চিত্রপটে রাজকুমারী
সুজিত বসু
কখনো আসে আনন্দ আর কখনো ঘন শোক
কখনো সুখের শ্রাবণধারা, দুঃখে কড়া রোদ
কখনো জ্বলে নিয়নবাতি, কখনো চন্দ্রালোক
দুর্গ ভাঙে সেনানী ছয়, লুপ্ত প্রতিরোধ
বৃথাই আমি একাকী লড়ি, বৃথাই ছুঁড়ি তীর
আকাশ ভরে ভস্মমেঘে, ঝিলিক দেয় আশা
ক্ষণিক সুখে মগ্ন, ভুলি ছলনা অশনির
দস্যু ছয়ের অস্ত্রাঘাতে ছিন্ন ভালোবাসা
জানি না কেন তবুও করি অলীক আয়োজন
ভেনাস দেবী আরাধনার, নৌকো কেন জলে
ভাসাই যাতে আসবে কেউ একান্ত গোপন
অভিসারের ঘোমটা পরে নীরব কৌতূহলে
টুকরো এই স্বপ্ন নিয়ে এখনও বেঁচে থাকা
জ্বলুক গ্রহ উষ্ণায়নে, আসুক ঘূর্ণিঝড়
প্লাবনে যদি ভাসেও দ্বীপ, তবুও থাকে আঁকা
চিত্রপটে রাজকুমারী, স্বপ্নে ভরা ঘর।
জ্যোৎস্নায় কপিশ চোখ
সুজিত বসু
জীবন ফুরোলো আলোর তপস্যায়
জলার আলেয়া দিল শুধু হাতছানি
অন্ধকারের সমুদ্র হলে পার
জ্যোৎস্নায় জ্বলে কপিশ চোখ দুখানি
অচেনা শত্রু কড়া নাড়ে দরজায়
অন্ধকারের উদাসীন বল্কলে
মোড়া তার ছুরি, ক্ষিপ্র রিভলভার
জ্যোৎস্নায় শুধু কপিশ দুচোখ জ্বলে
কোথায় গেল সে বন্ধুত্বের হাত
যে হাত ঝাঁকিয়ে ভালো থাক, ভালো হোক
বলেছি কখনো, হিংসার দীপ্তিতে
কপিশ হয়েছে জ্যোৎস্না মাখানো চোখ
উঠোনের টবে পবিত্রতার চারা
লাগিয়েছিলাম, বৃষ্টিতে বন্যায়
জল পেয়ে পেয়ে হলেও তুলসীবন
সে বনে কপিশ চোখ জ্বলে জ্যোৎস্নায়
কি পেলাম সারা জীবন তপস্যায়
আগুন নিভলে কুণ্ডে যজ্ঞবিষ
অন্ধকারের সমুদ্র হলে পার
জ্যোৎস্নায় জ্বলে দুখানি চোখ কপিশ
জীবন ফুরোয়, ফুরোয় না তবু আশা
ধ্বসে পড়ে নি তো সব প্রীতি মঞ্জিল
সকলের চোখ এখনও কপিশ নয়
কিছু কিছু চোখ আকাশের মতো নীল।