
কাঞ্চনজঙ্ঘা ও তার স্রষ্টার সাথে কিছু কথা
উম্মে রোমান
পত্রিকার পাতা হতে শুরু করে অনলাইন পোর্টাল সব জায়গা ছেয়ে গেছে পঞ্চগড়ের আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার আবির্ভাব নিয়ে….
স্বপ্নালু চোখে তাকিয়ে থাকি — বাহ! কি অপার্থিব সৌন্দর্য! বিস্ময়ে মুগ্ধতায় অভিভূত হয়ে রই।
দিব্যচক্ষু লাভ করে নিজেকে দেখতে পেলাম হিমালয়ের পাদদেশে ট্রেকিংয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি, সামনে সকালের রোদে সোনারঙ ধারণ করা কাঞ্চনজঙ্ঘার হাতছানি….. কল্পনা বেশিদূর স্থায়ী হয়না। রূঢ় বাস্তবতায় ফিরে আসতে হয়।
ডায়রি খুলে ব্যথাতুর হৃদয়ে তাই লিখে ফেললাম:
এ জীবদ্দশায় একবার হলেও যেন হিমালয় ঘুরে আসতে পারি, হে পরওয়ারদিগার। প্রকৃতির বিশালতা যেনো মহাজগৎ জুড়ে তোমারই ব্যপ্তি জানান দেয়। পর্বতমালার সামনে দাঁড়ালে নিজেকে অতি তুচ্ছ ক্ষুদ্র এক প্রাণ বলে মনে হয়। দৃষ্টিসীমার পরিধিজুড়ে কেবলই হিমাদ্রি আর সুউচ্চ আকাশ, বোধকরি ঠিক তেমনি করেই এ সমগ্র বিশ্বসংসারও তোমার নজরের আওতাধীন। একদিন হিমালয়ের কোন এক নীরব উপত্যকায় সম্পূর্ণ একা হয়ে বসতে চাই। তখন আমি আমার সৃষ্টিকর্তার সাথে একান্তে কিছু মুহূর্ত কথা বলবো। কি বলবো তা এই ক্ষুদ্র গৃহকোণে বসে ধারণা করা আমার সংকীর্ণ হয়ে আসা হৃদয়ের পক্ষে দুঃসাধ্যই বটে। হয়তো কোন একদিন এ অপার্থিব সৌন্দর্যের নিদর্শন হিমালয়ে গিয়েই আমার হৃদয় তার বিশালতা খুঁজে পাবে।
কনকনে ঠাণ্ডায় হিমালয়ে বসে প্রভুর সাথে কথপোকথন করবো, হয়তো একদিন ঘোরলাগা চোখে নায়াগ্রা জলপ্রপাত অবলোকন করে বিস্ময়ে অভিভূত হবো….কিংবা ওই স্মৃতিটা – এক ভোরে চিটাগংয়ের রোডে বাসের সিটে হুমড়ি খেয়ে তন্দ্রা ভাঙতেই জানালা দিয়ে প্রথমবার পাহাড় দেখা অথবা সাজেক ভ্যালির দুর্গম এলাকায় চা বিক্রেতা লুসাই কিশোরীটির সাথে আরও একবার দেখা হওয়া – এই মুহূর্তগুলো যেনো জীবনে বারবার ফিরে আসে।
“মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে
মানবের মাঝে আমি বাচিঁবার চাই।
এই সূর্যকরে, এই পুষ্পিত কাননে
জীবন্ত হৃদয়মাঝে যদি স্থান পাই।”