দেখতে যাবে ? একটু অন্যমনস্ক হয়ে, মাষ্টার যাবো বললেন। সমরেশের মনটা খুশিতে ভরে উঠল।
স্কুল থেকে প্রায় দু-কিমি দূরে সমরেশের গ্রাম। কাঁচা মেঠোপথ। ঐ পথ ধরেই ওরা স্কুলে আসে। স্কুল ছুটির পর সমরেশকে নিয়ে বাইকে চেপে সৌমেনবাবু ওর বাড়িতে গেলেন। প্রায় উঠোনভর্তি নারকেলের গাছ। সামনে ঘাট বাঁধানো ছোট্ট পুকুর। দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন সমরেশের অসুস্থা মা। নমস্কার প্রতি-নমস্কারের পর্ব চুকিয়ে সৌমেনবাবু পা রাখলেন বাড়ির ভেতরে। সম্পাদেবী অতিথি আপ্যায়নে শশব্যস্ত হয়ে উঠলে, সৌমেনবাবু আপত্তি জানালেন। মাষ্টার দুই কামরার বাড়িতে ইতস্তত চোখ বুলিয়ে ওদের অবস্থাটা বুঝে নিতে চাইলেন। চা-বিস্কুট নিয়ে কাছে এলেন সম্পাদেবী। কদিন ধরে খাবারে রুচি নেই। জ্বরটা ঘুরেফিরে আসছে। মাথা ঝিমঝিম করছে সবসময়। খুব দুর্বল লাগছে। দশদিন আগে বিপিনবাবুকে দেখিয়েছি। কোন কাজ হচ্ছে বলে তো মনে হচ্ছে না। ছেলে বলল, আপনি ডাক্তার। কি করে বোঝাই যে, এ ডাক্তার সে ডাক্তার নয়। সৌমেনবাবু বললেন- মাপ করবেন, ম্যাডাম। আমি সে ডাক্তার না। আসলে সেদিন, ওর কথায় আমিও হাসতে হাসতে বলেছিলাম ঠিকই। কিন্তু এই জিজ্ঞাসার পিছনে কারণ আছে, বুঝতে পারিনি। তাছাড়া পরে বুঝিয়ে বলার সময় আর হয়ে ওঠেনি। জানিনা কেন, তবে সেদিন থেকেই ওর প্রতি দুর্বলতা কাজ করছে, দেখছি। ওই রকম একটা টুকটুকে শিশু মন খারাপ করছে দেখে, আমারও কষ্ট হচ্ছিল। তাই ওর মন খারাপের কারণ জানতে কৌতুহল হয়েছে বলতে পারেন। তবে যদি কিছু মনে না করেন, আমার ভাড়াবাড়ির পাশে একজন ডাক্তারবাবু বসছেন এখন। প্রতি শুক্রবার। শুনেছি, খুব ভালো। যদি বলেন, নাম লিখিয়ে রাখব। সমরেশ স্থির হয়ে বসে আছে, মায়ের কোলে। সম্পাদেবী সম্মতি জানালেন।
শুক্রবারে মা ও ছেলে ডাক্তারের কাছে গেল। একমাসের চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠল তার মা। সমরেশ এখন খুব আনন্দে আছে। সংবাদটা স্যারকে জানানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। কিন্তু স্যার কদিন ছুটি নিয়ে দেশের বাড়িতে আছেন। অন্য এক স্যারের কাছে খবরটা পেয়েছে, সমরেশ। অগত্যা অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই। দুদিন পর প্রার্থনাসভায় সমরেশ স্যারকে দেখেছে। টিফিনের সময় স্টাফরুমের সামনে এসেছে সে। স্যার সমরেশকে দেখে বাইরে এলেন। কি খবর বাবু, মা কেমন আছে ? মা একদম সুস্থ হয়ে গেছে, স্যার। ওর চোখমুখের চঞ্চলতা যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে, সমরেশ আজ কত আনন্দে আছে। সৌমেনবাবু তো ওর এই খুশিভরা চেহারাটাই দেখতে চেয়েছিলেন। স্যার, আর আমাদের বাড়ি যাবে না? মা বলেছে, তোর স্যারকে একদিন ধরে নিয়ে আসবি। আজ নয় বাবু। পরে একদিন যাবো। যাও, এখন টিফিন করে নাও।
