ইউ পি আই এবং ডিজিটাল রুপি
স্বাতী ধর
গত বৎসর নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজিটাল রুপির খুচরা পাইলট প্রকল্প চালু হয়েছে। RBI-এর এই টোকেন-ভিত্তিক ডিজিটাল রুপির মাধ্যমে, একটি মোবাইল অ্যাপ দিয়ে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মোডে টাকা পেমেন্ট করতে বা গ্রহণ করতে পারছেন। কিন্তু এখানেই অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অনলাইনে টাকা লেনদেনের জন্য তো ইতিমধ্যেই ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস (UPI) রয়েছে। তাহলে ডিজিটাল রুপির সঙ্গে UPI-এর পার্থক্যটা কী?
- e-Rupi এবং UPI-এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্যটি হলঃ- e Rupi জিনিসটা নিজেই ডিজিটাল আকারে একটি মুদ্রা। মানে আপনার যে কাগজের নোট, বা ধাতুর কয়েন, তারই একটি ডিজিটাল ফরম্যাট। সেটি আপনার মানিব্যাগে না থেকে, আপনার ফোনে থাকছে। আর সেটা বিনিময় করে দুই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে Peer to peer লেনদেন হচ্ছে। ঠিক যেমন আপনি কাগজী নোট বা কয়েনে করে থাকেন। আর UPI একটি প্ল্যাটফর্ম মাত্র। সেটার মাধ্যমে ডিজিটালি লেনদেন হচ্ছে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে।
- আপনি যখন UPI লেনদেন করেন, তখন মধ্যস্থতাকারী হিসাবে আপনার ব্যাঙ্ক কাজ করে। UPI অ্যাপে, আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ডেবিট করা হয়। সেটি প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেলা হয়।
উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, যেমন আপনি চাইলে কাগজী টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নিতে পারেন। সেটি আপনার মানিব্যাগে রাখতে পারেন। এরপর তা দোকানে কেনাকাটা করার সময়ে দিতে পারেন। ডিজিটাল রুপিও একই রকম। খালি পার্থক্য এটাই যে, আপনি কাগজী টাকা না তুলে ডিজিটাল টাকা তুললেন। এবার সেটা মানিব্যাগের বদলে আপনার মোবাইলের ওয়ালেটে রাখলেন।
এরপর ধরুন এটি নিয়ে দোকানে গেলেন। দোকানে এই ই-রুপি দিয়ে পেমেন্ট করলেন। তখন আপনার ওয়ালেট থেকে, দোকানদারের ওয়ালেটে এই টাকা স্থানান্তরিত হবে। এতে ব্যাঙ্কের কোনও গল্পই নেই। পুরোটাই সরাসরি আপনার ও দোকানদারের মধ্যে হচ্ছে।
আপনি ই-রুপিতে কোনো টাকা পেমেন্ট করলে সেটা আপনার ফোনের ওয়ালেট থেকে কেটে দোকানদারের ফোনের ওয়ালেটে যোগ হবে। এতে কিন্তু দু’জনেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও লেনদেন হচ্ছে না।
দোকানদার চাইলে পরে সেই ওয়ালেটের ডিজিটাল টাকা তাঁর ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারবেন।
এদিকে UPI ব্যবহার করলে আপনি ‘ভায়া’ হয়ে যান। অ্যাপের মাধ্যমে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দোকানদারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরিত হয়। ফলে এখানে ব্যাঙ্কের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পার্সনাল ওয়ালেটের কোন ব্যাপার নেই।
মানে, UPI একটি পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম মাত্র। তার মাধ্যমে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, নেট-ব্যাঙ্কিং, মোবাইল ওয়ালেট (যেমনঃ পেটিএম) ইত্যাদি ব্যবহার করে টাকা পেমেন্ট করতে হয়।
আর ডিজিটাল মুদ্রায় ই-রুপির মাধ্যমে টাকা লেনদেনের জন্য কোনও তৃতীয় পক্ষের উপর আপনাকে নির্ভরশীল হতে হয় না। লেনদেন চার্জ, ব্যাঙ্কের সার্ভারের সমস্যা — এসব নেই, জালিয়াতির সম্ভাবনাও এতে হ্রাস করা যাবে। অনেক দ্রুত ও নিরাপদ পদ্ধতিতে দুই পক্ষের মধ্যে টাকা লেনদেন করা যায়।
গত ১ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ডিজিটাল মুদ্রার পাইলট প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চারটি শহর- মুম্বই, নয়াদিল্লি, বেঙ্গালুরু, ভুবনেশ্বর এবং চারটি ব্যাঙ্ক- এসবিআই, আইসিআইসিআই, ইয়েস ব্যাঙ্ক এবং আইডিএফসিতে চালু করা হয়েছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)