মাস খানিক বাদে, চেনা পথ ধরে সৌমেনবাবুর বাইক এগিয়ে চলেছে সমরেশের ঘরের দিকে। স্যারের পিছনে বসে আছে সমরেশ। সরু রাস্তার দুপাশে নারকেল গাছের সারি। ছোট ছোট ঘাট বাঁধানো পুকুর। সব পেরিয়ে ওদের দু-কামরার বাড়ি।ভেতরে এলেন সৌমেনবাবু। সম্পাদেবী চা নিয়ে বসলেন, মাষ্টারের সামনে। চশমার ভিতরে থাকা স্যারের নির্লিপ্ত চোখ দুটি সম্পাদেবীকে ঘিরেই থাকতে চাইল। লাবণ্যে সম্পূর্ণা বত্রিশ-চৌত্রিশের আটপৌরে ঘরোয়া রমণী। রূপ ও রঙের মিশ্রণে অপূর্ব এক শৈল্পিক সম্মিলন। স্বয়ং ঈশ্বর যেন উদার হতে চেয়ে সমস্ত সৌন্দর্য এক করে দিয়েছেন। সম্পাদেবীও মাষ্টারের ভয়মিশ্রিত উৎকন্ঠা অবলোকন করেছেন অসহায়ভাবে। তথাপি একমাত্র পুত্রকে পড়ানোর অনুরোধ করে বসলেন। মাষ্টার প্রথমে নিমরাজি হলেও সমরেশের আবদারকে উপেক্ষা করতে পারলেন না। কথার সূত্র ধরেই মাষ্টার একবার সমরেশের বাবার কথা জানতে চাইলেন। ততক্ষণে সন্ধ্যা নিজেকে মেলে ধরেছে। মা সমরেশকে পাশের ঘরে পড়তে আদেশ করলেন।
সে এক ইতিহাস স্যার। ওর বাবা, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। বড়সড় না হলেও ছোটখাটো। বিয়ের একবছর পর থেকে সারাদিন রাজনীতি নিয়েই পড়ে থাকত। কোন কোনদিন রাতেও বাড়ি ফিরত না। কোনদিন বা গলায় ঢেলে ফিরে আসত। এই নিয়ে নিত্য অশান্তি লেগেই ছিল। আস্তে আস্তে চাকরিটাও চলে গেল। বাড়ির সকলে আমাকেই দোষ দিতে লাগল। অহেতুক নিন্দামন্দ লেগেই থাকত। সমরেশ তখন তিন বছরের। একদিন রাতে ও আর বাড়ি ফিরল না। সকালে পুলিশ এল বাড়িতে। ওকে নাকি পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে। পরে একটা খুনের অপরাধে ওর যাবজ্জীবন হয়ে গেল। কিছুদিন পর, সংসারে আমাদের দায় নিতে পারবে না বলে দাদা ও বৌদি আমাদেরকে আলাদা করে দিল। শুরু হল মা-ছেলের সংগ্রামী জীবন। একবার ছেলেকে মায়ের কাছে রেখে কাউকে না জানিয়ে সেন্ট্রাল জেলে দেখা করেছিলাম। ও অবোধ শিশুর মতো হাউহাউ করে কাঁদছিল আর বলছিল- সম্পা, বিশ্বাস কর, আমি খুন করিনি। আমি রাজনীতির স্বীকার। আমি কিচ্ছু বলতে পারিনি, সেদিন। শুধু ভাগ্যের দোষ বলে ভেবেছি। কথাগুলোর সঙ্গে সঙ্গে তার চোখের জল ফোঁটা হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছিল মাটিতে। মাষ্টার আরও দুর্বল হয়ে পড়লেন। আজ আসছি, বলে যখন বেরোলেন তখন পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় সারা ভুবন উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
মাষ্টার আদর্শ আর বিশ্বাসে ভর করে সমরেশকে পড়াতে আসেন। এতোসব শোনার পর মনে যে কিছু হয় না, তা নয়। কিন্তু প্রথম থেকে সমরেশের প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসা কোন কাজে অন্তরায় হয়ে ওঠেনি। লোকাপ্রবাদ, গুঞ্জন ইত্যাদিরও কোন অভাব হল না। এমনকি স্কুলেও কেউ কেউ সুযোগ বুঝে টিপ্পনী দিতে লাগলেন। মাষ্টার কিন্তু অনড়। সমস্ত কিছুকে দূরে সরিয়ে পড়াতে যান। পছন্দের খাবারও এনে দেন কখনো কখনো। পূজোর সময় পোষাক কিনে দেন। মন ভালো রাখতে বেড়াতে নিয়ে যান। এইভাবেই চলতে লাগলো কয়েক বছর। সমরেশ অসাধারণ বুদ্ধি ধরে। প্রতি ক্লাসে প্রথম হয়। ইংরেজি ও অঙ্কে অদ্ভুত চোস্ত হয়ে উঠেছে। দিনে দিনে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বসল। এরপরেই বাধ সাধল, একদিন। সৌমেনবাবুর ট্রান্সফার হল নিজের জেলা, বাঁকুড়ায়। ইচ্ছা নেই আবার উপায়ও নেই। বিদায়ের আগের দিন মা ও ছেলে কেঁদে আকুল। এমন এক ছাত্রকে ছেড়ে থাকা মাষ্টারের পক্ষেও নিতান্ত কষ্টের। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সমরেশের নরম তুলতুলে হাত এগিয়ে গেল পায়ের কাছে। পা-এ নয়। মাষ্টার ছাত্রকে জড়িয়ে ধরলেন বুকে। আর বাঁধভাঙা বন্যার মতো আশীর্বাদ ঝরতে থাকল মাথার উপরে। রুদ্ধ কণ্ঠে সম্পাদেবীর অস্পষ্ট শেষ উক্তি, ভালো থাকবেন স্যার। ভালো থাকবেন। আপনি আমার কাছে, আমাদের কাছে সাক্ষাৎ ঈশ্বর হয়ে থাকবেন, আজীবন।
ঘটা করে বিদায় সংবর্ধনার অনুষ্ঠান আজ স্কুলে। স্টাফরুমে একের পর এক শিক্ষক কথার মধ্যে নিজেকে ধরে রাখতে পারছেন না। কেউ সম্মুখে, কেউ বা লুকিয়ে পাশের রুমে চোখ মুছতে লাগলেন। শেষ উপহার হাতে তুলে দিতে গিয়ে কড়া প্রধানশিক্ষকও আজ অন্য মুডে। হওয়ারই কথা। দীর্ঘদিন ভ্রাতৃস্নেহে থেকে কথার অবাধ্য সে কখনো হয়নি। ছাত্র-শিক্ষক কেউ আজ ভালো নেই। ভালো নেই সৌমেনবাবু। অসংখ্য কচিকাচার হাত এসে নামছে স্যারের পায়ে। শিশুর অশ্রুতে ভেজা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপহার হাতে নিতে হচ্ছে, বাধ্য হয়ে। তার লাগানো বকুল গাছটা অনেক বড় হয়েছে। নীচের বেদীতে চোখ কচলাচ্ছে সমরেশ। সাজানো ফুলের বাগানের সকলে এক এক করে যেন শেষবারের মতো দেখে নিতে চাইছে, তাদের প্রিয় মানুষটিকে। শিউলী তার সমস্ত সম্পদ বিছিয়ে রেখেছে সদরে। সম্মুখের সমস্ত বৃক্ষরাজি পাতার কম্পনে যেন একযোগে বলতে চাইছে – যেতে নাহি দিব।
চোখের জলে শেষ বিদায় জানিয়ে মাষ্টার আজ নিজের জেলায়। ঘরের ছেলে ঘরের স্কুলে। কিন্তু দিনের বেশির ভাগ সময় মন পড়ে থাকে সমরেশদের কথা নিয়ে। দিন কয়েকের মধ্যে মাধ্যমিকের রেজাল্ট প্রকাশ হল। সংবাদপত্রের পাতা জুড়ে সমরেশের নাম। রাজ্যে প্রথম হয়েছে সমরেশ।আনন্দে উষ্ণ বারি রুমালে চেপে মাষ্টার তার কৃতিত্ব বলে বেড়াচ্ছেন একে, তাকে। বসে থাকতে পারছেন না। আজ যেন তিনি শিশুদের মতো চঞ্চল হয়ে উঠেছেন। টিভিতে সমরেশের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন সাংবাদিক বন্ধুরা। অবনত চোখে সম্পাদেবী ঠিক সমরেশের পাশে। আর পাড়ার সকল মানুষজন। কথার চেনা ছন্দে সে তার সমস্ত কৃতিত্ব উৎসর্গ করছে মাষ্টারমশাইকে। ধীর ও শান্ত গলায় সে শুধুই বলে চলেছে- তিনিই আমার দেখা প্রথম ঈশ্বর, আর আমি তার মানস সন্তান।